রূপম ইসলাম। ছবি: প্রশান্ত কুমার শূর
শেষ আপডেট: 25th January 2025 20:21
যে কোনও মত প্রকাশের পর মানুষের কাছে দুটোই রাস্তা থাকে। কেউ বিপরীত মত প্রকাশ করলে তর্ক চালিয়ে যাওয়া। কিংবা কেউ অহেতুক তর্ক করলে তা উপেক্ষা করা। রূপম ইসলামের ভক্তরা ঠিক এভাবেই তাঁদের 'গুরুকে' দেখেন, শেখেন, অভ্যস্ত হন।
গল্প হলেও সত্যিতে একটি চরিত্র আছে যেখানে অভিনয় করেছিলেন যোগেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। যাঁর মুখে বিখ্যাত সংলাপ ছিল, 'যা করেছি বেশ করেছি, না পোষায় চলে যা।' বাংলার রকারও খানিকটা এমনই। কখনও অনুষ্ঠান চলাকালীন জায়ান্ট স্ক্রিনে উমর খালিদের বিনাবিচারে কারাবাস নিয়ে প্রতিবাদ করছেন, কখনও রাজ্যের নারী নির্যাতনের ঘটনায় রাস্তায় নামছেন। জিজ্ঞেস করা হলেই বলেন, এমনটাই তো স্বাভাবিক। মানুষ বলার ভাষা হারাচ্ছে বলেই নাকি তাঁকে ব্যতিক্রম মনে হয়।
রূপম ঘনিষ্ঠদের অনেকেরই অবশ্য মত, 'তিনি সৃষ্টি, তিনি ধ্বংস'। সাহিত্যিক জয় গোস্বামীর কথায় রূপম 'কথক ঠাকুর'। গায়ক-সুরকার-লেখক নিজে অবশ্য মনে করেন তিনি আসলে 'পাগল'। আর এই পাগলামি না থাকলে বাংলায় 'রক' হত না। এর নেপথ্যে শুধু তর্জন-গর্জন থাকলেই তো হয় না, রূপম প্রমাণ করেছেন অধ্যাবসয় কাকে বলে।
কবি জসিমুদ্দিন কৈশোরে যখন নকশীকাঁথার মাঠ লিখে ফেলেছেন, পরবর্তীকালে তাঁকেই সেই নকশীকাঁথার মাঠ নিয়ে স্নাতক স্তরে পরীক্ষা দিতে হয়। একই ঘটনা কোথাও রূপমের সঙ্গেও মিলে যায়। মিলে যায় এই কারণে যখন তিনি ক্লাসিক্যাল গান শিখছেন, তখন শুভাশিস নাথের কাছে সেই গানও শিখছেন যে গান তাঁর আগেই বানিয়ে ফেলা।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ছেলেবেলার প্রতিভার ঝিল্লি পরবর্তীকালে বাজ হয়ে আছড়ে পড়ে না। রূপম ব্যাতিক্রম। তিনি নস্যাৎ করেছেন সেই দাবিকে যেখানে বলা হয়েছিল তাঁর 'ফসিলস' দুটো অ্যালবামের ব্যান্ড। জানুয়ারিতে সেই 'ফসিলস'ও ২৭-এ পা দিয়েছে আর আজ রকস্টার থুড়ি 'রকার' রূপমের ৫১। তাঁরই দেখানো পথে আজ বাংলা রক জনতা 'একান্নবর্তী'।
প্রতিবেদনের ভিতরের সব ছবি: সৌগত সিংহ