শেষ আপডেট: 9th April 2025 13:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বলিপাড়ার সবথেকে দুই আলোচিত নারী চরিত্র জয়া বচ্চন (Jaya Bachchan) আর রেখা (Rekha)। তাঁদের সাপে-নেউলে সম্পর্ক বহুচর্চিত। বিগ বি অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে তাঁদের দু’জনের টানাটানি যেন আজও চলছে। নানা অনুষ্ঠানেই রেখাকে ইঙ্গিত করতে শোনা যায়, তাঁর ‘প্রেমিক’ অমিতাভকে (Amitabh Bachchan) নিয়ে। এমনকি তাঁর সিঁথির সিঁদুরও নাকি অমিতাভর জন্যই, বলেন অনেকে।
এদিকে জয়া আর রেখার মধ্যে যে মুখ দেখাদেখি নেই, তারও কারণ হিসেবে সরাসরি রেখাকেই ঠাওরে নেন অনেকেই। যেন সরলরেখায় ‘এক ফুল দো মালি’র গল্প তাঁদের জীবন। এখানে ফুল অমিতাভ।
কিন্তু তথ্য বলছে, এই দুই নায়িকার জীবনে অমিতাভ বচ্চন আসার আগে জয়া আর রেখা ছিলেন একই অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা। পরস্পরের প্রতিবেশী ছিলেন তাঁরা। এমনকি জয়ার ফ্ল্যাটেও বেড়াতে আসতেন রেখা। গল্প করতেন, চা খেতেন। হাতে করে নিয়ে আসতেন উপহারও। তবে এসবই ঢাকা পড়ে গেছে দুই নায়িকার তিক্ত সম্পর্কের আড়ালে।
সাতের দশকের শুরুতে জয়া আর রেখা প্রাণের বান্ধবী ছিলেন। জানা যায়, দু’জনের রোজকার জীবনে কী কী ঘটছে, তা নিয়েও আলোচনা করতেন দুই অভিনেত্রী। পরস্পর পরস্পরের মতামতকে সম্মানও জানাতেন।
তবে সে সময় জয়ার স্টেটাস, খ্যাতি বেশি ছিল রেখার থেকে। কারণ সত্যজিৎ রায়ের আবিষ্কার ছিলেন জয়া। তাঁর 'মহানগর' ছবি দিয়ে বাংলা ছবিতে ডেবিউ করেন জয়া। জয়ার বাবা ছিলেন বাংলার বিখ্যাত কবি কাহিনিকার তরুণ কুমার ভাদুড়ি। শিক্ষিত বাঙালি পরিবারের মেয়ে ছিলেন জয়া। উত্তমকুমারের সঙ্গে 'ধন্যি মেয়ে' ছবিতেও তখন কাজ করে ফেলেছেন জয়া। বম্বেতে হৃষিকেশ মুখার্জী, সুধেন্দু রায়, গুলজার—সবার প্রথম পছন্দ ছিলেন জয়া।
অন্যদিকে রেখা তখন একজন নিউকামার। গায়ের কালো রঙের জন্যও খারাপ কথা শুনতে হত রেখাকে। তবে কিছু ফিল্মে সাফল্য পেয়ে ১৯৭২ সালে অজন্তা হোটেল ছেড়ে জুহু বিচের ধারে ফ্ল্যাট কেনেন রেখা। সেই বাড়িতেই অন্য ফ্ল্যাটে থাকতেন জয়া ভাদুড়ি। জয়া বাঙালি বলে জয়াকে দিদিভাই বলে ডাকতেন দক্ষিণী অভিনেত্রী রেখা। দু’জনের মধ্যে তিক্ততা দূরের কথা, ছিল রীতিমতো সদ্ভাব। একে অপরকে শাড়িও উপহার দিতেন। জয়া কলকাতা থেকে শাড়ি কিনে নিয়ে গিয়ে দিতেন রেখাকে।
ভাগ্যের কী অমোঘ পরিহাস, জয়ার ফ্ল্যাটেই অমিতাভকে প্রথম দেখেছিলেন রেখা। তখন রেখা এখনকার মতো এমন আগুজ্বলা সুন্দরী ছিলেন না। অন্যদিকে জয়ার তখন তারুণ্যের চটক। তাই অমিতাভের মন জুড়ে তখন শুধুই বাঙালি কন্যে জয়া। রেখাও জানতেন, অমিতাভ জয়ার বয়ফ্রেন্ড।
একসময় জয়া রেখাকে কেরিয়ার নিয়েও নানা পরামর্শও দিতেন। রেখা শুনতেনও। এরপরেই কালের নিয়ম মেনে, জয়া ভাদুড়ি থেকে জয়া বচ্চন হয়ে গেলেন রেখার বান্ধবী। আবার জয়া-অমিতাভের বিয়ে হওয়ার পরে রেখার সঙ্গেও ছবি করেন অমিতাভ। আর সেখানেই নাকি মন বিনিময় হয় দু’জনের।
ততদিনে রেখা নিজেকে ঘষেমেজে ঝকঝকে সুন্দরী করে তুলেছেন। তাই যৌবনের নিয়ম মেনেই অমিতাভ ভাগ হয়ে যেতে লাগলেন জয়া ও রেখার মধ্যে। জয়ার সবথেকে অপছন্দের মানুষ হয়ে উঠলেন রেখা। আর জয়া দিদিভাইও মুখ দেখা ছেড়ে দিলেন রেখার। বহু বছর কেটে গেলেও দুই নায়িকার সম্পর্কের শীতলতা আজও এতটুকু কমেনি।