শেষ আপডেট: 30th August 2023 08:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা অতিমারির পর থেকেই ক্রমশ বাংলা ছবিতে (Tollywood) বিনিয়োগ কমছে। ১ কোটি, ২ কোটি বাজেটের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাচ্ছে এক একটি সিনেমা। প্রশ্ন উঠলেই নির্মাতারা বলছেন, বাংলায় ছবির বাজার নেই। এখানে দর্শকরা সিনেমা দেখতে যায় না। তাই স্বল্প বাজেটেই সিনেমা বানানো হচ্ছে, যাতে সহজেই টাকাটা উঠে আসে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? বাংলায় কি সত্যিই সিনেমার বাজার খারাপ (backwardness)? দেখা যাচ্ছে, এই রাজ্যেই ‘পাঠান’-এর আয় ২৮ কোটির কাছাকাছি। একটা বাংলা ছবির পক্ষে ২৮ কোটি আয় করা দুষ্কর যদি ধরেও নেওয়া যায়, কিন্তু ৯-১০ কোটি টাকার ব্যবসাও কি আজকাল কোনও বাংলা ছবি করতে পারে? উত্তর, না।
এই রাজ্যে সিনেমার ব্যবসার দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে, ‘গদর ২’ ১৫ কোটি, ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কড়’ ৪.৮ কোটি টাকা ব্যবসা করেছে। এমনকী একাধিক বিতর্কে জর্জরিত ‘আদিপুরুষ’ও সাড়ে ৬ কোটি টাকা আয় করেছে শুধুমাত্র বাংলা থেকেই। বাংলার বাজার যে মোটেই ছোট না, তা এই হিন্দি কিংবা দক্ষিণী ভাষার বেশ কিছু ছবি যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। এই রাজ্যে ‘পাঠান’-এর আয় অনেক দূরের গ্রহ, কিন্তু ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ কিংবা ‘পুষ্পা’র মতো ছবিগুলিও এখানে ব্যবসাসফল। আবার ‘পাঠান’-এর থেকেও এখানে বেশি ব্যবসা করেছে ‘বাহুবলি ২’।
রণবীর-আলিয়া জুটির ছবি ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ এই রাজ্যে ৯ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা করেছে। আবার আল্লু অর্জুনের সিনেমা ‘পুষ্পা’ ৫-৬ কোটি টাকা শুধু বাংলা থেকেই আয় করেছে। যা আজকালকার বাংলা ছবিগুলির কাছে স্বপ্নের মতো। একটা সময় এখানেই জিৎ কিংবা দেবের সিনেমা তৈরি হত ৫-৬ কোটি টাকায়। তা মেরেকেটে ৮-৯ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলত। কিন্তু এবছরে আটমাস কেটে গেলেও এখনও কোনও বাংলা ছবি ৫ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারেনি।
এখানে কমার্শিয়াল ছবির বাজার ছোট হতে হতে বর্তমানে প্রায় নেই বললেই চলে। জিৎ চেষ্টা করছেন বটে, কিন্তু সেগুলো যে আগের মতো সাফল্য পাচ্ছে, তা একেবারেই নয়। বরং ছবিগুলো কোনওরকমে বাজেটের টাকা ঘরে তুলতে পারছে। দেবও অল্প বাজেটের মধ্যেই সিনেমা করছেন (যদিও এবছর পুজোতেই তাঁর বড় বাজেটের ছবি ‘বাঘাযতীন’ আসছে)। তাই ছবিগুলি সহজেই লাভজনক ব্যবসা তুলে ফেললেও আগের জায়গা কিছুতেই ফিরে পাচ্ছে না। কিন্তু কেন এরকম হাল বাংলা ছবির? প্রযোজকরা কি তাহলে ঝুঁকি নিতে ভয় পাচ্ছেন নাকি সামগ্রিকভাবে বাংলা ছবির মানই নিম্নমুখী? আর সেই কারণেই বাংলা ছবির বাজারকে দায়ী করে নিজেদের ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন তাঁরা।