শেষ আপডেট: 18th August 2023 10:28
প্রেমের কবি আর বলিউড বিজয়িনী বঙ্গতনয়ার প্রেমকথা (Rakhee and Gulzar) আজও আইকনিক হয়ে আছে ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসে। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবির লেখা রোম্যান্টিক কবিতার প্রেমে পড়েছিলেন বাঙালি নায়িকা আর নায়িকার বাঙালিয়ানা ও সুন্দর রূপ কবির হৃদয়ে ঝড় তুলেছিল। সত্তর দশকে রুপোলি পর্দা থেকে ফিল্মি পত্রিকায় গুলজার (Gulzar) আর রাখীর প্রেমকাহিনি তো কারও অজানা নয়। কিন্তু কী ঘটেছিল ওঁদের মধ্যে, যে জন্য দু'জনের একসঙ্গে থাকা সম্ভব হল না? ভেঙে গেল গুলজার-রাখীর সুখের সংসার?
শুরু করতে হয় দুজনের শুরুর গল্প থেকে। সম্পূরণ সিং কালরা হল গুলজারের আসল নাম। খুব কম লোক এই নামে চেনেন তাঁকে। বেশিরভাগই বলবেন, চিনি না!
১৮ অগস্ট, ১৯৩৬। এই তারিখেই দিনা, ঝিলম জেলা, পাঞ্জাবে জন্ম তাঁর। যেটি এখন বর্তমানে পাকিস্তানের অন্তর্গত। পাঞ্জাবের অমৃতসরে পড়াশুনো শেষ করে অভাবী সংসারের ছেলে বম্বে শহরে চলে আসেন কাজের খোঁজে। একটি গ্যারেজে শুরু করেন মোটর মেকানিকের কাজ। কিন্তু ছোট থেকেই কবিতা লেখার প্রচণ্ড শখ ছিল তাঁর। সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরেও রাত জেগে কবিতা লিখতেন তিনি। উর্দু কবিতা লিখলেও গুলজারের প্রথম প্রেম ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ পড়েই একার চেষ্টায় বাংলা শিখেছিলেন গুলজার। তাই বাঙালিদের প্রতি তাঁর মনে একটা আলাদা ভাললাগার জায়গা ছিল।
শেষে একসময় দেখলেন, মেকানিকের কাজ করতে গিয়ে মরে যাচ্ছে তাঁর কবিমন। রোজগারের চিন্তা ভুলে সম্পূর্ণ ছেড়ে দিলেন সেই কাজ কারণ দুচোখে ছিল স্বপ্ন। যোগ দিলেন সেই সময়ে মুম্বইয়ের জনপ্রিয় পরিচালক হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পা রাখলেন রুপোলি দুনিয়ায়। সহকারী হিসেবে কাজ করতে থাকেন পরিচালক বিমল রায়, সুরকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এর পরেই তিনি রূপান্তরিত হলেন 'গুলজার'-এ। তাঁর প্রথম কাজ 'বন্দিনী' ছবিতে শচীন দেব বর্মনের সুরে লেখা গান। প্রথম পরিচালিত ছবি তপন সিংহের বাংলা ছবি 'আপন জন'-এর হিন্দি রিমেক 'মেরে আপনে'। এরপর তো আর গুলজারকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
অন্যদিকে রাখী ছিলেন গরিব, উদ্বাস্তু পরিবারের, এক জুতো ব্যবসায়ীর মেয়ে। দেশ স্বাধীন হওয়ার মাহেন্দ্রক্ষণে তাঁর জন্ম, ১৫ অগস্ট ১৯৪৭, নদিয়ার রানাঘাটে। সেদিন আবার ছিল রাখী পূর্ণিমা। তাই মেয়ের নাম রাখা হল রাখী মজুমদার।
কয়েক বছর পরে অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের 'আহ্বান' ছবির শ্যুটিং হচ্ছিল রানাঘাটে। সেখানেই সিনেমার শ্যুটিং দেখতে গিয়ে কিশোরী মেয়েটি ভাব জমিয়ে ফেলল শ্যুটিং পার্টির সঙ্গে। নায়িকা সন্ধ্যা রায়ের মনে ধরল মেয়েটিকে। রাখীর বাবার অনুমতি নিয়ে রাখীকে নিয়ে সন্ধ্যা রায় চলে এলেন কলকাতায় নিজের বাড়ি। প্রথম দিকে সন্ধ্যা রায়ের সাহায্যকারিণী হিসেবে কাজ করতেন রাখী।
সন্ধ্যাই রাখীকে পড়াশোনা শেখান, ঘষেমেজে তৈরি করেন। সন্ধ্যা রায়ের মেক আপ বক্স হাতে করে রাখী স্টুডিও পাড়াতেও যেতেন। এভাবেই একদিন চোখে পড়ে গেলেন পরিচালকদের। রাখীর প্রথম বাংলা ছবি 'বধূবরণ'। এরপর সন্ধ্যা রায় অভিনীত বিজয় বসুর ছবি 'বাঘিনী'তে রাখী নাচলেন ক্যামিও নাচ। এসময় রাখী বিয়ে করলেন 'বধূবরণ'-এ তাঁর সহনায়ক ও চিত্রসাংবাদিক অজয় বিশ্বাসকে। অজয়ের হাত ধরে রাখী বিশ্বাস চলে গেলেন বম্বে। কিন্তু দু'বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভেঙে গেল অজয় রাখীর বিয়ে। অজয় পরে বিয়ে করলেন অভিনেত্রী বীণাকে। সে বিয়েও টেকেনি।
এই সময়ে রাখীর নায়িকা রূপে প্রথম বলিউডে একটি ছবি মুক্তি পায় ধর্মেন্দ্রর বিপরীতে। উত্তমকুমার সুপ্রিয়া দেবী অভিনীত বাংলা ছবির হিন্দি ভার্সন একই নামে 'জীবন মৃত্যু' রিলিজ করে। যে ছবি বিশাল সাকসেস পায় এবং রাখীর প্রথম হিন্দি ছবি তাঁকে বলিউডের প্রথমা নায়িকাদের সারিতে নিয়ে চলে আসে। ১৯৭২ সালে প্রথম দেখায় রাখীর বাঙালি রূপের প্রেমে পড়েন গুলজার।
রাখীর তরফ থেকেও ছিল গুলজারের প্রতি ভালবাসা। কারণ গুলজারের প্রেমের কবিতা রাখীর প্রিয় ছিল। তাঁদের প্রেম ও তা থেকে বিবাহ-- বেশি সময় লাগল না। ১৯৭৩ সালের ১৫ ই মে কপোত-কপোতী বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হন। রাখী-গুলজারের বিয়েতে দিলীপ কুমার থেকে রাজ কাপুর পরিবারের সবাই, ওদিকে অমিতাভ বচ্চন থেকে রাজেশ খান্না, জিতেন্দ্র সকলে উপস্থিত ছিলেন।
রাখীর তখন হাতে অজস্র ছবি নায়িকা হিসেবে। বিপরীতে শশী কাপুর, অমিতাভ বচ্চনের মতো নায়করা। কিন্তু বিয়ের এক বছর না হতেই ১৯৭৩-এর ডিসেম্বরে জন্মগ্রহন করলেন মেঘনা, গুলজার-রাখীর কন্যা। মেঘনা জন্মানোর এক বছর পরেই গুলজার-রাখীর সেপারেশান হয়ে যায়। ভেঙে যায় দু'জনের সংসার। দুজন আলাদা থাকতে শুরু করলেন।
কী এমন ঘটেছিল, যে এত ভালবাসা শেষ হয়ে গেল? সে তো একদিনের ঘটনা নয়। বিবাদের সূত্রপাত অনেক আগেই।
গুলজার প্রেমের কবি, সফল চিত্রনাট্যকার, পরিচালক এবং গীতিকার। প্রেমের গানে গুলজারের লিরিক্স আজও আমাদের ভালবাসাকে আশ্রয় দেয়। অথচ সেই গুলজারই পুরুষতন্ত্রের বেড়াজাল থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেননি। প্রেমিক কবিও নানা পুরনোপন্থী সংস্কারে বন্দি ছিলেন। তাই গুলজার বিয়ের সময়েই রাখীকে শর্ত দেন, বিয়ের পরে রাখী আর ছবিতে অভিনয় করতে পারবেন না।
তখন রাখী বলিউডে প্রথমা নায়িকা। মাধুরী দীক্ষিত এবং রানি মুখার্জী আসার আগে, সবথেকে বেশী ফিল্মফেয়ার নমিনেশন পান রাখী। মোট তেরো বার। সেরা নায়িকা জিতেছেন তিন বার। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু রাখীর এত দূর পথ চলা কোনও ভাবেই সমর্থন করেননি তাঁর ভালবাসার মানুষটি। স্ত্রী মানে সে সংসার, সন্তান সামলাবে কেবল-- এই বোধেই গুলজার চালিত হয়েছিলেন।
গুলজারের প্রতি ভালবাসায় রাখী সে শর্ত মেনেও নেন। কিন্তু আশাবাদী রাখী এটা ভেবেই রাজি হয়েছিলেন যে গুলজারের নিজের ছবিতে রাখী নিশ্চয়ই নায়িকা হতে পারবেন। যেটা ছিল রাখীর স্বপ্ন। তাই বাকিদের ছবির কাজ, অফার জলাঞ্জলি দিয়েই রাখী রাজী হন গুলজারের শর্তে।
কিন্তু ক্রমে রাখীর এই আশার আলোও অন্ধকারে পর্যবসিত হল। গুলজার তাঁর ছবিতে রাখীর জায়গায় নিলেন শর্মিলাকে। 'মৌসম' ছবিতে নায়িকা হলেন শর্মিলা, জায়গা হলনা রাখীর। আহত-অভিমানী রাখীর মন থেকে গুলজারের প্রতি ভালবাসা আস্তে আস্তে মুছতে মুছতে শুরু করেছে। 'দাগ' ছবিতে রাখী ছিলেন আবার শর্মিলার সহনায়িকার রোলে। অন্তত রাখীর তাই মনে হয়েছিল।
রাখী যত ছবির অফার পেতেন, গুলজারের কাছে যেই অনুমতি চাইতেন গুলজার নাকচ করে দিতেন। এদিকে নিজের ছবিতেও স্ত্রীকে রোল দিতে চাইতেন না। অথচ যুগে যুগে তপন সিনহা থেকে রাজ চক্রবর্তী-- সকলে নিজেদের ছবিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্ত্রীকেই কাস্ট করেছেন নায়িকার রোলে। কিন্তু গুলজার সুখী পরিবার চেয়েছিলেন কেবল। সফল কেরিয়ারের স্ত্রী চাননি।
রাখী একবার স্পষ্টাস্পষ্টি সাংবাদিকদের জানালেন, "পরিষ্কার করে লিখবেন আমরা বিবাহবিচ্ছেদ করছি না। বিয়ের সময়ে আমি গুলজারের শর্ত মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু বিয়ের পরে দেখলাম সব কিছু স্বাভাবিক ভাবেই চলছে, আমি একাই ঘরে বসে আছি। গুলজার সকাল আটটায় বেরিয়ে যায় আর ফেরে রাত বারোটা। এ যে কী অসহনীয় অবস্থা আমিই জানি। আমি আবার অভিনয়ে ফিরতে চাই। কিন্তু গুলজার আমার অভিনয়ের বিরুদ্ধে।"
এই তিক্ততার ভার বহন করতে করতে গুলজার রাখীর বিবাদ বাড়তে লাগল। আর এমনই সময়ে গুলজার শুরু করলেন সুচিত্রা সেনকে নিয়ে, তাঁর 'আঁধি' ছবির শ্যুটিং।
এই শ্যুটিংয়েই একটি রাত বদলে দিল গুলজার-রাখীর সমস্ত সমীকরণ। শ্যুটিংয়ের সময়ে রাখীও কাশ্মীরে গেছিলেন গুলজারের সঙ্গে। হোটেলে আলাদা আলাদা ঘর ভাড়া করা হয় সকলের। গুলজার-রাখীর একটি ঘর, সুচিত্রা সেনের আলাদা ঘর, নায়ক সঞ্জীব কুমারের আলাদা ঘর। শ্যুটিং শেষের রাতে ছিল মস্ত পার্টি। সুচিত্রা সেন, সঞ্জীব কুমার, গুলজার-সহ আঁধির ফুল টিম সেলিব্রেট করছে।
এমন সময়ে সঞ্জীব কুমার মদ্যপান করে একেবারে টালমাটাল হয়ে গেলেন। একবার পেটে মদ পড়লে সঞ্জীব কুমারের চরিত্র বদলে যেত, তিনি হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়তেন। মদ্যপান করে সঞ্জীব কুমার নিজের বাহুলগ্না করতে চাইলেন স্বয়ং সুচিত্রা সেনকে। সঞ্জীব সুচিত্রা সেনকে (Suchitra Sen) নিজের রুমে নিয়ে যাওয়ার জন্য রীতিমতো হাত ধরে টানতে লাগলেন। সুচিত্রাও বেশ জোরে চেঁচিয়ে বাধা দিলেন।
এই সময়ে রাখী ছিলেন নিজের ঘরে, কিন্তু গুলজার পার্টিতেই ছিলেন। তাই সুচিত্রাকে সঞ্জীবের হাত থেকেও উদ্ধার করতে ছুটে গেলেন গুলজার। গুলজারের ছবির নায়িকা তো শুধু সুচিত্রা সেন নন, গুলজারের অনুরোধেই সুচিত্রা কলকাতা থেকে বম্বে এসছেন। তাই দায়িত্ব একটা ছিলই গুলজারের। সঞ্জীব কুমারের হাত থেকে ছাড়িয়ে সুচিত্রাকে নিজের ঘরে পৌঁছে দেন গুলজার। প্রসঙ্গত, এই ঘটনার আগে ও পরেও সঞ্জীব কুমার ও সুচিত্রা সেনের বন্ধুত্ব অটুট ছিল। সুচিত্রা জানতেন সঞ্জীব ছিলেন তখন নেশাগ্রস্ত।
কিন্তু গুলজার সুচিত্রাকে পৌঁছে দিয়ে সুচিত্রার ঘর থেকে বেরোতেই দরজা খুলে দেখলেন সামনে রাখী দাঁড়িয়ে ক্রুদ্ধ মূর্তিতে। রাখী সমস্ত হোটেল চিৎকার করে তুলকালাম করলেন। ঘরে গিয়ে গুলজারের বুকে ভেঙে পড়লেন কান্নায়, বললেন "সুন্দরী নায়িকা কি আমার চেয়েও তোমার কাছে বড়? কেন তাঁকে তাঁর ঘরে তোমাকেই পৌঁছে দিতে হয়? সুচিত্রা সেনের মন ভাল না হওয়া পর্যন্ত একলা ফেলে আসতে পারো না? ও তোমার কে? আমি তাহলে কী?"
এই তুমুল অশান্তির মধ্যে নাজেহাল গুলজার একটা চড় মেরে দেন রাখীকে। ব্যস রাখীর কাছে সেটা হয়ে দাঁড়ায় আরও ভয়ংকর বেদনাদায়ক।
এই সময়ে যশ চোপড়া তাঁর নতুন ছবি 'কভি কভি'তে নায়িকার রোল অফার করেছিলেন রাখীকে। রাখীকে যথারীতি তখন গুলজার না করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেইই রাতের পরেই রাখী স্বামীর সব চিহ্ন, বারণ মুছে ফেললেন। বেরিয়ে গেলেন সাতসকালেই হোটেল থেকে। ঠিক সেদিন সকালেই যশ চোপড়া কাশ্মীরে 'কভি কভি' সিনেমার শ্যুটিং স্পট দেখতে এসেছিলেন। রাখী যশজির কাছে গিয়ে নায়িকার রোল করবেন বলে কথা দিলেন। এভাবেই বিয়ের পরে আবার ফিল্মে কামব্যাক করলেন রাখী গুলজার। শর্মিলা বা সুচিত্রার চেয়ে রাখীও কিছু কম নন, এই জবাব গুলজারকে দিতেই কি রাখীর এই সিদ্ধান্ত ছিল?
বম্বেয় ফিরে রাখী আর গুলজারের সংসারে থাকতে যাননি। নিজে চিরটাকাল সেদিন থেকেই আলাদা থেকে গেলেন রাখী। গুলজারও একা। ইগোর লড়াই না সম্মানের লড়াই ওঁরাই জানেন!
রাখী নিজের জায়গায় হয়তো ঠিক। তবে সুচিত্রা সেনের প্রতি অন্যদের কারও দুর্বলতা যদি হয়েও থাকে সেখানে সুচিত্রার কোনও ভূমিকা নেই। সুচিত্রার প্রেমে বিকাশ রায় থেকে উত্তম কুমার বা রাজ কাপুর, কে না পড়েছেন। আবার গুলজারও সুচিত্রার ক্ষেত্রে হয়তো সেদিন ঠিকই করেছিলেন। কোনও নারীর পাশে বিপদে থাকা, ভরসা দেওয়া কখনওই অন্যায় নয়। অন্য পুরুষের বেলেল্লাপনা থেকে তাঁর ছবির নায়িকাকে বাঁচানোও দোষের নয়।
অথচ কি মধ্যবিত্ত মনের গঠন আমাদের! তাই খ্যাতির শিখরে উঠেও সেই জবাবদিহির ট্র্যাডিশন চলছে।
ডিভোর্সের পথ বেছে নেননি গুলজার ও রাখী। মেয়ে মেঘনাও চাননি বাবা-মার ডিভোর্স হোক। গুলজার আর রাখী দুজনেই একাই রয়ে গেলেন সারাজীবন। অন্য জীবনসঙ্গী বেছে নেননি কেউ। দুজনেই মিডিয়া এড়িয়ে চলেন, বিয়ে ভাঙার কারণও এড়িয়ে চলেন। কিন্তু আলাদা থাকলেও মন থেকে কি আলাদা হতে পেরেছেন কবি আর নায়িকা? রাখীর থেকে শোনা বাংলা গল্প নিয়েই গুলজার বানিয়েছিলেন পরে 'খুশবু' আর 'পরিচয়' ছবি। এমনকি গুলজারের অনেক ছবিতেই নায়ক নায়িকার দৃশ্যকাহিনী মিলে যায় গুলজার রাখীর দাম্পত্যদিনের নানা সুখ-দঃখের ঘটনার সাথে। তাঁদের ভালবাসা মিথ্যে হলে তো সেই রাখীকে নিয়ে গুলজারের লেখা কবিতাগুলোও তাহলে মিথ্যে হয়ে যায়!
তবু ওঁদের জুটি একসঙ্গে আর থাকেননি। গুলজার সব নায়িকাদের নতুন রূপের স্রষ্টা হলেও স্ত্রীকে নায়িকা রূপে মানতে পারেননি কোনও দিন। আর রাখীর কাছে যেন এই বিচ্ছেদ ছিল কিছুটা নতুন দিনের আলো। স্বাধীনতা দিবসের দিন যে 'পরমা'র জন্ম সে পরাধীন হয়ে কী করে থাকে!
কিন্তু আজও দুজন দুজনকে জন্মদিনে উইশ করেন। গুলজারের প্রিয় বাঙালি পদ রেঁধে পাঠান রাখী। কয়েক বছর আগেই মেঘনার ছেলে অর্থাৎ নাতির মুখ চেয়ে গুলজার রাখী একসঙ্গে হোলি খেলেছিলেন দীর্ঘ বিরহের পর। এগুলোতেই আজও বেঁচে আছে ওঁদের ভালবাসা।
গুলজার তাই লেখেন ,
আরও পড়ুন: উত্তম-হেমা জুটি নিয়ে ছবি ভেবেছিলেন গুলজার, ভেস্তে যায় বারবার