শেষ আপডেট: 22nd March 2025 19:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত ২০ শে মার্চ সকালে ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার (DAEI) সদস্য পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্য হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। ইনডিপেনডেন্ট পরিচালক বিদুলা ‘দ্য ওয়াল’কে বলেন, ‘আমি ফেডারেশনের বেশ কিছু নিয়মের বিরুদ্ধে। পরিবর্তন আনতে বহুবার কমিটি গঠনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেটাও হয়নি। আমি একজন ইনডিপেনডেন্ট ফিল্মমেকার। আমার পিছনে বড় প্রযোজক থাকে না। তা বলে, ছোট ক্রু, পছন্দসই কলাকুশলীদের নিয়ে কাজ করতে পারব না? আমার মতো পরিচালকদের উপর বলপূর্বক লোকজন চাপানো হতে পারে না। এ সবের বিরুদ্ধেই আমি হাইকোর্টে পিটিশন ফাইল করি।
এরপরই শুটিং সংক্রান্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করে WPA নং ৩০৮৯-এর রিট পিটিশনের দাখিল করেন বিদুলা ভট্টাচার্য (Bidula bhattacharjee)। মাননীয় বিচারপতি অমৃতা সিনহা শুনানিও করেন। বৃহস্পতিবার মাননীয় বিচারপতি, ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের উদ্দেশে নির্দেশ দিয়েছেন,পরিচালক বিদুলাকে যেন কোনও ভাবে তাঁর কাজে বাধা দেওয়া না হয়। এছাড়াও শুনানি চলাকালীন, রাজ্য স্বীকার করে যে কোনও কমিটি গঠন করা হয়নি, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রাজ্য কর্তৃপক্ষকে FCTWEI-এর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা কোর্টের সামনে উপস্থাপন করতেও নির্দেশ দিয়েছে। এই রায় কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার (DAEI) বাকি সদস্যদেরও। কোথাও গিয়ে মনোবল বেড়েছে কিছু পরিচালকের। আর বিদুলার এই সাহসী পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে এবার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবং পরিচালক ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরিও ওই একই আইনি পথে হাঁটতে চলেছেন। DAEI এর বাকি সদস্যদের উদ্দেশ্যে তাঁদের লিখিত বক্তব্য এসেছে ‘দ্য ওয়াল’-এর কাছে। তাতে যা লেখা রয়েছে, তা তুলে ধরা হল।
‘এই বক্তব্য আমাদের তিনজনের। আমরা ব্যক্তিগতভাবে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা আমাদের বাকি সদস্যদের জানানো প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে। গত বছর জুলাই মাস থেকে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনার আমরা সবাই সাক্ষী। কী হয়েছে তার বিবরণে যাচ্ছি না। আমরা প্রত্যেকেই আমাদের মতো করে তা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা তিনজনেই ব্যক্তিগতভাবে এই প্রক্রিয়ার অংশ ছিলাম। যা ঘটেছে এবং যে ভাবে ঘটেছে সব যে প্রত্যাশিত বা আকাঙ্ক্ষিত ছিল তা নয়। অনেক সময়ই নানা কারণে পিছু হঠতে হয়েছে। কখনো কৌশলগত কারণে কখনো সংগঠনের সদস্যদের দাবির কথা মাথায় রেখে। আমাদের কিছু সহযোগী সদস্যদের আচরণও হয়তো অনেককে দুঃখ দিয়ে থাকতে পারে। তার ন্যায্যতাও আমরা স্বীকার করছি। বৃহত্তর বাস্তবতার কথা মাথায় রেখে আমরা শেষ দিন অব্দি চেয়েছিলাম যাতে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসা যায়। ফেডারেশনের কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেস্পষ্ট জানানো হয়েছে যে তারা কোনো অবস্থাতেই কোনো আলোচনায় যেতে চান না। ইতিমধ্যেই একটি নতুন সংগঠনও প্রস্তুত হয়ে উঠেছে। আমাদের একাধিক সদস্য সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বা হয়তো নেওয়ার কথাও ভাবছেন। আমাদের কারো সিদ্ধান্ত নিয়েই কোন বক্তব্য নেই। কিন্তু উপস্থিত অবস্থায় আমাদের মনে হয়েছে আমাদের ব্যক্তিগতভাবে কিছু স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া আশু প্রয়োজন। আমরা মনে করি এই অবস্থায় একক ভাবে বিদুলাভট্টাচার্য যে সাহস দেখিয়েছেন, তা সাধুবাদ দেওয়ার দাবি রাখে। তিনি নিজের কাজের নিরাপত্তার কথা ভাবেননি, সংগঠনের অধিকাংশ সদস্যদের মনের আকাঙ্ক্ষা নিজের ব্যক্তিগত ঝুঁকিতে প্রকাশ করেছেন। অন্য কারো কথা বলতে পারি না। আমরা তিনজন সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই আইনি লড়াইয়ে আমরা তার পাশে সক্রিয়ভাবে থাকব। আইনের পথ ছাড়া এই মুহূর্তে এই সমস্যা মোকাবিলা করার আর কোনো সমাধান আমাদের চোখে পড়ছে না। বাকি যেটা পড়ে রয়েছে সেটা অসহায় আত্মসমর্পণ। যেটা ব্যক্তিগতভাবে আমরা কেউ করতে রাজি নই।
আমরা তিনজন ব্যক্তিগতভাবে বিদুলার মতনই আইনি সমাধানের পথেই হাঁটব। এই সিদ্ধান্তের কোনো দায়িত্ব সংগঠনের বা তার সদস্যদের নেই। অবশ্য কেউ যদি নৈতিক কারণে ব্যক্তি হিসেবে আমাদের সঙ্গে এই লড়াইয়ে যুক্ত হতে চান, আমরা সোৎসাহে তাকে অভ্যর্থনা জানাব।’