Latest News

ফিল্মে ফিরছেন ইন্দ্রাণী, কুলের আচারের মতোই টকমিষ্টি দাম্পত্য নিয়ে থাকছেন বিক্রম-মধুমিতা

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

‘মেয়ে যে তুই, লালন শুধুই-
করছি আমি রে,
পরের ঘরে যাওয়ার জন্যে, তাকি বুঝিস নে?
সময় হলেই এঘর ছেড়ে যাবি রে তুই চলে।
থাকবি না রে চিরটাকাল তোর মায়ের এই কোলে।’

চিরকাল মেয়েদের বড় হওয়ার মূলমন্ত্রই যেন পরের ঘরকে আপন করে নেওয়া। নিজের আগের পরিচয় খুইয়ে বরের পরিচয়ে পরিচয়ভুক্ত হওয়া ভোটার কার্ড থেকে আধার কার্ডে। মেয়েদের বিয়ের পরেই পদবী পরিবর্তন কতটা যুক্তিযুক্ত, এ প্রশ্ন আজকাল অনেকেই তুলছেন। তবে এখনও বিয়ের আগের পদবী ধরে রাখতে চাইলে মেয়েদের সমাজের হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। পদবী একটা মানুষের পরিচয়, অতীত, বাবা-মায়ের ঐতিহ্য, তাহলে কেন শুধু মেয়েরাই নিজেদের পদবী পাল্টাবে! ছেলেরা কেন নয়! এই সব টক-ঝাল-মিষ্টি প্রশ্ন নিয়েই বয়ামে হাজির হচ্ছে ‘কুলের আচার’।‘কুলের আচার’ আসন্ন ছবি মিঠি আর প্রীতমের প্রেমের গল্প বলবে। প্রীতমের সাথে বিয়ের পর নিজের পদবী কোনও ভাবেই পাল্টাতে চায় না মিঠি। আজ ২০২১ সালে দাঁড়িয়েও যতই মেয়েরা এগিয়ে যাক না কেন, ভারতীয় সমাজব্যবস্থায় এই ছোট্ট বিষয় নিয়ে অনেকেরই ছুঁতমার্গ রয়েছে। এই ছোট ব্যপার কতটা জটিল, তা উঠে আসবে ‘কুলের আচার’ ছবিতে।

মিসেস সেন নাকি মিসেস রায়, কোনটা মিঠির পরিচয় হবে? নাকি প্রীতম বলবে ‘নমস্কার আমি প্রীতম সেন! ওহ সরি প্রীতম রায়।’ এই খেয়েছে, কোনটা ঠিক! সমাজব্যবস্থার এই সংবেদনশীল একটা বিষয় ছবিতে উঠে এলেও সেটা থাকবে পুরোটাই কমেডির মোড়কে।কাহিনির শুরুতেই এই পদবী নিয়ে গন্ডগোলের জেরে হানিমুনে গিয়ে মুশকিলে পড়বে মিঠি আর প্রীতম, কারণ বর আর বউয়ের পদবী আলাদা কী করে হয়? হোটেলের খাতায় বর বউয়ের এক পদবীই তো কাম্য! পরিস্থিতি এতটা জটিল হবে যে হানিমুন ফেলে মাঝপথেই বাড়ি ফিরতে হবে মিঠি আর প্রীতমকে। ছবির পরতে পরতে মিঠি-প্রীতমের দাম্পত্য জীবনের মজার পাশাপাশি জটিল পথচলার কথাও উঠে আসবে।প্রীতম মুক্তমনা এবং সাপোর্টিভ হাজব্যান্ড। কিন্তু বউমার এই পদবী পরিবর্তন না করা নিয়ে সমস্যা আছে শ্বশুর-শাশুড়ির। শাশুড়ি কি মেনে নেবে বৌমার এই সাহসী পদক্ষেপ?আগামী ফেব্রুয়ারিতেই পর্দায় আসছে এসভিএফ-এর প্রযোজনায় ‘কুলের আচার’ ছবি। ছবির চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সুদীপ দাস। এসভিএফ প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে প্রথমবার কাজ করবেন সুদীপ। ‘কুলের আচার’-এর ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে থাকছেন মৈনাক ভৌমিক।এই প্রথমবার এসভিএফ সংস্থার হাত ধরে বিক্রম চট্টোপাধ্যায় ও মধুমিতা জুটি বাঁধছেন এই ছবিতে। ‘চিনি’ এবং ‘ট্যাংরা ব্লুজ’-এর সাফল্যের পর ‘কুলের আচার’-এ মিঠি হয়ে পর্দায় ফিরছেন মধুমিতা। বিক্রম নায়ক হয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন। মিঠির স্বামী প্রীতমের ভূমিকায়।অন্যদিকে বড় খবর, আইকনিক ‘শ্রীময়ী’ অধ্যায় শেষ করে ‘কুলের আচার’ ছবির মাধ্যমে আবার ফিল্মে কামব্যাক করছেন অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদার। একদিকে বিক্রম-মধুমিতার ফ্রেশ জুটি যেমন এ ছবির ইউএসপি, তেমন দীর্ঘ সময় পর ইন্দ্রাণীর বড় পর্দায় ফেরাও চমকপ্রদ খবর। ব্যক্তিত্বময়ী মায়ের রোলে ইন্দ্রাণী ‘শ্রীময়ী’ করে সবার নয়নের মণি। ‘শ্রীময়ী’ সিরিয়াল শেষ হওয়াতে দর্শকরা মিস করছিলেন ইন্দ্রাণীকে। তবে এবার আর ছোট পর্দায় নয় বড় পর্দায় ইন্দ্রাণীর দেখা মিলবে।

ছবিতে বিক্রমের বিদূষী মায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে ইন্দ্রাণী হালদারকে। মায়ের ভূমিকা ইন্দ্রাণী আগেও করেছেন বেশ কিছু ছবিতে এবং প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। ইন্দ্রাণীর স্বামী অর্থাৎ বিক্রমের বাবার ভূমিকায় থাকছেন সুজন মুখোপাধ্যায় অর্থাৎ নীল। আধুনিকতার মোড়কেই হবে এই ছবি তাই বাবা-মা হিসেবেও তাঁরা এ যুগের মতোই হবেন।ছবিতে সুরারোপ করেছেন ‘প্রসেনের দলবল’। গান কারা কারা গাইলেন তা ক্রমশ প্রকাশ্য। ছবির প্রথম পোস্টারও প্রকাশ্যে এসেছে। ফার্স্ট লুক পোস্টারে দেখা মিলল একটি কুলের আচারের জারের। কিন্তু মুখবন্ধ সেই কাঁচের জারের ভিতর কুলের আচার নয়, বড় বড় হরফে লেখা রয়েছে সেন আর রায়। ছবিতে এটাই বিক্রম ও মধুমিতার পদবী।

‘কুলের আচার’ চেখে দেখে দর্শকদের কেমন লাগে সেটাই এখন জানার অপেক্ষা।

You might also like