Advertisement
রঞ্জিত মল্লিক - মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়
Advertisement
শেষ আপডেট: 21 April 2025 13:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: উত্তমকুমারের শেষ ছবি 'ওগো বধূ সুন্দরী' দিয়ে বাংলা ছবিতে উঠে এসেছিল এক নতুন প্রজন্মের জুটি। রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick) আর মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় (Mousumi Chatterjee)। তাঁরা তখন ইন্ডাস্ট্রির নতুন মুখ নন। কিন্তু এই জুটি ছিল নতুন। ছবিতে উত্তমকুমারের সহ-অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক। উত্তমকুমারের পাশে বেশ ম্লান তিনি। কিন্তু তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হল রঞ্জিত-মৌসুমীর 'মালবিকা অনামিকা' গান। রঞ্জিত মৌসুমীর রসায়ন পর্দায় যত হিট করে, ততই তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কও চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।
'ওগো বধূ সুন্দরী' ছবি করতে করতেই প্রয়াত হন মহানায়ক। তাঁর শূন্যস্থানে বেশিরভাগ বাংলা ছবিতেই রোম্যান্টিক নায়ক হয়ে যান রঞ্জিত মল্লিক। তাঁর সমসাময়িক দীপঙ্কর দে, সন্তু মুখোপাধ্যায়রা অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন রঞ্জিত মল্লিকের জনপ্রিয়তার তুলনায়।
সাতের দশক থেকেই রঞ্জিত মল্লিক একাধিক নায়িকার নায়ক হয়ে ছবি করে গেছেন। সুচিত্রা সেন, মালা সিনহা, তনুজা থেকে মিঠু মুখার্জী, মহুয়া রায়চৌধুরী, সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন রঞ্জিত মল্লিক। বম্বে থেকে নায়িকারা বাংলা ছবি করতে এলে নায়ক রূপে তাঁদের প্রথম পছন্দ ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক।
বম্বে থেকে মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় এলে তাঁর বেশিরভাগ ছবির নায়ক হতেন রঞ্জিত। বিশেষত আটের দশক জুড়ে রঞ্জিত-মৌসুমী জুটির চাহিদা সর্বাধিক ছিল। 'শতরূপা', 'বিধিলিপি', 'বন্দিনী' র মতো একাধিক হিট ছবি করেছিল এই জুটি। এই ছবির গান সেসময় লোকের মুখে মুখে ফিরত।
তবে শুধু কাজের জগত নয়, ব্যক্তিগত সখ্যও গড়ে উঠেছিল রঞ্জিত-মৌসুমীর। আর সেই অন্তরঙ্গতা কতদূর, সেটা নিয়েই উঠেছিল প্রশ্ন। সত্যিই কি প্রেম ছিল রঞ্জিত মল্লিক-মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের? অথচ রঞ্জিত-মৌসুমী দু’জনেই তখন বহুদিন বিবাহিত, রয়েছে তাঁদের সন্তান।
তবু গুঞ্জন উঠল, মৌসুমী নাকি বম্বে থেকে কলকাতা আসেন রঞ্জিত মল্লিকের সঙ্গে প্রেম করতে। তাই নাকি ভবানীপুরের মল্লিক বাড়ি ছাড়ছেন রঞ্জিত-ঘরণী দীপা মল্লিক। পত্রপত্রিকায় রীতিমত লেখালেখিও হতে থাকে, রঞ্জিতের আলিঙ্গনে মৌসুমীকে নিয়ে। রঞ্জিত মল্লিকের ভবানীপুরের পৈতৃক বাড়ির পুজোতে বেশ কয়েকবার এসেওছিলেন মৌসুমী। তখন তো এত মিডিয়ার রমরমা ছিল না, তাই হয়তো মল্লিকবাড়ির অন্দরমহলের কাহিনি সামনে আসেনি।
মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় কী বলছেন তাঁর সঙ্গে রঞ্জিত মল্লিকের সম্পর্ক নিয়ে?
মৌসুমী বলছেন ' বম্বেতে আমার সঙ্গে বিনোদ মেহরার সম্পর্ক নিয়ে ভীষণ চর্চা হত। আমাকে রীতিমত ট্রোল করা হত। অথচ আমার বরের বন্ধু ছিল বিনোদ। এদিকে কলকাতার লোকও বলত, আমার আর রঞ্জিত মল্লিকের প্রেম চলছে। কী অদ্ভুত কথা! রঞ্জিত মল্লিকের মা, দিদি আর বউ দীপার সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। তাহলে দীপা ঘর ছাড়বেন কেন?'
তবে মৌসুমী আজ যাই বলুন, সেই সময়ে বারবারই কানাঘুষো শোনা যেত, 'বালিকা বধূ' মৌসুমীর সংসার নাকি ভাঙতে বসেছে।
তবে এই প্রান্ত বয়সে এসে মৌসুমী বলছেন, ‘স্বামী জয়ন্তর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল। আমাদের বিবাহিত জীবনে কোনও ঘাটতি ছিল না। তাহলে আমাকে অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে হবে কেন? আমিও কি ভুল করিনি! ভুল পথ মনে হলেই আমি অনেক আগে সেখান থেকে সরে এসছি। আমি আমার স্বামী আর দুই মেয়েকে নিয়ে সুখী ছিলাম। আমাদের বাড়িতে আমার শ্বশুর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে রঞ্জিত মল্লিক অনেক বার এসেছেন। তাই যারা সেই বন্ধুত্বের মধ্যে কাদা ছুড়ত, সেটা তাদের রুচির অভাব। বম্বে থেকে আমার কলকাতা আসা চিরকাল কলকাতার টানেই, আমার বাপের বাড়ি, শ্বশুরবাড়ির টানে।’
Advertisement
Advertisement