শেষ আপডেট: 6th November 2024 16:34
টলিউডে টাকা লোপাটের খবর নতুন নয়। পরিচালক প্রাপ্য টাকা নিয়ে বেপাত্তা হওয়ার ঘটনা আকছার ঘটেছে। আবার এও হয়েছে সিনেমা শেষ হওয়ার পর প্রযোজক ধা! পারিশ্রমিক পাননি কলাকুশলী। তা-ই এই খবরও নতুন নয়।
যা নতুন তা হল মুম্বইবাসী অভিনেতার ৮৫ লক্ষ টাকা মার! তা-ও আবার এই টাকা নেওয়া হয়েছে ধাপে-ধাপে।
ঠিক কীভাবে ফাঁদে পড়েছেন মুম্বইবাসী অভিনেতা অনিরুদ্ধ রায়। দ্য ওয়ালের প্রতিনিধি তাঁকে ফোনে ধরলে তিনি যা জানালেন তা হল, ছবিতে অভিনয়ের সুযোগের মিলবে, এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় নামক এক মহিলা তাঁকে ফোন করেন। তিনি বলেন, তাঁর বস, অনিরুদ্ধর প্রোফাইল দেখে পছন্দ হয়েছে। তাঁরা অনিরুদ্ধকে কাস্ট করতে চাইছেন এক ওটিটি প্ল্যাটফর্মের এক শো-য়ে। তাঁরা চান তিনি কলকাতায় এসে যেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। সেই মতো মুম্বই থেকে অনিরুদ্ধ আসেন কলকাতায়। তাঁদের অফিসে পৌঁছে আলাপ হয় সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বস’ নেহার সঙ্গে। নেহা দাবি করেন যে, তিনি কলকাতায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত। এবং বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী যেমন দেব, চন্দ্রিমা, রণজয় বিষ্ণু, এনা সাহাকেও বিভিন্ন শো-তে কাস্টও করেছেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এই সকল অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তাঁদের কেরিয়ারে ‘নেহা’র অবদান স্বীকারও করেছেন, এবং সেই ভিডিয়ো অনিরুদ্ধকে দেখিয়েছেন নেহা।
এসব দেখেই মাথা ঘুরে যায় অনিরুদ্ধর। বিশ্বাস করতে শুরু করেন নেহাকে। মনে করেন তাঁর দৌলতে সৌভাগ্যের শিঁকে ছিঁড়তে পারে অনিরুদ্ধর।
‘‘আমি বিশ্বাস করেছিলাম একে, কখনও বলেছে সহ-প্রযোজক হতে নতুন শো-তে, আমি রাজি হয়ে ওকে টাকা দিয়েছি, কখনও কাস্ট করবে বলে টাকা নিয়েছে, বারবার কলকাতায় এসে লুক টেস্ট দিয়েছি আর সেই সঙ্গে ধাপে-ধাপে টাকা দিয়ে গিয়েছি...’’
ঠিক তার পরেই প্রশ্ন ছিল, কত টাকা?
‘’৮৫ লক্ষ!’’
টাকার অঙ্ক শুনলে চোখ কপালে উঠে যাওয়ারই মতো! এত টাকা? আপনি দিলেন কেন?
‘‘আমি শুনেছি, কলকাতায় টাকা দিলে ভাল রোল পাওয়া যায়, বড়-বড় আর্টিস্টরা তা-ই করে, তা-ই বিশ্বাস করেছিলাম’’ বললেন অনিরুদ্ধ।
অনিরুদ্ধ মুম্বইয়ের শিল্পী। কাজ করেছেন বলিউডের নামজাদা অভিনেতাদের সঙ্গে, কিন্তু এমন ভুল করলেন কীভাবে, তার উত্তর দিতে পারেননি অনিরুদ্ধ।
দিনের পর দিন অপেক্ষা করে অবশেষে অনিরুদ্ধ নেহার সঙ্গে যোগাযোগ করে, টাকা ফেরতের দাবি রাখে, কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। অভিযোগ, নেহা টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রাখেননি।
‘‘আমায় ও বলেছিল, টাকা প্রযোজনা সংস্থায় জমা পড়েছে, এখন কীভাবে আপনাকে টাকা ফেরত দেব?’’
বিপদ বুঝতে পেরে অনিরুদ্ধ নেহার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে যোগাোযোগ করে জানতে পারে, নেহা একজন প্রতারক। নেহার তিনটি নাম। নেহা আনসারি, নেহা খাতুন, নেহা সিদ্দিকি। অনিরুদ্ধর দাবি এই তিন নামেই দিনের পর দিন টাকা লুট করে চলেছেন নেহা। অনিরুদ্ধ একলা নন, তাঁর দাবি আরও অনেকের থেকেই কাস্টিংয়ের টোপ দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন নেহা।
ইতিমধ্যে অনিরুদ্ধ নেতাজি নগর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। অনিরুদ্ধ আশাবাদী প্রতারকের শাস্তি হবে।
‘‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আমার মতো অভিনয়ের লোভে পড়ে এমন নেহাদের ফাঁদে পা দেবেন না। কারণ টলিউডে এমন অনেক নেহা ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’