প্রতীকী ছবি
শেষ আপডেট: 4 May 2025 19:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শেষের সে দিন বড়ই ভয়ঙ্কর! সেই শেষ দিনে যদি পরিবারই না পাশে থাকে! দুর্ধর্ষ ভিলেন, পর্দায় শত্রু ঘায়েল করেছেন অনায়াস দক্ষতায়। শেষ বয়সে তাঁরই কিনা হয়েছিল এ হেন করুণ পরিস্থিতি! কথা হচ্ছে অভিনেতা মহেশ আনন্দের। কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে? কীভাবে উদ্ধার হয়েছিল তাঁর মৃতদেহ?
'সনম তেরি কসম' ছবির মধ্যে দিয়ে গ্রামের ছেলে মহেশ আনন্দের ডেবিউ হয়। না, তিনি অভিনয় করেননি। ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার ছিলেন। ১৯৮৪ সালে হঠাৎই তাঁর ভাগ্য যায় খুলে। তিনি অভিনয় করেন 'করিশ্মা' ছবিতে। শুরু করেন মডেলিং। ক্যারাটেতেও ব্ল্যাক বেল্ট ছিলেন তিনি। ভালবাসতেন লম্বা চুল রাখতে। ছিল লম্বা ঘন গোঁফও। এসেছিলেন হিরো হতে, তবে তাঁকে প্রযোজকরা কাস্ট করতে শুরু করেন ভিলেনের চরিত্রে। তা নিয়ে যদিও কোনও আক্ষেপ ছিল না মহেশের।
তাঁর প্রথম দুই ছবির প্রযোজক ছিলেন বরখা রায়। তিনি ছিলেন অভিনেত্রী রীনা রায়ের বোন। বরখার সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অভিনেতা। বিয়ে করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। মহেশের প্রথম জীবনের প্রেমের আনাগোনা হয়েছে বহুবার। বরখার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি প্রেমে পড়েন এরিকা মারিয়ার। বিয়ে করেন, এক সন্তানও হয়। তবে সেই প্রেমও টেকেনি। এরপর একে একে মধু মালহোত্র, ঊষা বাচানি নামক দুই নারীকে বিয়ে করলেও সেই বিয়ে টেকেনি। পঞ্চম বার তিনি প্রেমে পড়েন এক রাশিয়ান মেয়ের, নাম লানা। তাঁরা বিয়েও করেন।
তবে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে ক্রমেই যেন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে থাকে তাঁর জীবন। বলিউড বড়ই নিষ্ঠুর। এখানে কিছুই থেমে থাকে না। আনন্দেরও কাজ কমতে থাকে। একবার শহরের এক পানশানায় অভিনেতা অক্ষয় কুমারের সঙ্গে ঝামেলাতেও জড়াতে দেখা যায় তাঁকে। শোনা যায়, একদল মহিলাকে দেখে কুমন্তব্য করেছিলেন মহেশ। তা ভাল লাগেনি অক্ষয়ের। প্রতিবাদ করতেই ঝামেলা। জায়গা ফাঁকা থাকে না। মহেশের ব্যাভিচারী জীবনের কারণে ক্রমশই লাইমলাইট থেকে দূরে সরতে শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ ১৮ বছর তাঁর কাছে কোনও কাজ ছিল না!
শোনা যায়, দু'বেলা খাবার জোটাতেই নাকি হিমসিম খেতেন তিনি। ২০১৯ সালে নিজের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বলিউডের একদা নামজাদা এই অভিনেতার দেহ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, দু'দিন আগেই মারা গিয়েছেন তিনি। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিল খাবার আর মদের বোতল। বাড়িতে সে সময় তিনি একাই ছিলেন। কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয় আজও তা রহস্য। তবে মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও কেউ তাঁর দেহ নিতে চাননি।