শেষ আপডেট: 12th April 2025 12:19
খুব বেশিদিনের ঘটনা নয়। শুরু হয় এক বেসরকারি চ্যানেলের হিন্দি ধারাবাহিকের শুটিং। ‘হরর কমেডি’ জঁরের সিরিয়াল। নাম ঠিক হয় ‘আমি ডাকিনি’। প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা এবং মহেন্দ্র সোনি।
ধুমধাম করে প্রায় দেড় মাস চলে শুটিং। বাংলার সিরিয়ালের একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রী। পরিচালনায় ছিলেন অনুপম হরি। সাহানা দত্ত ছিলেন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর।
প্রায় ৫-৬টি এপিসোডের শুটিং হয় পরপর। তা শেষ হতে এপিসোডগুলো দেখতে বসেন বেসরকারি চ্যানেলের কর্তৃপক্ষ। মুম্বইয়ের এক সূত্রের খবর, তা দেখার পরক্ষণে, বেসরকারি চ্যানেলে থেকে ফোন যায় এসভিএফ কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতার (Srikant Mohta) কাছে। সেই সূত্রেরই খবর, কর্তৃপক্ষর থেকে তাঁকে প্রশ্ন কার হয়, যে তিনি গোটা কাজটি কি দেখেছেন? শ্রীকান্ত মোহতা (Srikant Mohta) জানান, না তিনি দেখেননি’, এবং তারপর তিনি গোটা কাজটি দেখেন, এবং তা দেখে, বেশ হতাশ হন প্রযোজক। গোটা টিমের উপর বেশ ক্ষুব্ধও হন তিনি। তারপর চ্যানেলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করেই, অত্যন্ত সচেনতভাবে বলেন, সব এপিসোডগুলোই বাদ দিতে হবে, এবং এর দায়ভার এসভিএফ-এরই।
মুম্বইয়ের সেই সূত্রের খবর, এই এপিসোড শুট করতে আড়াই-তিন কোটি খরচ হয়ে গিয়েছিল, এবং গোটাটাই লোকসানের খাতায়! সূত্রের এও খবর, বলার অপেক্ষা রাখে না, কনটেন্টটি নিম্নমানের ছিল। এসভিএফ কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা একজন বিচক্ষণ এবং সচেতন মানুষ। তিনি এসভিএফ নিয়ে এতটাই ভাবেন, যে গোটা এপিসোড বাতিল করতে তিনি একটিবারের জন্য পিছপা হননি! জাতীয় পর্যায়ে, এসভিএফ প্রযোজিত হিন্দি সিরিয়ালটির গুণমান নিয়ে কথা উঠুক, তা তিনি একেবারেই চাননি, তাই এত টাকার ক্ষয়ক্ষতিও মাথা পেতে নেন।’ শোনা যাচ্ছে, আবার নতুন করে বর্ধমান রাজবাড়িতে শুটিং শুরু হয়েছে ‘আমি ডাকিনি’র।
‘দ্য ওয়াল’-এর তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয় ‘আমি ডাকিনি’র পরিচালক অনুপমের সঙ্গে, তিনি বলেন, ‘আমি ওই সিরিয়ালের সঙ্গে এখন আর যুক্ত নই। যতদূর জানি, চ্যানেল কর্তৃপক্ষর কাছে এপিসোডগুলো পাঠানোও হয়, কিন্তু তারপরে কী হল তা আমি জানি না।’
ঘটনাটির সত্যতা যাচাই এবং ঠিক কী কারণে ‘স্ক্র্যাপ’ করা হল এতগুলো এপিসোড? গোটা বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় এসভিএফ কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতার সঙ্গে, তিনি ফোন তোলেননি। পরে হয়েছিল মেসেজেও। পরবর্তীতে যদি তাঁর উত্তর মেলে এই প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হবে।
প্রশ্ন উঠছে এসভিএফ (svf, Shree Venkatesh films)এত বছরের এক প্রযোজনা সংস্থা। একটি সফল প্রযোজনা সংস্থা। বাংলা বিনোদনের ইতিহাসে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। সম্প্রতি তাঁদের সেই সাফল্যের কথা এক জনপ্রিয় ইউটিউবারের পডকাস্টেও প্রকাশ পেয়েছে।
কিন্তু কিছু বছর ধরে বারবার কথা উঠছে এসভিএফ-এর কনটেন্টের গুণগত মান নিয়ে! প্রশ্ন উঠছে এসভিএফ-এর কনটেন্টের মান কি পড়ছে ক্রমান্বয়ে? এবং সে কারণেই ধীরে পা ফেলছে এসভিএফ। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে প্রযোজনা সংস্থার মাত্র দু’টি ছবি মুক্তি পেয়েছে!
‘আমি ডাকিনি’ শুরু হওয়ার আগেই এত বড় টাকার অঙ্কের লোকসান বাংলার সবচেয়ে নামি প্রযোজনা সংস্থার! যেখানে বারবার বলা হচ্ছে বাংলাতেই বাংলা সিনেমা, কিংবা কনটেন্ট আজ ব্যাকফুটে! শুধু তাই নয় অর্থ লগ্নি কিংবা সংকটের মুখে পড়ছেন একাধিক পরিচালক। সেই বাংলাতেই এত টাকার ক্ষয়ক্ষতি! কোথাও এককালের নামি প্রযোজনা সংস্থা ‘শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস’-এর পা কি আজ টলোমলো? প্রশ্ন উঠছেই...