শেষ আপডেট: 3rd August 2023 12:28
জয়াকে সেভাবে এখন অভিনয় দেখা না গেলেও আবারও তাঁকে হিন্দি ছবিতে দেখা যাবে (Jaya seal ghosh in hindi movie)। সুব্রত দত্ত, জয়া শীল ঘোষ এবং 'মন্দার' খ্যাত অভিনেতা দেবাশীষ মণ্ডলকে নিয়ে 'ঘুণ' খ্যাত পরিচালক শুভ্র রায়ের প্রথম হিন্দি ফিচার 'ফ্লাওয়ার্স অফ দ্য মাউন্টেন' ছবির শ্যুটিং সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এখন জোর কদমে ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে।
ছবির বিষয়বস্তু নিয়ে কথা হচ্ছিল পরিচালক শুভ্র রায়ের সঙ্গে। তিনি জানালেন, 'মৃত্যু কখনও ভালবাসা এবং শিল্পকে ছুঁতে পারে না। রবার্ট আল্টম্যানের কথা অনুযায়ী আমরা যাঁরা ছবি তৈরি করি তাঁরা এক জীবনেই অনেকগুলো জীবন কাটাতে পারি। একজন পরিচালক হিসেবে আমিও এই ধারণাতে বিশ্বাস করি। ভালবাসা এবং শিল্প মানুষকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়। এই মায়ার জগতে ভালবাসা ও শিল্প দুটোই অনন্ত যার কোনও শেষ নেই। মায়ার জগত থেকে যেমন সকল মানুষ ছেড়ে চলে গেলেও আমাদের শিল্প আর ভালবাসার স্মৃতি সারা জীবন থেকে যায়, ঠিক তেমনি আমাদের আত্মার সঙ্গে ভালবাসার যে সম্পর্ক তা কোনওদিন শেষ হয় না। এই ভাবনাগুলোকেই ছবির মধ্যে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করেছি। শিল্পের বিভিন্ন আঙ্গিকের উপর ভিত্তি করে চিত্রকলা, গান, অভিনয় ও নাচ নিয়ে গল্পকে তৈরি করা হয়েছে।'
প্রথম গল্পে পারিজাত মুখোপাধ্যায় নামে একজন বিখ্যাত চিত্রকরের মধ্যে হঠাৎই আমুল পরিবর্তন ঘটে। তিনি মনে করেন ক্যানভাস প্রদর্শনী প্রতিযোগিতা এসবের মধ্যে শিল্পকে পাওয়া যায় না। প্রকৃতির কাছে নিজেকে যতক্ষণ সম্পূর্ণ সমর্পণ না করা যায় ততক্ষণ তার শিল্পীসত্তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই সে নতুন করে প্রকৃতির কোলে ভালবাসা ও শিল্পীসত্তাকে খোঁজার চেষ্টা করে।
দ্বিতীয় গল্পের মূল বিষয়বস্তু প্রকৃত ভালবাসা ও শিল্পরূপ, ধর্ম, জাত, ভাষা এসবের ঊর্ধ্বে । সত্যিকারের ভালবাসা ও শিল্পীর কখনও মৃত্যু হয় না। জয়লক্ষ্মী একজন দক্ষিণ ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সিঙ্গার। তার থেকে বয়সে ছোট এই সময়ের বিখ্যাত অভিনেতা রুদ্রর সঙ্গে তিনি লিভ ইন করেন।
শেষ ও তৃতীয় গল্প: কোনও মানুষের মধ্যে যদি কিছু করার জন্য প্রবল ইচ্ছেশক্তি থাকে তবে শারীরিক অক্ষমতাও কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। পাহাড়ি এলাকায় প্রাণোচ্ছল মিষ্টি মেয়ে নদী স্বপ্ন দেখে বড় নৃত্যশিল্পী হওয়ার। তার প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে এক ভাললাগার মানুষ সাহিল এসে তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উৎসাহিত করে। নদী ভালবাসা ও শিল্পের এক নতুন দিশা খুঁজে পায়। এই তিনটি গল্পকে একই সুতোয় গেঁথে পরিচালক অ্যান্থোলজি তৈরি করেছেন। তিনটি গল্পের মধ্যে সেভাবে কোনও যোগসূত্র না থাকলেও বিভিন্ন আর্ট ফর্মকে একটা সুতোয় গাঁথা হয়েছে।
প্রতিটি গল্পের শিরোনাম আলাদা হলেও পরিচালক এই মুহূর্তে তা বলতে নারাজ। নির্জন পাহাড়ের প্রেক্ষাপটে এই তিনটি গল্প গড়ে উঠেছে। প্রতিটি গল্পে টুইস্ট রয়েছে।
ছবিতে অভিনীত শিল্পীরা হলেন সুব্রত দত্ত (পারিজাত মুখোপাধ্যায়), জয়া শীল ঘোষ (জয়লক্ষী), দিগন্ত সাহা (রুদ্র), দেবাশীষ মণ্ডল( সাহিল), শ্রেয়সী রায় বন্দ্যোপাধ্যায় (নদী)। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কৌশিকী চক্রবর্তী, দেবার্ঘ্য মজুমদার,পায়েল মুখোপাধ্যায়, শুভায়ন রায়, তানিশা রায় প্রমুখ। কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন শুভ্র রায়, মৌপর্ণা দত্ত। হিন্দিতে অনুবাদ করেছেন রিয়া দাস। ক্যামেরার দায়িত্বে রয়েছেন স্মৃতি। সম্পাদনা করেছেন রবিরঞ্জন মৈত্র। সুরারোপ করেছেন পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। অধ্যাপক রঞ্জন দাস প্রযোজিত এই ছবিটি এখন দেশে-বিদেশে বিভিন্ন নামীদামি ফেস্টিভ্যালে যাবে।
আরও পড়ুন: বাংলার তিন নায়িকার ছবির হিন্দি রিমেকে একমাত্র মুখ মীনাকুমারী