Date : 17th Jul, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
শক্তির স্বার্থেই রাশিয়ার পাশে ভারত, ন্যাটো প্রধানের হুঁশিয়ারিকে পাত্তাই দিল না নয়াদিল্লিভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই হতে পারে সামনের সপ্তাহেই! কম দামে মিলবে হুইস্কি, ওয়াইননিকোপার্কে যুবকের মৃত্যু: পরিবারের অভিযোগ গাফিলতির, ময়নাতদন্তে হৃদরোগে মৃত্যুর ইঙ্গিতকল্যাণী স্টেডিয়ামেই হবে ডার্বি, তবে পিছল দিনমিলিয়ে মিশিয়ে হাজারের উপর নামকরণ করে ফেলেছেন মমতা, এখনও তালিকা অফুরন্ত, জানালেন নিজেইগোপালগঞ্জ: পুলিশ রিপোর্টে আ-লিগ কর্মীদের মৃত্যুর কারণ লেখা নেই, সেনাকে আড়াল করাই লক্ষ্য?আইআইটি সমাবর্তনে 'কালা চশমা' মুহূর্ত, 'কুল' ছাত্র-প্রফেসরের রসায়ন ভাইরালউত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের করিডোরে ভবঘুরের দেহ খুবলে খেল কুকুরমুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই হবে এবারের ডুরান্ডের উদ্বোধনতিন বছরের অপেক্ষার অবসান, প্রকাশ্যে ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’ সিজন ৫-এর টিজার

'সেই আনন্দ ক্রমশ মিশে যাচ্ছিল আমার রক্তে,' ৪৭ সালের ১৫ অগস্ট কলকাতা ঘুরে দেখেন কিশোর সৌমিত্র

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট দেশ স্বাধীন (Independence Day) হল। সারা দেশ জানল, ব্রিটিশদের দাসত্ব পার করে সমস্ত ভারতবাসী এখন থেকে স্বাধীন। এই সুসংবাদের উদযাপন কীভাবে করা উচিত, তা যেন ভেবে পেলেন না আপামর দেশবাসী। দেশের প্রথম

'সেই আনন্দ ক্রমশ মিশে যাচ্ছিল আমার রক্তে,' ৪৭ সালের ১৫ অগস্ট কলকাতা ঘুরে দেখেন কিশোর সৌমিত্র

শেষ আপডেট: 11 August 2023 07:02

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট দেশ স্বাধীন (Independence Day) হল। সারা দেশ জানল, ব্রিটিশদের দাসত্ব পার করে সমস্ত ভারতবাসী এখন থেকে স্বাধীন। এই সুসংবাদের উদযাপন কীভাবে করা উচিত, তা যেন ভেবে পেলেন না আপামর দেশবাসী। দেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবস বলে কথা। তাই পথে নেমেই সাড়ম্বরে এই আনন্দ পালন করেছিলেন সকলে।

এই দিনটার স্বাক্ষী থেকেছেন, এমন মানুষের সংখ্যা সময়ের নিয়মেই দিনকেদিন কমে আসছে পৃথিবীতে। ঠিক এমনই একজন ছিলেন, লেজেন্ডারি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Saumitra Chatterjee)। তিনি কেমন ভাবে কাটিয়েছিলেন দেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবস!

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি। ডাক নাম পুলু। এই নামেই তখন তিনি সারা পরিবারে ও পাড়ায় বিখ্যাত। এখনও অনেকের কাছেই তিনি পুলুদা।

১৯৪৭ সালে যখন দেশ স্বাধীন হল, তখন তাঁর বয়স বারো কি তেরো। সদ্য টিনেজারের দোরগোড়ায় তিনি। এই সময়ে স্বাধীনতা দিবসের অর্থ কতখানি হতে পারে, তা কিছুটা হলেও তাঁর বোধগম্য ছিল। ছোট থেকেই পুলু পড়তে খুব ভালবাসতেন। শুধু পাঠ্যপুস্তকেই তাঁর পড়াশোনা সীমাবদ্ধ ছিল না। সব রকমের সাহিত্য তাঁর অল্প বয়সেই পড়া হয়ে গেছিল। সব মিলিয়ে বোধের বিকাশ বয়সের তুলনায় একটু বেশিই ছিল পুলুর। পুলু যখন কৈশোরবেলায় প্রবেশ করছেন, জেগে উঠছে তাঁর নব্যচেতনা, সেই সময়েই জেগে উঠল দেশ। স্বাধীন হল দেশ।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়দের আসল বাড়ি কৃষ্ণনগরে। তবে স্বাধীনতার সময়ে সৌমিত্ররা হাওড়ায় ছিলেন। আর যেদিন দেশ স্বাধীন হল, ১৫ অগস্ট, সেদিন তিনি ছিলেন খোদ কলকাতায়।

সৌমিত্রর মেজো মামার একটা হুডখোলা গাড়ি ছিল। সেই গাড়িতে চড়েই ১৫ অগস্ট দেদার ঘুরেছিলেন কলকাতা। একদিকে কলকাতা শহর দেখা, অন্যদিকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে গা ভাসানো। প্রায় গোটা শহরটাই ঘোরা হয়েছিল সেদিন।

সে এক দারুণ অভিজ্ঞতা। রাস্তায় লোকের পতাকা হাতে মিছিল, গান গেয়ে প্রভাতফেরী করছেন। লোকজনের উচ্ছ্বাস দেখে কিশোর পুলুর মনে হয়েছিল, যেন একটা জন্মান্তর ঘটে গেছে। স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট তাঁর তখনও সবটা বোধগম্য না হলেও, একটা অভিনব ঘটনা যে ঘটে গেছে, তা তিনি বুঝেছিলেন।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় দেশ স্বাধীন হওয়া নিয়ে পরে লিখেছিলেন, "সেই আনন্দ বড় সংক্রামক। ক্রমশ মিশে যাচ্ছিল আমার রক্তে। কলকাতায় ঘুরতে ঘুরতে দেখেছি লোকজন রাস্তায় বেরিয়েছে, গান গাইছে। কী কী গান, সে সব আজ আর ভাল মনে নেই, তবে সেই সুরতালের স্মৃতি ঝাপসা স্বপ্নের মতো জেগে আছে।"

পারিবারিক অ্যালবাম থেকে। সামনেই বসে ছোট্ট পুলু।

তবে এই স্বাধীনতা সব মানুষের জন্য সুখকর ছিল না। ওপার বাংলা ছেড়ে পূর্ববঙ্গের শয়ে শয়ে মানুষদের চলে আসতে হয়েছিল এপার বাংলায়। সেইসব বাঙালিদের কাছে এ স্বাধীনতা যন্ত্রণাই ছিল। নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে 'রিফিউজি' তকমায় অন্যত্র বাসা বাঁধতে কারই বা ভাল লাগে। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির থেকেও হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার চিত্রই মানুষের মনে বেশি ছিল।

যে আতঙ্ক থেকে নিস্তার পাননি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়রাও। কারণ সেই ১৫ অগস্টের দিন হুডখোলা গাড়িতে মামার সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে তাঁদের গাড়ি ঢুকে গেছিল একটা সংখ্যালঘু উপদ্রুত এলাকায়। সেখানে তখনও দেশভাগ আর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার ক্ষতচিত্র দগদগে হয়ে রয়েছে।

সৌমিত্ররা হঠাৎ দেখলেন, মামা চিৎকার করে তাঁদের বলছেন, সাবধান! উপরে তাকাতেই তাঁরা দেখলেন, রাস্তার পাশে একটা বাড়ি থেকে কেউ কিছু একটা তরল পদার্থ তাঁদের গাড়িতে ছুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কী ওটা? নিশ্চয়ই অ্যাসিড! সৌমিত্ররা সবাই শঙ্কিত। যে যার মতো নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন গাড়ির ভিতর। অ্যাসিড গায়ে পড়লে তো রক্ষে নেই! তাঁরা কি এই স্বাধীনতার শুভ দিনে হামলার শিকার হবেন!

শেষমেশ গায়ে এসে লাগল ওই বাড়ি থেকে ছোড়া তরল। কী সেটা? না, অ্যাসিড নয়। গায়ে এসে পড়েছিল 'গোলাপ জল', বয়ে গেছিল সম্প্রীতির পরশ।

ইদে দেশ থেকে দূরে চোখ ছলছল কিশোরী ববিতার, উৎসবে মাতালেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়


ভিডিও স্টোরি