শেষ আপডেট: 6th June 2023 17:42
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'দ্য কেরালা স্টোরি!' বিতর্কিত ছবিটি নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। ছবির মূল গল্প আবর্তিত হয়েছে কেরলের ৩০ হাজারেরও বেশি হিন্দু মেয়েকে ভুল বুঝিয়ে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা এবং বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করানো নিয়ে। সম্প্রতি ১৯ বছরের এক তরুণীকে মুসলিম প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার ব্যাপারে বোঝানোর জন্য তাঁকে নিয়ে 'দ্য কেরালা স্টোরি' দেখতে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। কিন্তু সেই সিনেমা দেখার পরদিনই সেই মুসলিম প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেলেন তরুণী।
ওই তরুণী মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্ক ছিল ইউসুফ নামে এক যুবকের। জানা গেছে, প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার জন্য তরুণীকে বোঝানোর নানা চেষ্টা করেছিল পরিবার। এমনকী, অন্য এক হিন্দু যুবকের সঙ্গে তাঁর অমতেই তাঁর বিয়েও ঠিক করে ফেলেছিল।
সম্পর্ক ভাঙার ব্যাপারে তাঁকে বোঝানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন স্বয়ং বিজেপি সংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। তিনি তরুণীকে সঙ্গে করে 'দ্য কেরালা স্টোরি' দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। আশা করেছিলেন 'জেহাদি' কাজকারবার দেখে তরুণীর চিত্তশুদ্ধি হবে। কিন্তু হল একেবারেই উল্টো। সিনেমা দেখে ফেরার পরের দিনই বাড়ির ঠিক করার পাত্রের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে প্রেমিক ইউসুফের সঙ্গে পালিয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে তরুণীর পরিবারের তরফে ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, ইউসুফ মেয়ের মগজধোলাই করে তাঁকে বিয়ের জন্য রাখা সমস্ত গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ইউসুফ ওই তরুণীর নাম করে একটি ঋণ নিয়েছিল, সেই টাকাও নাকি শোধ করছিলেন তাঁদের বাড়ির মেয়ে।
যদিও তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, বাড়ির লোক জোর করে তাঁর বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাতেই প্রেমিকের সঙ্গে চলে গেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সুদীপ্ত সেন পরিচালিত 'দ্য কেরালা স্টোরি মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই অজস্র বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে ছবিটিকে ঘিরে। কেউ কেউ বলেছেন এটি একটি প্রোপাগান্ডা ফিল্ম। আবার অনেকেই মনে করছেন, গল্পের মোড়কে আসল সত্যিটাকেই তুলে ধরেছেন পরিচালক। পশ্চিমবঙ্গে ছবিটিকে প্রাথমিকভাবে নিষিদ্ধ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও পরে আদালতে নির্দেশে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়।
বিতর্ক সত্ত্বেও মুক্তির পর থেকেই বিপুল ব্যবসা করেছিল ছবিটি। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের অনেকেই ছবিটি দেখার জন্য অনুরোধ করেছিলেন জনসাধারণকে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুরও। তিনি বলেছিলেন, 'আমাদের মেয়েদের সচেতন থাকা উচিত। আমাদের ছোট্ট মেয়েরা একেবারেই নিষ্পাপ। ওরা এখন হয়তো বুঝতে পারছে না, কিন্তু ওদের জীবন সুরক্ষিত নয়। এসব লাভ জিহাদের চক্করে পড়ো না। নিজেদের বাবা-মাকে বিশ্বাস করো এবং তাদের কথা শোনো।'
এমনকী, সপ্তাহ দুয়েক আগে দিল্লির শাহবাগ ডেয়ারি এলাকায় প্রেমিক সাহিলের হাতে ১৬ বছরের কিশোরীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে হিন্দু মেয়েদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের তত্ত্ব খাড়া করেছিলেন তিনি। সেই বক্তব্যেও মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আক্রমণ শানিয়েছিলেন প্রজ্ঞা।
‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখে সাহস পেয়েছি! প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ধর্ম পরিবর্তনের অভিযোগ আনলেন মডেল