Latest News

সিনে-পর্দার রং কিন্তু শুধুই রুপোলি নয়! রইল সর্বকালের সেরা দোল-দৃশ্যের সাতকাহন

দ্য ওয়াল ব্যুরো: সেকাল হোক বা একাল সিনেমার পর্দায় একটা ভাল হোলির দৃশ্য, সঙ্গে মানানসই গান, গোটা সিনেমার অলঙ্কার হয়ে ওঠে। পর্দায় অভিনেতাদের আবির মাখার সঙ্গে দর্শকরা ভীষণ ভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন। আর হোলির গান তো মোটামুটি সারা বছর ধরেই আমজনতার মুখে মুখে ফেরে। একবার জনপ্রিয় হয়ে গেলে বছর বছর দোল কিংবা হোলির দিন একই গান বাজবে সর্বত্র। তা সে যতই নতুন গান রিলিজ হোক না কেন, কদর মোটেও কমে না পুরনোর।

বলিউড থেকে টলিউড এমন হোলির গান রয়েছে অনেক। কোনও সিনেমা রিলিজ হয়েছে নব্বইয়ের দশকে। কোনওটা বা আশির দশক বা তারও আগে। কিন্তু একুশ শতকেও সেইসব গানের জনপ্রিয়তা কমেনি একটুও। বরং জনতার মধ্যে সমীক্ষা করলে দেখা যাবে বারবার ফিরে এসেছে ওই গানগুলোই।

১। সিলসিলা- যশ চোপড়া পরিচালিত আশির দশকের অন্যতম রোম্যান্টিক ছবি। ১৯৮১ সালে রিলিজ হয়েছিল এই ছবি। অমিতাভ বচ্চন, জয়া ভাদুরি, রেখা, শশী কাপুর, সঞ্জীব কুমার অভিনীত এই ছবির ‘রং বরষে’ গানের জনপ্রিয়তা ২০২০ সালেও একচুল কমেনি। বরং বাঙালি থেকে অবাঙালি প্রায় সকলেই দোলের দিন একবার হলেও গানটা শুনে নেন।

২। শোলে- রমেশ সিপ্পির ছবি ‘শোলে’ বলিউডের আইকনিক ছবি। গান থেকে ডায়লগ এমনকি ছবির চরিত্ররা আজও ভীষণ ভাবে জীবন্ত। কোনও সিনেমার ভিলেন চরিত্র যে এত জনপ্রিয় হতে পারে তা বোধহয় ‘শোলে’ তৈরি না হলে জানা যেত না। এই সিনেমাতেও রয়েছে হোলি খেলার একটি দৃশ্য। সঙ্গে রয়েছে জমাটি গান।  ১৯৭৫ সালে রিলিজ হওয়া এই ছবির ‘হোলি কে দিন’ গানের সঙ্গে হেমা মালিনী এবং ধর্মেন্দ্রর নাচ আজও মনে রেখেছে দর্শক।

৩। মহাব্বতে- বিটাউনের রোম্যান্স কিং শাহরুখ খানের অন্যতম ব্লকবাস্টার ছবি। শাহরুখের সঙ্গে এই সিনেমায় ছিলেন বিগ বি অমিতাভ বচ্চনও। আর ছিলেন ঐশ্বর্যা রাই। প্রথম সারির তিন তারকার সঙ্গে নিজের ছবিতে যশ চোপড়া লঞ্চ করেছিলেন একঝাঁক নতুন অভিনেতাকে। ছবির প্রেক্ষাপট জুড়ে ছিল কড়া অনুশাসনে ঘেরা কলেজ আর সেখানকার নিয়মভাঙা কয়েকজন পড়ুয়া। কলেজবেলার হোলি খেলাকে কলেজ ছাড়ার পর দারুণ ভাবে মিস করেন অনেকেই। তবে ‘মহাব্বতে’ সেই অনুভূতিকেই বারবার চাঙ্গা করে। আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগে এই ছবির দৌলতেই পর্দায় এসেছিলেন রাজ আরিয়ান। ব্লু ডেনিম-সাদা শার্ট আর কোমরে লাল ওড়না জড়িয়ে এই সিনেমার হোলি খেলার দৃশ্য আজও ফিকে হয়নি দর্শকদের মনে।

৪। বাগবান- অমিতাভ বচ্চন এবং হেমা মালিনীর বয়সকালে অভিনীত ছবি ‘বাগবান’। রবি চোপড়ার পরিচালনায় ২০০৩ সালে সিলভার স্ক্রিনে রিলিজ হয়েছিল এই ছবি। বয়স হলে সন্তানরা যদি মা-বাবার দেখভাল না করে কিংবা দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে ভাগাভাগি করে তাহলে অভিভাবকরা যে কতটা অসহায় হয়ে পড়েন তাই নিয়েইছিল ছবির গল্প। নিজের ছবিতে সপরিবারে হোলি খেলার একটি দৃশ্য রেখেছিলেন পরিচালক। ‘হোলি খেলে রঘুবীর’ গানে মাতিয়ে পারফর্ম করেছিলেন বিগ বি এবং ড্রিম গার্ল। আজও এই গান টেক্কা দিতে পারে যেকোনও হোলির গানকে।

৫। ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি- হালফিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছবি অয়ন মুখোপাধ্যায়ের ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’। স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর দেখা হওয়া, একসঙ্গে বেড়াতে যাওয়া, স্কুল জীবনের বন্ধুত্বের গভীরতা—-এইসব নিয়ে বড় মন ভাল করা একটা ছবি বানিয়েছিলেন পরিচালক। জনপ্রিয় হয়েছিল সিনেমার সব গানই। তবে জেন ওয়াইয়ের কাছে হোলির থিম সং হয়ে গিয়েছে ‘বলম পিচকারি’ গানটি। হোলি পার্টি হবে আর ‘বলম পিচকারি’ বাজবে না—-একথা ভাবাও ভুল।

শুধু হিন্দি ছবি নয় হোলির গানে ট্রেন্ড তৈরি করেছিল দুটি বাংলা ছবিও।

৬। বসন্ত বিলাপ- নিপাট হাসির ছবি বলতে যা বোঝায় ‘বসন্ত বিলাপ’ আক্ষরিক অর্থে তাই। তাবড় অভিনেতাদের ভিড়েও প্রত্যেকের অভিনয় আজও মনে রয়েছে সকলের। মেসবাড়ির জীবন। নানা মজার মুহূর্ত, খুনসুটি—সব নিয়ে দীনেন গুপ্তর পরিচালনায় ১৯৭৩ সালে রিলিজ হয়েছিল এই ছবি। সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন সুধীন দাশগুপ্ত। এই ছবির সব গান আজও সমান জনপ্রিয়। তবে হোলির প্রেক্ষাপটের গান ‘ও শ্যাম যখন তখন’ যেন আজও একটা অন্য মাত্রা দেয়।

৭। একান্ত আপন- ‘খেলব হোলি রঙ দেব না তাই কখনও হয়’—–এটা বোধহয় বাঙালিদের কাছে শুধু গান নয়, একটা আবেগ, প্রবাদবাক্যও বলা যায়। অপর্ণা সেন এবং ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনীত এই ছবির গানটি বোধহয় বাঙালিদের কাছে হোলির দিনে সবচেয়ে জনপ্রিয়।

সিনেমাপ্রেমীদের অনেকের মতেই আগামী দিনে হয়তো হিন্দি-বাংলা দুই ছবির জগতেই বিভিন্ন সিনেমায় নানা ধরনের হোলির গান তৈরি হবে। তবে এই সাতটির মতো জনপ্রিয়তা হয়তো পাবে না আর কেউই।  সাধারণ মানুষের মনে-মাথায় একেবারেই গেঁথে রয়েছে এই কয়েকটি গান। হোলি শুনলেই আপন মনে অনেকেই গুনগুনিয়ে ওঠেন এইসব গানের দু’কলি।

বাংলা ছবির দোলের দলিল, ফাগুনে-আবিরে-প্রণয়ে-বিরহে রুপোলি পর্দায় রঙের বাহার

You might also like