শেষ আপডেট: 10th March 2025 17:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দুই পরিচালকের মধ্যে বিস্তর ফারাক। নীতি এবং আদর্শে। কিন্তু তাঁরা আজ সহমত শুধুমাত্র এক নির্দিষ্ট বিষয়ে। বলিউড ফিল্ম। পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ এবং বিবেক অগ্নিহোত্রী খুব কম বিষয়েই একমত। রাজনৈতিক ও চিন্তাভাবনার বিভাজনের বিপরীত দিকে থাকা দুই চলচ্চিত্র নির্মাতা বলিউড ছবির অবস্থা সম্পর্কে আজ একমত। কয়েক সপ্তাহ আগে পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ ঘোষণা করেছিলেন যে বলিউড ধ্বংসের দিকে, এবং এখন, ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’খ্যাত পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীও একইভাবে জমে থাকা ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। বিবেক টুইটারে এক দীর্ঘ নোট লিখেছেন যেখানে বলিউড কীভাবে পতনের দিকে এগোচ্ছে তা তুলে ধরেছেন, সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির ধ্বংসের কারণগুলোও।
পোস্টে, বিবেক কর্পোরেট প্রতিপত্তির কাছে নতি স্বীকার করার জন্য পরিচালক এবং প্রযোজকদের নিন্দাও করেছেন এবং স্বীকার করেছেন যে বলিউডে কোনও প্রমিসিং নিউকামার নেই।
বলিউড পতনের দিকে এগোচ্ছে
অগ্নিহোত্রী তলেখেন, ‘বলিউডের পতন হচ্ছে — এবং যা হচ্ছে, তা ভালই হচ্ছে। বলিউড ধ্বংসের মুখে। এবং এটি শিল্পের জন্য ভালো দিক। একটি নতুন বাড়ি তৈরি করতে হলে, আপনাকে পুরানোটি ভেঙে ফেলতে হয়। এটাই সময়। আজ, বলিউডে স্বাধীন প্রযোজক খুব কম। নতুন প্রযোজক নেই। নতুন কিছু সৃষ্টি হচ্ছে না। নতুন কোনও ভাবনা কিংবা নতুন বিপণন কৌশল নেই। কয়েক বছর আগে, এক ডজন স্টুডিও ছিল — এখন মাত্র দুটি, বড় জোর তিনটি পড়ে রয়েছে, এবং সেগুলো ইন্ডাস্ট্রিকে একচেটিয়াভাবে চালাচ্ছে এবং ফিল্ম নির্মাণ ছাড়া বাকি অনেক কারণে আজও রয়েছে। কর্পোরেট লোভ এবং অ্যাজেন্ডাভিত্তিক বিষয়বস্তু, সিনেমার প্রতি সমস্ত আবেগ মুছে দিচ্ছে।’
BOLLYWOOD IS FALLING — and it’s the best thing that could happen.
— Vivek Ranjan Agnihotri (@vivekagnihotri) March 8, 2025
Bollywood is in shambles. And that’s good for the industry. To erect a new building, you must demolish the old one. This is that time.
Today, Bollywood has hardly any independent producers. No new producers. No…
কোনও প্রমিসিং স্টার নেই
সাম্প্রতিক সময়ে এক নতুন ট্রেন্ড চালু হয়েছে ‘রি-রিলিজ’। তা নিয়েও লিখেছেন বিবেক, ‘কোনও সিনেমা নেই, এবং সে কারণে পুরনো ছবির মুক্তি নিয়ে এত উন্মাদনা! এই সংকটের সময়ে যাঁরা এতটুকুও পরিবর্তন আনতে পারতেন, বেশিরভাগ পরিচালকই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং OTT-র কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ফিল্মের ব্যবসায় টিকে থাকার জন্য, তারকা-অভিনেতা অপরিহার্য। কিন্তু কোনও নতুন প্রমিসিং স্টার নেই। আপনি যদি ২১-৩৫ বছর বয়সী কোনও অভিনেতাকে কাস্ট করতে চান, তাহলে আপনি প্রায় কাউকেই খুঁজে পাবেন না — না নায়ক, না নায়িকা। যাঁরা আছেন তাঁরা হিন্দি ভাষাও বলতে পারেন না। না আছে সেই আবেগ। এবং তাঁদের কাছে শিল্পর চেয়ে ইনস্টাগ্রামে বেশি আগ্রহী, বলে মনে হয়। তাঁরা জীবনে যে অনেক কিছু অর্জন করেছে, এমনটাও নয়, অথচ, তাঁদের একটা টিম আছে— ম্যানেজার, সোশ্যাল মিডিয়া টিম, প্রশিক্ষক এবং আরও অনেক কিছু।’
বক্স অফিস নম্বর শুধুমাত্র প্রতারণা
এখানেই থামেননি বিবেক, লিখছেন ‘যদি আপনি (আমার মতো) সাধারণ এবং অপরিচিত হন। এবং আপনার ছবিতে তেমনই অপরিচিত কোনও অভিনেতাদের নিয়ে কাজ করতে চান, তাহলে আপনার ছবির ফান্ডিং, ডিসট্রিবিউশন, এসবের কোনও সম্ভাবনা নেই। একসময় একটি ছবির চূড়ান্ত পরীক্ষা ঠিক হতো বক্স অফিসে। এখন এটা একটা প্রতারণার দোকানে পরিণত হয়েছে। আপনি যে কোনও সংখ্যা লিখে দিতে পারেন, বিনামূল্যে টিকিট দিতে পারেন, কর্পোরেট বুকিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন, বুক মাই শো-তে কারচুপি করতে পারেন— যা খুশি, তাই করতে পারেন। সবাই বক্স অফিসের সংখ্যা নিয়ে বিরাট চিৎকার করে, কিন্তু তাঁদের ছবি নিয়ে বলার কিচ্ছু নেই। কোনও প্রকৃত সমালোচক নেই, কোনও প্রকৃত চলচ্চিত্র পত্রিকা বা ট্যাবলয়েড নেই। যে কেউ টাকা দিলেই যা খুশি লিখিয়ে নিতে পারে। অবাক হওয়ার কিচ্ছু নেই, সব সময়ের মতো, বলিউডও সহজ উপায় বেছে নিয়েছে: কারচুপি এবং দুর্নীতি।’ বিদ্রূপ করছি ভাবছেন? যারা এই দুর্নীতিগ্রস্ত চক্রব্যূহ তৈরি করেছিলেন, তাঁরা নিজেরাই এখন শিকার হচ্ছেন। তাঁরা যে দানবকে তৈরি করেছিলেন, সেই তাঁদের গিলে খাচ্ছে। এবং আমি খুশি। আমি নিশ্চিত এটাই হবে। আমি নিশ্চিত, এটা তাঁদের গ্রাস করবে যাতে তাঁরা পুনর্জন্ম নিতে পারে—এবার দানবের নির্মাতা হিসেবে নয়, খাঁটি চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে জন্মাবে।
‘দ্য দিল্লি ফাইলস’-এ আমরা যে টিমের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা ছোট শহরের, স্থানীয় ভাষাভাষী ছেলেমেয়ে। তাঁদের অনেকেই সফল হবে এবং দুর্দান্ত চলচ্চিত্র তৈরি করবে—যদি দানবটি এই পুরনো, ভাঙা এবং অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থাকে গ্রাস করে ফেলে, তবেই। আপনি যদি একজন মধ্যবিত্ত, এই সময়ের তরুণ গল্পকার হন, আপনার শিল্পের জন্য সমস্ত কিছু ত্যাগ করতে পারেন, তাহলে এটাই আপনার সময়। হ্যাঁ। এটাই সময়। আসুন। আসুন একটি নতুন হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্প গড়ে তুলি। অন্যথায়, বলিউডের নাম পাল্টে ইন্সটাউড করে দিন’।
কাজের ক্ষেত্রে, বিবেকের শেষ ছবি ছিল ‘দ্য ভ্যাকসিন ওয়ার’, যা ২০২৩ সালে মুক্তি পায়, তাঁর পরবর্তী ছবি, ‘দ্য দিল্লি ফাইলস: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ চলতি বছরে ১৫ই আগস্ট মুক্তি পেতে চলেছে।