শেষ আপডেট: 10th December 2024 19:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কলকাতায় ‘দিল লুমিনাতি ট্যুর’ নিয়ে এসেছিলেন পাঞ্জাবি গায়ক ও অভিনেতা দিলজিৎ দোসাঞ্জ! কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। তাঁকে আপন করে নিয়েছিল কলকাতা। সোশাল মিডিয়ার পাতায় পাতায় ছড়িয়ে পড়েছিল দিলিজিতের দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যাওয়ার ছবি। অথচ বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে গিয়ে গেরুয়া বাহিনীর তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে হয় দিলজিৎ দোসাঞ্জ। তবে দিলজিতের আচ্ছা জবাবও দিয়েছেন বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্দেশে। প্রয়াত কবি রাহাত ইন্দোরির বিখ্যাত কবিতার লাইন তুলে দিলজিৎ বলেন, ‘কিসি কে বাপ কা হিন্দুস্তান থোড়ি হ্যায়।’ অর্থাৎ, ‘হিন্দুস্তান কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’ ইন্দোরের বাসিন্দা এবং তীব্র প্রতিবাদী কবিতার জন্য জনপ্রিয় ছিলেন রাহাত ইন্দোরি। তাঁর গজল থেকে নেওয়া এই লাইনটি।
দিলজিতের কনসার্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সেখানে মদ বিক্রি ও ড্রাগসের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়তে পারে। আরও অভিযোগ ছিল, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা স্ট্যান্ড রাখা হয়নি, যা তথাকথিত ‘লাভ জিহাদ’ বাড়িয়ে তুলতে পারে। বজরং দল এবং ভিএইচপির মতে, এই ধরনের কনসার্টে অপসংস্কৃতিকে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে।
Loud and Clear from Indore, MP.
— Mohammed Zubair (@zoo_bear) December 9, 2024
A day before the concert, VHP & Bajrang Dal protested ahead of Diljit Dosanjh concert in Indore. pic.twitter.com/EBCqwiY7z6
বজরং দলের নেতা যশ বচ্চানির বলেছিলেন, “এই ধরনের কনসার্টের পর আমাদের মেয়েরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবে কি না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? কনসার্টে ‘লাভ জিহাদ’ রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?”
ভিএইচপির নেতা অবিনাশ কৌশলের বক্তব্য ছিল, “মা অহল্যাদেবীর পবিত্র ভূমিতে মদ ও ড্রাগসের বিক্রি কীভাবে মেনে নেওয়া যায়? আমরা এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে প্রতিবাদ করছি। দিলজিত খালিস্তানের সমর্থক এবং কৃষক আন্দোলনকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছিলেন, এটাও মাথায় রাখতে হবে।”
এই সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দিলজিত বলেন, “কনসার্টের টিকিট ব্ল্যাক হচ্ছে বলে আমায় দোষ দেওয়া হচ্ছে। এটা শিল্পীর দোষ নয় যে ১০ টাকার টিকিট ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর দায় কারও আলাদা করে নেওয়া উচিত।” এরপর তিনি রাহাত ইন্দোরির আরও একটি শের পাঠ করে বলেন, ‘মেরে হুজরে মে নাহি, অউর কহিঁ পর রখ দো/আসমান লায়ে হো লে আও জমিন পর রখ দো।’
প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিজেপি নেত্রী উষা ঠাকুরও বজরং দল এবং ভিএইচপির সমর্থনে সরব হন। তাঁর কথায়, “মালওয়ার শান্ত ভূমিতে কোনও অ্যান্টি-ন্যাশনাল কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না।”
তবে এই সমস্ত বিতর্ক সরিয়ে দিলজিতের সাহসী বার্তা এবং রাহাত ইন্দোরির শায়েরির প্রতি শ্রদ্ধা ইন্দোরবাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছে। এক ঝাঁক প্রতিবাদের মধ্যেও কনসার্টে মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।