Latest News

সলিল চৌধুরীর গানযাপনের উদযাপন, দেবজ্যোতি মিশ্রের ‘জীবন-উজ্জীবন’

চৈতালি দত্ত

সলিল চৌধুরী (Salil Chowdhury) ভারতের সুরের আকাশে এমন এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক যাঁর গানে সুর এবং স্বরের এক অদ্ভুত আলো-আঁধারির খেলা মাঝেমধ্যেই উঁকি মারে। তাঁকে নিয়ে কথা বলা যেন শেষ হয়েও শেষ হয় না। তিনি যে শুধু কবি, সুরকার, গীতিকার, লেখক তা নয়- তার চেয়ে আরও অনেক কিছু। আকাশের মতো সীমাহীন ছিল তাঁর জ্ঞানের ভাণ্ডার। এককথায় ‘জিনিয়াস’। তিনি ভারতীয় আত্মায় পাশ্চাত্য সঙ্গীতকে সামিল করেছিলেন।

সুরকার নৌশাদ বলতেন, ‘হি ওয়াজ কম্পোজার অফ কম্পোজারস’। সুরের আকাশে যিনি অনেক গানের পাখি উড়িয়েছিলেন। কখনও সেগুলো ‘জিন্দেগি ক্যায়সি হ্যায় পেহলি’র নানা রঙের বেলুন হয়ে গেছে। জীবনের দুরন্ত ঘূর্ণির ছন্দে ছন্দে নানা রঙ বদলে তিনি উজ্জীবিত করেছেন। তাঁর গানে, কথায়, গল্পে, আন্দোলনে তিনি সলিল চৌধুরী। ১৯ নভেম্বর ছিল এই প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীতজ্ঞের জন্মদিন (birth anniversary)। সেই উপলক্ষ্যে ভারতীয় সঙ্গীতের জনপ্রিয় সুরকার তথা কম্পোজার দেবজ্যোতি মিশ্র (Debojyoti Mishra) তাঁর মতো করে স্মরণ করলেন এই কিংবদন্তি শিল্পীকে। অনেক অজানা গল্প, গান, মিউজিক্যাল প্রেজেন্টেশন– সবমিলিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন অডিটোরিয়ামে হয়ে গেল সলিল সুর সন্ধ্যা।জীবন উজ্জীবন- গানে গল্পে সলিল কথা।

Debojyoti Mishra, Salil Chowdhury

দেবজ্যোতি মিশ্র বললেন, ‘সলিল চৌধুরী অত বড় মাপের একজন কম্পোজার হয়েও কখনও তাঁর মধ্যে সেলিব্রিটি সুলভ আচরণ ছিল না। সবার সঙ্গে অনায়াসে মিশে যেতে পারতেন। সারল্য সুলভ ছিল তাঁর আচরণ। ওঁর মুম্বইয়ের বাড়িটি ছিল মিউজিশিয়ানদের জন্য অবারিত দ্বার। আজ এমন কঠিন সময়ে ওঁর এই দিকগুলোর কথাই বেশি করে মনে পড়ে। জীবনে অনেক কিছুই শিখেছি। তার মধ্যে সলিলদা শিখিয়েছেন কীভাবে সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাঁচা যায়। এই যে নিজেকে সেলিব্রিটি ভেবে অন্যদের থেকে দূরে থেকে বাঁচার চেয়ে সবার সঙ্গে বাঁচার যে অনাবিল আনন্দ, সেটা সলিলদার জীবন যাপনের থেকে পাওয়া। এই সলিল চৌধুরীও সঙ্গীতশিল্পী সলিল চৌধুরীর মতোই আমার জীবন যাপনে গুরুত্বপূর্ণ।’

Debojyoti Mishra, Salil Chowdhury

এখানেই না থেমে দেবজ্যোতি বলেন, ‘ওঁর ইচ্ছা ছিল সুরকার কীভাবে তৈরি করা যেতে পারে, সেই বিষয়ে একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক। যেখানে মিউজিক, কম্পোজিশন নিয়ে যাঁরা ভাবছেন তাঁরা সেই বিষয়ে খুঁটিনাটি সব কিছু শিখতে পারবেন। যদিও সেই ভাবনা বাস্তবে রূপ পায়নি। কিন্তু কত মিউজিশিয়ান তিনি যে তৈরি করে গিয়েছেন, আজও তাঁর গান থেকে যে কতজন কত কিছু শিখছেন, তা ভাবলে অবাক হই। আমিও গানের পাঠশালা তৈরি করেছি। ওই যে বলেছিলাম, সুতোয় বাঁধা পড়ে রয়েছি। সেই দিনগুলোর কথা বললাম, গান করলাম, আরও একবার নিজেদের জীবনকে সলিল মন্ত্রে উজ্জীবিত করলাম।’

Debojyoti Mishra, Salil Chowdhury

এদিন গানে কখনও ‘এই রোকো পৃথিবীর গাড়িটা থামাও’, কখনও আবার ‘শোনো কোনও একদিন’, ‘জিন্দেগি ক্যায়সি হ্যায় পেহলি’, ‘ও আলোর পথযাত্রী’, ‘পথে এবার নামো সাথী’-র মতো গানে মুখরিত হল গোটা অডিটোরিয়ামের চত্বর। সুরকার দেবজ্যোতি মিশ্রর তত্ত্বাবধানে গানে অংশগ্রহণ করেছিলেন বহু শিল্পী। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মেঘলা, অরিত্র, অর্ণব প্রমুখ। কিংবদন্তি শিল্পী সলিল চৌধুরী ভারতীয় সুরে বিশ্বকে মিলিয়ে দিয়ে ভারতকে করে তুলেছেন বিশ্বজনীন। এটাই সলিল ম্যাজিক। তাঁর গানে জলোচ্ছ্বাসের শব্দ রয়েছে, যা যুগ যুগ ধরে ধ্বনিত হবে।

দেবের বিয়ের ফুল কি ফুটেছে? জানতে চায় মিঠুন,  শ্রীশ্রী প্রজাপতয়ে নমঃ

You might also like