দেব
শেষ আপডেট: 24th December 2024 11:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত শুক্রবার অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর, একসঙ্গে চারটে বাংলা সিনেমা রিলিজ করেছে। 'পুষ্পা ২'-এর হইচইয়ের মাঝে 'খাদান' হল না পাওয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন অভিনেতা দেব। তবে মুক্তির ১২ ঘণ্টা আগেই ছবিটা পাল্টে গিয়েছিল। রাজ্যজুড়ে প্রায় প্রতিটি জায়গায় বিপুল পরিমাণে হল পায় 'খাদান'।
সিনেমাপ্রেমী মানুষরা অনেকেই মনে করছেন দেবের হাত ধরেই বাংলা কমার্শিয়াল সিনেমার সুদিন ফিরল। শেষ কবে কোনও বাংলা সিনেমা দিনে এক কোটি আয় করেছে, তা একবারে বলা মুশকিল। যার গোটা সাফল্যের সিংহভাগ কৃতিত্ব দর্শকদেরই দিয়েছেন দেব। দ্য ওয়াল-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, 'দর্শক সব সময়ই পাশে ছিল। শুধু নিজের কাছে প্রশ্ন রাখা জরুরি যে আমি তাদের জন্য কতটা করতে পারলাম।'
দেবের কথায়, তিনি এযাবৎ প্রজাপতি, টনিকের মতো সিনেমা করেছেন। যেগুলোর সবই পারিবারিক ছবি। খাদানের গল্প ভাবা ছিল চার বছর আগে। তাঁর এই ছবি বা বলা ভাল 'লারজার দ্যান লাইফ' ছবি করার মূল উদ্দেশ্যই একটা বড় অংশের দর্শকের কাছে পৌঁছানো। আর তাই একটা বাস নিয়ে বাংলার বিভিন্ন জেলায় জেলায় ছুটে বেরিয়েছেন অভিনেতা।
এই ছবি যখন থেকে ভাবা, তখন থেকেই অভিনেতা-সাংসদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল যিশু সেনগুপ্তের নাম। দেব জানান, তিনি প্রথমে একজন প্রযোজকের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু রেইকি করার মুখে তিনি জানিয়ে দেন, এই ছবি না করে বরং যদি অন্য ছবি করা যায়। কিন্তু, দেবের সাফ কথা ছিল, করলে এই ছবিই হবে না হলে নয়। আর এই চোয়াল শক্ত করা সিদ্ধান্তের জন্যই যে ছবির 'বাজার' রমরম করে হিট তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
দেব জানান, 'একের পর এক শো হাউজফুল হচ্ছে। 'খাদান'ই প্রথম কোনও বাংলা ছবি যার জন্য রাত ২টোয় হল খুলতে হয়েছে। শীতের রাতে ব্যান্ডপার্টি নিয়ে মানুষজন ছবি সেলিব্রেট করেছেন। নাচ-গান করেছেন। সেই ভিডিও ভাইরালও হয়েছে।'
তাঁর কথায়, 'এই ইন্ডাস্ট্রিকে যদি বড় করতে হয় তাহলে খাদানের মতো ছবিকেই ব্লকবাস্টার হতে হবে। এ ধরনের ছবিতে টাকা রোল করার জায়গা থাকে। আর খাদানে যদি সেটা হয় তাহলে অন্যান্য সিনেমাগুলোও সাহস পাবে। পরিচালক-প্রযোজকদেরও একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি করে দেবে।'
প্রসঙ্গত, এই ছবির স্পট দেখতে, যাকে কায়দা করে রেইকি বলা হয়, সেখান থেকে শুরু করে ছবির যাবতীয় কাজ একা হাতেই সামলেছেন দেব। তিনি জানান, 'ছবিতে কিশোরী বলে একটা গান আছে। তার যে শুটিং স্পট সেটা এখন জলের তলায়। এরকম একটা জায়গায় শুটিং করার সাহস জুগিয়েছেন দর্শকই।'
তাঁর কথায়, 'শেষবার এরকম সাফল্য, মানুষের উন্মাদনা দেখেছিলাম 'পাগলু' মুক্তি পাওয়ার পর। প্রায় ১০ বছর পরে আমাকে মানুষ সিনেমায় নাচতে দেখেছে। শেষবার সম্ভবত 'লাভ এক্সপ্রেস' সিনেমায় নেচেছিলাম। আবারও যে কমার্শিয়াল ছবির হাত ধরে একটা বড় অংশের মানুষের কাছে পৌঁছোতে পারলাম, সেট আভেবেই আনন্দ হচ্ছে। মানুষের উদ্দেশে আমি একটাই কথা বলব, আমায়, আমার ছবিকে আবারও বিশ্বাস করার জন্য আমি ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞ। এরপর থেকে যখন অন্য কোনও রাজ্য তাদের ব্লকবাস্টার হিট ছবি নিয়ে কথা বলবে তখন আমিও বলতে পারব যে আমাদের কাছে একটা খাদান আছে।'
খাদান যতটা দেবের, ততটাই যিশু সেনগুপ্তর। শ্যাম-মোহন জুটির রসায়ন ব্লকবাস্টার। বাংলা কমার্শিয়াল সিনেমার দীর্ঘদিন এহেন উন্মাদনা দেখে খুশি সিনেমহলও। দুই তারকার অনুরাগীবৃত্তের বাইরের উন্মাদনার পারদ দেখেই পরখ করা যায় এ ছবি 'পয়সা উসুল' ছবি।