
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কন্যাভ্রূণ হত্যা কিংবা কয়েক মাসের কন্যা সন্তান ধর্ষণের (Child Abuse) শিকার হয়েছে, এই ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা আকছার শোনা যায়। আশ্চর্যের ব্যাপার যে অনেক ক্ষেত্রে রক্ষকই ভক্ষক হয়ে ওঠেন। যেমন শোনা যায়, শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। সেই সঙ্গে স্পর্শকাতর বিষয়ে তো বটেই।

একটা বয়সের পর মেয়েদের বাড়ির বাইরে পা রাখার সময় কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত করতে হবে সেই সম্পর্কে সম্যক ধারণা তার শৈশব থেকেই বাড়িতে শেখানো হয়। অথচ শিকারি যদি একই বাড়িতেই বসবাস করে সেই সমস্যার জন্য কেউই প্রস্তুত থাকে না। এমনই এক বিষয়কে কেন্দ্র করে শিশুকন্যাদের নিরাপত্তা (Child Abuse) নিয়ে ছবি’ ইয়েস পাপা’ তৈরি করছেন ‘এক মুলাকাত’ ,’ গর্দিশ মে তারে ‘খ্যাত জনপ্রিয় হিন্দি নাট্যকার তথা পরিচালক সেফ হায়দার হাসান।


‘ইয়েস পাপা’ ছবির হাত ধরেই বলিউডে পা রাখেন সেফ হায়দার হাসান। তিনি বলেন, ‘ বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে সংবাদপত্রে প্রায় প্রতিদিনই এই ধরনের ঘটনা আমরা পড়ি। এরকম অমানবিক কাজের জন্য অপরাধীর শাস্তি পাওয়া উচিত। শিশু নির্যাতন এটি জঘন্য়তম অপরাধ। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দরকার।’

পরিচালক ইতিপূর্বে দীপ্তি নাভাল, জিনাত আমন, সতীশ কৌশিক, শেখর সুমনের মতো প্রবীণ অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি গুলজারের আঁধারে নামে একটি ছোটগল্প রূপান্তরিত করেছেন। পাশাপাশি দুটি বই ,বারোটি নাটক লিখেছেন । বেশ কিছু নাটকও তিনি পরিচালনা করেছেন।
ছবির সৃজনশীল প্রযোজক রামকমল মুখোপাধ্যায় ‘দ্য ওয়াল’ এর চৈতালি দত্তকে জানালেন, ” ৬ বছর আগে সাংবাদিক হিসাবে পরিচালক সেফের সঙ্গে তাঁরই একটি মঞ্চে অভিনয়ের সময় পরিচিত হয়েছিলাম। তারপর থেকেই ওঁর গল্প এবং কাজের প্রতি আমি অনুরক্ত। এমন একটি ছবি যা একজন নাগরিক হিসাবে মানুষকে আরও অনেক বেশি সতর্ক করবে এবং সচেতনতা বাড়াবে। আমি এই প্রজ্ঞা ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে অত্যন্ত ধনী।”
বলিউডের ড্রিম গার্ল তথা সাংসদ হেমা মালিনীকে তাঁর অভিনীত জীবনে রাজিয়া সুলতান, মীরা, দ্রৌপদী, দুর্গা ,সীতার মতো শক্তিশালী নারী চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। নতুন পরিচালকের ‘ইয়েস পাপা’ ছবির টিজার শেয়ার করে তিনি লিখেছেন ,’প্রযোজক রাম কমল যখন আমাকে এই ছবির টিজার দেখিয়েছিলেন তখনই আমি অনুমান করি যে সমাজকে আরও সচেতন এবং সুরক্ষামূলক গড়ে তুলতে হলে সিনেমা হল জনপ্রিয় মাধ্যম। শিশু নির্যাতন গর্হিত অপরাধ। আর এই ধরনের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত হয়ে পড়ে সেইসব অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত। পরিচালক সেফ হায়দার হাসানকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই যে তিনি এই স্পর্শকাতর বিষয়কে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে যত্ন সহকারে তুলে ধরেছেন।’
এই ছবিতে একাধিক জাতীয় পুরস্কার জয়ী অভিনেতারা রয়েছেন। পরিচালক অনন্ত নারায়ণ মহাদেবনকে নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। তিনি বলেন, ” সমাজের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে শিশুকন্যা নির্যাতন একটি অন্যতম জ্বলন্ত বিষয়। অথচ এই জঘন্য অপরাধকে সর্বদা আড়ালে রাখার চেষ্টা করা হয়। কোনও চলচ্চিত্র নির্মাতা সমাজের এই ভয়াবহ অপরাধমূলক বিষয়কে ছবিতে আলোকপাত করেননি। ফলে দর্শকেরা ‘ইয়েস পাপা’ ছবিটি দেখতে অনেক বেশি আগ্রহী হবেন বলে আমার বিশ্বাস। “
এই ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন গীতিকা ত্যাগী। ছবিতে কোর্টরুম ড্রামার মাধ্যমে তিনি কীভাবে ছেলেবেলায় যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন তা দেখতে পাবেন।’ গীতিকা বলেন, ” পরিচালক সমাজের গুরুতর একটি বিষয়ে নিয়ে ছবি করেছেন। এই গুরুতর এবং ভয়ঙ্কর সমস্যা ঘিরে যে নিরাপত্তা পালন করা হয় তা বর্তমান সময় কতটা ভাঙার প্রয়োজন যা ছবি দেখলে বোঝা যাবে। এই ছবি একটি মেয়েকে ঘিরে আবর্তিত। মেয়েটির নিজের বাবাই বছরের পর বছর ধরে তাকে যৌন নির্যাতন করেছেন। মানুষকে সতর্ক করতে এই ধরনের বিষয়কে নিয়ে ছবি করতে আগামী দিনে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের এগিয়ে আসা উচিত।”
ইতিমধ্যে মুম্বইয়ের বিভিন্ন লোকেশনে ছবির শ্যুটিং শেষ হয়েছে। বর্তমানে এখন জোরকদমে চলছে ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ । এই বছরই ছবিটি মুক্তি পাবে ।
আরদ ড্রিমসের ব্যানারে এই ছবির প্রযোজক সাদিয়া মুস্তাহসিন। অভিজিৎ দেশপান্ডে ছবি সম্পাদনা করেছেন।এছাড়াও এই ছবির হাত ধরে অভিনয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক নন্দিতা পুরী আত্মপ্রকাশ করেন। অন্য অভিনীত শিল্পীরা হলেন দিব্যা শেঠ শা, তেজস্বিনী কোলাপুরে, হাসান জায়দি প্রমুখ।