
অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের হঠাৎ প্রয়াণে স্তম্ভিত টলিউড, রেখে গেলেন পুত্র অভিনেতা দেবাঞ্জনকে
শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
টালিগঞ্জ পাড়ায় এক নামে দুই অভিনেতা বা অভিনেত্রী অনেক সময়ই ছিলেন। তখন তাঁদের বড় আর ছোট লিখে সম্বোধন করা হত। সেই ধারা ধরেই টলিউডে আছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায় নামে দুই অভিনেত্রী। একজন ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘আবহমান’ ছবির জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত নায়িকা। ছোট পর্দায় যিনি সবার প্রিয় সুবর্ণলতা।
আর এক অনন্যা চট্টোপাধ্যায় (Ananya Chatterjee) সিনিয়র। যাকে বড় অনন্যা হিসেবে অনেক সময় ডাকা হত। যৌবনে যার মঞ্চ থেকে বড়পর্দায় অভিনয় জীবন শুরু। পরে ছোটপর্দায় মায়ের রোলে সবার প্রিয় ছিলেন তিনি। আজ প্রয়াত (passes away) হলেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায় (বড়)।

যৌবনেই অনন্যা বড়পর্দায় সুযোগ পান। উমানাথ ভট্টাচার্য পরিচালিত ‘চারমূর্তি’ ও উমাপ্রসাদ মৈত্রর ‘এক যে ছিল বাঘ’ ছবিতে স্বল্প সময়ের অভিনয়েই নজর কাড়েন তিনি। পরবর্তীকালে বহু রঙিন বাংলা ছবিতেও চরিত্রাভিনেত্রী রূপে আধুনিকা নারীর অভিনয় করেছেন অনন্যা। দেবশ্রী রায় ও ফারুক শেখ অভিনীত বাংলা ছবি ‘গুঞ্জন’-এ বড় চরিত্রে কাজ করেন অনন্যা চ্যাটার্জী। বরাবর বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি।
যদিও অনেক পরে অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বহুল জনপ্রিয়তা পান মায়ের রোলে ছোটপর্দা দিয়েই। ই টিভি বাংলার ‘এই তো জীবন’ সিরিয়ালে শ্রীলেখা মিত্রের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। মৈত্রেয়ী মিত্রর মায়ের ভূমিকাতেও একাধিক সিরিয়াল, টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন অনন্যা। তাঁকে দেখা গিয়েছিল ইন্দ্রাণী হালদার অভিনীত ‘গোয়েন্দা গিন্নি’ মেগাতেও। সম্প্রতি ‘সোনা রোদের গান’ সিরিয়ালে কাজ করছিলেন অভিনেত্রী।

অনন্যা চট্টোপাধ্যায় (বড়) মায়ের রোলে যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তেমন বাস্তবেও তাঁর নিজের ছেলে টালিগঞ্জ পাড়ার এক জনপ্রিয় অভিনেতা। অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে হলেন দেবাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। দেবাঞ্জন ছোট পর্দায় স্বামী বিবেকানন্দর ভূমিকায় সকলের পরিচিত মুখ।

অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণের খবর আজ সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আনেন পরিচালক অনিন্দিতা সর্বাধিকারী। ২০০৪ সালে অনিন্দিতা সর্বাধিকারী পরিচালিত ‘পরবর্তী সংবাদ দুপুর দুটোর সময়ে’ টেলিছবিতে অভিনয় করেছিলেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনন্যা দেবীর প্রয়াণের খবর সামনে আনেন। শ্রীলেখা মিত্র জানিয়েছেন, একসঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরাও। ‘এই তো জীবন’ ধারাবাহিকে তাঁর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অনন্যা। সৌমিলি বিশ্বাস থেকে শুরু করে গায়িকা মিস জোজো এই হঠাৎ প্রয়াণে কার্যত স্তম্ভিত।
আজ ভোর ৫টা ১৫ নাগাদ শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। গায়ে জ্বর ও কাশি নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। ফুসফুসে সংক্রমণ (lung infection) হয়েছিল অভিনেত্রীর। চলছিল চিকিৎসা। হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। ভোরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন তিনি।

ক’দিন আগেও শ্যুটিং করেছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, ছেলের সঙ্গে শহরের শপিংমলে বেড়াতেও খেতে বেরিয়েছিলেন তিনি। জুন মাসেই অনন্যা দেবীর স্বামী প্রয়াত হন। কিছু মাসের মধ্যে অনন্যা দেবীও আজ পাড়ি দিলেন স্বামীর কাছে। রেখে গেলেন একমাত্র ছেলে দেবাঞ্জনকে। বাবা-মাকে পরপর হারালেন তিনি। মায়ের মতোই অভিনয়কে ভালবেসে এগিয়ে চলুক দেবাঞ্জনের জীবন। শুভ কামনা।
চেক শার্ট পরে বারাণসীর রাস্তায় মিঠুন, কখনও লস্যি খাচ্ছেন, কখনও টানছেন রিকশা