শেষ আপডেট: 24th May 2022 07:08
বর্তমানে 'টক অফ দ্য টাউন' হয়ে উঠেছে একটাই নাম। জিতু কমল। অনীক দত্তর 'অপরাজিত' (Aparajito) ছবিতে সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকায় লিড রোডে অভিনয় করে জিতু আজ সকলের মনের মণিকোঠায়।
কিন্তু জানেন কি, এই রোল জিতুর করারই কথা ছিল না! অনীক দত্ত 'অপরাজিত' ছবিতে জিতুকে প্রথমে কাস্ট করেছিলেন একদম ছোট্ট রোলে! মাত্র একদিনের কাজের জন্য প্রথমে ডাকা হয় জিতুকে! লিড রোলে অনীক দত্ত প্রথমে কাস্ট করেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক জনপ্রিয় নায়ককে। সিরিয়াল অভিনেতা জিতু কমলের থাকার কথাই ছিল না ওই ভূমিকায়। কিন্তু ছবি রিলিজের পরে সব বদলে গেল। কোনও জনপ্রিয় স্টার নয়, সেই সিরিয়াল অভিনেতা জিতুই বক্সঅফিসে রেকর্ড হিট দিল। নতুন পথ দেখালেন জিতু। বুঝিয়ে দিলেন, অভিনয় ক্ষমতাই শেষ কথা।
জিতু কমল কেন 'অপরাজিত'তে (Aparajito) ছোট্ট রোলে কাস্ট হন? সেখান থেকে কীভাবে বা তিনি চলে আসেন নামভূমিকায় তথা লিড রোলে, সে গল্প 'দ্য ওয়াল'কে শোনালেন জিতু নিজেই।
জিতু কমল বললেন, 'প্রথমে 'অপরাজিত' ছবিতে ছোট চরিত্রেই ডাক পেয়েছিলাম। এক দিনের কাজের জন্য ডেকেছিলেন অনীকদা। লিড রোডে আমি ছিলাম না। সত্যজিৎ রায়ের প্রথম যৌবনের চরিত্রে ভাবা হয়েছিল আমাকে। একদম ইয়ং তরুণবেলার সত্যজিৎ। পরবর্তীতে যখন তিনি 'পথের পাঁচালী' বানাচ্ছেন, আসল চরিত্র যে, সেই বড় রোলটায় আমি ছিলাম না।
যদিও অনীকদার ছবিতে ছোট রোল নাকি বড় রোল, তা আমার কাছে ম্যাটার করেনি। কারণ রোলটা ছোট হলেও সেটা ছিল সত্যজিত রায়ের ভূমিকাতেই। তাঁর একদম শুরুর দিকটায়। এক দিনের কয়েকটা শটের জন্য ডাকা হয়েছিল আমাকে। এমন একটা স্বপ্নের চরিত্রে কাজ করতে পারছি, তাই এক দিনের সেই কাজ বিনা পারিশ্রমিকে করব বলে ঠিক করি। জাস্ট কয়েকটা তো শট।
কিন্তু যখন অনীকদা সত্যজিৎ রায় রূপে আমার লুক টেস্ট করলেন, গল্পটা বদলে গেল। তখনও আমি জানতাম না, কী চরিত্র কত বড় চরিত্র ইত্যাদি। পরে অনীকদা আমাকে লুক টেস্টের ছবি পাঠান। আমি নিজেই বলি, এগুলো তো সত্যজিৎ রায়ের ছবি! আমার ছবি পাঠাও। অনীকদা বলেন, 'তুমিই তো এটা!'
আমি আমার চোখকে বিশ্বাস করতে পারিনি।'
এর পর তো ইতিহাস তৈরি হল। তবে 'অপরাজিত'তে (Aparajito) জিতু আশাতীত সাফল্য পাওয়ার পরে একটা রটনা বাজারে ঘুরছে। জিতু নাকি ছবির লিড চরিত্রটি করেও কোনও রকম টাকা পারিশ্রমিক নেননি। জিতু নিজেই খোলসা করলেন সে কথা, 'দ্য ওয়াল'এ।
জিতু জানালেন, 'অপরাজিততে লিড রোল করে টাকা নিইনি এটা একেবারে বাজে কথা। পুরোটাই মিথ্যে গুজব। ছোট একদিনের রোলে সত্যজিৎ রায়ের তরুণবেলার চরিত্রে যখন নির্বাচিত হই কয়েকটা শটের মাত্র কাজ ছিল। ওটা ভেবেছিলাম বিনা পারিশ্রমিক করব। কিন্তু ছোট থেকে নির্বাচিত হলাম বড় রোলে। কাজ বেড়ে হল টানা দু'তিন মাসের। এটাই আমার একমাত্র রোজগার। আমার সংসার আছে, দায়-দায়িত্ব আছে। ফলে টাকা নিয়েই করেছি 'অপরাজিত'।
শুধু তাই নয়, আমাকে খুব যত্ন করে টাকা দিয়েছেন প্রযোজক। একবারের জন্য বলতেও হয়নি। তার আগেই পারিশ্রমিক চলে এসেছে। এরকম এত তাড়াতাড়ি টাকা খুব কমই পেয়েছি অন্য কাজ করে। এখন আমার নামে কে কোথায় কী বলছে কী লিখছে এত দেখা তো সম্ভব নয়।
যেমন আমার স্ট্রাগল পিরিয়ডের একটা ভিডিও খুব ভাইরাল হয়েছে। এটা তো এখনকার ভিডিও নয়, চার বছর আগেকার ভিডিও। তারপর ইন্ডাস্ট্রি আমাকে অনেক দিয়েছে। সিরিয়াল আমায় ঢেলে দিয়েছে। নইলে কি আমার নিজের নামে গাড়ি-বাড়ি হত! কিন্তু ওই চার বছর আগের একটা ভিডিও, যাতে কিছু দুঃখের কথা বলেছিলাম সেটা এখন ভাইরাল।
আসলে দুঃখের কাহিনি বাজারে বেশি চলে, তাই আমার বলা চার বছর আগের ভিডিও এখন চলছে। কে কী তুলে বানিয়ে দিচ্ছে কী আর বলব! সেরকম পারিশ্রমিক নিয়েও বাজে রটনা আমার নামে রটছে।'
অভিনেতা তাঁর অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিক নেবেন,লেখক তাঁর লেখার জন্য পারিশ্রমিক নেবেন, গায়ক তাঁর গানের জন্য পারিশ্রমিক নেবেন এটাই ন্যায্য। জিতু তাঁর দিক থেকে পরিষ্কার ও স্পষ্ট। জিতু সত্যজিৎ রায় হয়েই নয় জিতু কমল আরও নতুন নতুন চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে নিজের পারদর্শিতা মেলে ধরুন।
বসন্ত চৌধুরী মানেই ‘রাজা রামমোহন’! হার মেনেছিল উত্তমকুমারের জনপ্রিয়তাও