অনুরাগ-বিক্রমাদিত্য
শেষ আপডেট: 13th April 2025 16:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এখন আর ভবিষ্যতের বিষয় নয়—এটা বর্তমানে এসে গেছে এবং ধীরে ধীরে সিনেমার জগতে গভীর প্রভাব ফেলছে। সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় বলিউডের দুই প্রগতিশীল পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ এবং বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে (AI) বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন।
অনুরাগ কাশ্যপের খোঁচা মেনস্ট্রিম বলিউডকে। অনুরাগ কাশ্যপ, যিনি প্রায়ই মূলধারার হিন্দি সিনেমাকে একহাত নিতে ছাড়েন না, এবারও সুযোগ মিস করেননি। তিনি বলেন, ‘হিন্দি সিনেমায় AI-এর প্রভাব নিয়ে বললে, বলতেই হয়—তারা ইদানিং আসলে কিছু বানাচ্ছে না। শুধু রিমেক আর রিমেক। আমি বলব, AI অন্তত ওদের আরও ভালো কপি আর রিমেক বানাতে সাহায্য করবে!’
তবে অনুরাগের আপত্তি কেবল সৃজনশীলতার উপর AI-এর প্রভাব নয়। তিনি পরিবেশগত দিক নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। AI সার্ভারের জন্য প্রয়োজন অজস্র পরিমাণে জল। অনুরাগ বাস্তব উদাহরণ শেয়ার করে বলেন, ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’-এর শুটিংয়ের সময় ড্যানি বয়েল ছোট ক্যামেরা ব্যবহার করতেন, আর তার ফিড চলে যেত ল্যাপটপে। সিস্টেম ঠান্ডা রাখতে আইসপ্যাক ব্যবহার করা হতো। এখন ভাবুন তো, AI সার্ভার ঠান্ডা রাখতে কতটা কুল্যান্ট লাগে!’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি AI প্রম্পটে ১৬ আউন্স জল ব্যবহার হয়। এই হারে AI চলতে থাকলে ২০২৭ সালের মধ্যে কেবল সার্ভার ঠান্ডা রাখতেই যত জল ব্যবহার হবে, তা ডেনমার্কের পুরো ব্যবহৃত জলের সমান!’
এমন বাস্তব চিত্র তুলে ধরে অনুরাগ মানুষকে AI-এর অন্ধ ব্যবহারে সচেতন করতে চেয়েছেন।
‘AI সিনেমা নির্মাতাদের নয়, দর্শকদের জন্য ভালো’– বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে।
তিনি বলেন, ‘AI নির্মাতাদের চেয়ে দর্শকদের জন্য বেশি উপকারী। AI-এর সাহায্যে আপনি নিজেই একটি সিনেমা বানাতে পারেন। এমনকি আপনি নিজেকে ‘স্টার ওয়ার্স’-এর লুকে স্কাইওয়াকার বানিয়ে দেখতে পারেন!’
তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করেন যে AI থিয়েটার-ভিত্তিক সিনেমার মৃত্যু ডেকে আনবে না। সিনেমাহল বন্ধ হবে না, শুধু অভ্যাস বদলাবে’ বিক্রমাদিত্য বলেন, ‘সিনেমা হলের ‘মৃত্যু’ আমরা বহুবার শুনেছি—ভিএইচএস ক্যাসেট থেকে শুরু করে স্যাটেলাইট টিভি ও ইন্টারনেটের যুগে। কিন্তু মানুষ এখনও সিনেমাহলে যায়, যাবে। হয়তো আগের মতো নিয়মিত নয়, কিন্তু সিনেমাহলের সেই ‘সম্মিলিত অভিজ্ঞতা’ কখনও শেষ হবে না।’
সব মিলিয়ে বলা চলে, AI সিনেমার ভবিষ্যৎ বদলাচ্ছে, কিন্তু সিনেমাহলের জাদু এখনও অটুট। শুধুমাত্র প্রযুক্তিকে বুঝে, সচেতনভাবে ব্যবহার করাই এখন মূল চাবিকাঠি।