শেষ আপডেট: 12 December 2023 18:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিয়েবাড়ির আসর বসেছে। তার মধ্যে একগাল দাড়ি, সুঠাম চেহারার এক ভদ্রলোক ঢুকলেন। মাথায় মদের গ্লাস, গলায় পুঁতির মালা, আর পরনে ঝকঝকে সাদা শার্ট। তাঁরই বিয়ে, তবে প্রথম নয়। দুই স্ত্রী থাকতেও তৃতীয় পাণিগ্রহণের আগে আসর একেবারে জমজমাট। পিছনে বাজছে একটি 'দুবোর্ধ্য' গান,
"আহায় সিয়া হে জাঙ্গি দেলামু নাকোন খুন
নাওয়াইতু রাফতি কুজা মানাম সু মাজনু
জামাল জামালেক জামলো জামাল কুদু
জামাল জামালেক জামলো জামাল কুদু"
রণবীর কাপুর-ববি দেওল অভিনীত অ্যানিমাল ছবির এই গানের তাল-ছন্দ-সুর-লয় এমন যে তা একবার শোনার পর থেকেই মাথায় একেবারে গেঁথে যায়। আর এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া আরও বেশি করে দায়ী। নেটমাধ্যমে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে এই গান। অনেকেই এই গানকে 'লর্ড ববি এন্ট্রি সং' বলে ডাকছেন। সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা পরিচালিত সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত 'অ্যানিমাল' ছবির 'জামাল কুদু' গানে মজে রয়েছে বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেই। ইতিমধ্যেই ইউটিউবে এই গানের ভিউ প্রায় ৩১ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে।
গানের কথা বা মানে বুঝতে না পারলেও সুর, তাল, ছন্দ মানুষের মন কেড়ে নিয়েছে এই গান। সাধারণ মানুষ থেকে বড় বড় তারকা- সবাই পা মেলাচ্ছেন এই গানের রিলসে। কিন্তু এই গানের প্রকৃত উৎস কোন জায়গা থেকে সেটা জানেন? বা এই গানের কথার অর্থই বা কী?
'জামাল কুদু' গানের উৎস কিন্তু ভারতে নয়, বরং ইরানে। সেখানকার লোকগীতি 'জামাল জামালু' থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বানানো এই গান। জানা গেছে, সঙ্গীত পরিচালক হর্ষবর্ধন রামেশ্বর অ্যানিমাল ছবির জন্য এই গানকে একেবারে নতুন করে পাল্টে নেন। এই গানটি প্রথম গেয়েছিলেন সিরাজি কয়ার। ১৯৫০ সালে খারাজেমি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে এই গানটি সবার সামনে প্রথমবারের জন্য গাওয়া হলেও পরবর্তীকালে বিয়ের গান হিসেবে জনপ্রিয়তা পায় জামাল কুদু। ইরানের জনপ্রিয় কবি বিজান স্মান্দার একই নামে একটি কবিতা লিখেছিলেন, সেটিতেই সুরারোপ করে গান গেয়েছিলেন সিরাজি।
গানের যে লাইনটি সবথেকে বেশি জনপ্রিয় হয় সেটা হল 'জামাল জামালেক জামলো জামাল কুদু', বাংলায় যার অর্থ ও আমার প্রিয়, আমার ভালবাসা, আমার মিষ্টি ভালবাসা।
বাংলায় এই গানের অর্থ:
ও আমার কাজল নয়না সুন্দরী, নিঠুর হয়ে আমার হৃদয় ভেঙো না, তুমি আমাকে ছেড়ে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছ, আর আমি মজনুর মতো পাগল হয়ে যাচ্ছি।
আমার মন নিয়ে খেলো না প্রিয়, তুমি আমাকে ছেড়ে দ্বীপান্তরে চলে যাচ্ছ আর আমি মজনুর মতো উন্মাদ হয়ে যাচ্ছি।
আমার প্রিয়, আমার ভালবাসা, আমার মিষ্টি ভালবাসা।
তোমার হৃদয় বুকের মধ্যে বন্দি হয়ে রয়েছে, কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না, তুমি এতটাই ক্লান্ত যে স্থির হয়ে বসতে পারছ না, তোমার এখন কোনও চাহিদা নেই।
আমার মন নিয়ে খেলে আমাকে কষ্ট দিও না, তোমার পিছনে ছুটে যেতে আমাকে বাধ্য কোরো না, আমার অনুভূতি নিয়ে ছেলেখেলা কোরো না।