শেষ আপডেট: 28th May 2022 12:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতের মত দেশে বাস করে 'অনেক' দেশ। ভারতের মধ্যে যা বৈচিত্র্য দেখা যায় তা অন্য কোনও দেশে পাওয়া যায় না। শুধু প্রকৃতির বৈচিত্র্য নয়, আছে মানুষের মধ্যেও প্রচুর বৈচিত্র্য। দেশের তেমনই এক অংশ হল নর্থ-ইস্ট ইন্ডিয়া। ভারতের এই অংশটির মধ্যে লুকিয়ে আছে বহু অজানা রহস্য। সাহিত্য ভাণ্ডারে খুঁজলেও এই অংশের ওপর লেখা বই পাওয়া দুর্লভ। এই অংশে প্রায় সব সময়ই কিছু না কিছু নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। তবে পুরোটাই প্রচারের আড়ালে। (Anek Review)
ভারতের এই অংশের দ্বন্দ্ব, সমস্যা, উগ্রবাদী মনস্তত্ত্ব নিয়েই 'আনেক'-এর (Anek Review) চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন পরিচালক অনুভব সিনহা (Anubhav Sinha)। 'আর্টিকেল ১৫'-এর মতই একটি প্রকৃত সমস্যাকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন অনুভব। নায়ক সেই আয়ুষ্মান খুরানা। ওখানে ছিল পুলিশ অফিসার, এখানে আন্ডারগ্রাউন্ড এজেন্ট।
একটি মিশনে দিল্লি থেকে নর্থ-ইস্ট ইন্ডিয়াতে পাঠানো হয় আয়ুষ্মান খুরানাকে (Ayushmann Khurrana)। সিনেমা জুড়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে বিচ্ছিন্নবাদী গোষ্ঠীর নেতা টাইগার সাংগারের গতিবিধি যেমন আতসকাঁচের তলায় রেখেছেন আয়ুষ্মান তেমনই অন্যান্য গোষ্ঠীর নেতাদেরকে চোখের আড়াল হতে দেননি তিনি। লক্ষ্য একটাই, উত্তর-পূর্ব ভারতে শান্তি বজায় রাখা।
মুম্বইয়ের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খেলেন আমির! নতুন ছবির ট্রেলার মুক্তির আগে 'পারফেক্ট' প্রচার
প্রথম থেকে এভাবেই গল্প এগোতে থাকে। বিভিন্ন গোষ্ঠীর কার্যকলাপ কীভাবে নজরে রাখছেন আয়ুষ্মান সেটাই দেখানো হয়েছে। লক্ষ্য পূরণের জন্য তিনি যে যেকোনও পর্যায়ে যেতে পারেন। আইডো (আন্দ্রেয়া কেভিশুসা) নামের এক উঠতি বক্সারের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন আয়ুষ্মান। তবে পুরোটাই নিজের কাজের স্বার্থেই। একদিকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর কার্যকলাপের নজর রাখার দৃশ্য, আবার অন্যদিকে এই প্রেম। দর্শকদের এক ঘেয়েমি কাটাতে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন পরিচালক।
এখানেই চিত্রনাট্যে মোড় ঘোরে। মেয়ে দেশের হয়ে বক্সিং খেলার স্বপ্ন দেখলেও, আইডোর বাবা নিজেকে ভারতের নাগরিক হিসেবে ভাবেননি না। নিজেই গড়ে তোলেন সশস্ত্র গোষ্ঠী। উল্টো দিকে সেই গোষ্ঠীর হদিশ পেতেই আইডোর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান আয়ুষ্মান। শেষ পর্যন্ত কী হয় সেটাই পর্দায় দেখতে হবে।
এমন চরিত্রের জন্য তিনি যে সেরা নির্বাচন তা আবারও প্রমাণ করলেন আয়ুষ্মান। একার কাঁধেই উতরে দিলেন ছবিটি। মনোজ পাহওয়া এবং কুমুদ মিশ্রের অভিনয় বরাবরের মতই নজর কেড়েছে। এবার আসা যাক আইডোর চরিত্রে। অনুভব সিনহা চাইছিলেন এই চরিত্রে ওখানকারই কাউকে দিয়ে অভিনয় করানোর জন্য। সেখান থেকেই উঠে আসেন আন্দ্রেয়া কেভিশুসা। পরিচালক যে ভুল করেননি তা অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ করেছেন আন্দ্রে।
তবে চিত্রনাট্যে গোত্তা খেয়েছে মাঝে মধ্যে। তবে প্রথমার্ধের থেকে দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আঁটোসাঁটো লেগেছে গল্পটা। তবে বরাবরের মতই সত্য বিষয়টা তুলে ধরার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত অনুভব। এই ছবির ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি।
তবে পরিচালক এখানে যে প্রশ্ন গুলো তুলে ধরেছেন তা খুবই প্রাসঙ্গিক। পরিচয় কি? একটি জাতির কাঠামোর মধ্যে পরিচয় কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়? জাতি কতটা স্বাধীনতা দেয় নিজেকে প্রকাশ করার জন্য? সিনেমা শেষে আপনিও হয়তো এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজবেন।
হঠাৎ করে খুব পেটে ব্যথা, মোচড় দিচ্ছে? ঘরোয়া উপায়ে কমিয়ে ফেলুন