বিয়ের পরে জয়া ও অমিতাভ।
শেষ আপডেট: 24th July 2024 22:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অর্ধ শতাব্দী পার করে ৫১ বছর হয়ে গেছে তাঁদের বিয়ের। এখনও 'সুখী দম্পতি' বলেই পরিচিত তাঁরা। মাঝেমাঝে অবশ্য জয়াকে অভিযোগ করতে শোনা যায়, হাজবেন্ড হিসেবে মোটেও রোম্যান্টিক নন অমিতাভ। তা অবশ্য মজার ছলেই বলেন তিনি। বচ্চনসাহেবও রসিকতার সুরে তাল দেন।
তবে এবার এক অন্য অভিযোগ সামনে এল। ঠিক অভিযোগ নয়, শর্ত বলাই ভাল। জানা গেল, বিয়ের আগে অমিতাভ বচ্চন জয়াকে বলেছিলেন, যে তিনি চান না তাঁর স্ত্রী সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করুক। শুধু তাই নয়, প্রতিদিনও কাজ করা চলবে না স্ত্রীর। সেই বুঝেই যেন ছবি বেছে নেন জয়া। এই শর্ত শোনার পরেই অভিনেত্রীকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, অমিতাভকে তিনি বিয়ে করবেন কিনা।
শোনা যায়, প্রথম দেখাতেই জয়ার প্রেমে পড়েছিলেন অমিতাভ। তখন জয়া ভাদুড়ি নামেই পরিচিত ছিলেন বাঙালি কন্যা। 'গুড্ডি' ছবির শ্যুটিং সেটে তাঁদের দেখা হয়েছিল। ওই ছবিতে অমিতাভ বচ্চন একটি ক্যামিও ভূমিকায় ছিলেন। সেখান থেকেই তাঁদের বন্ধুত্বের যাত্রা শুরু হয় এবং পরে ‘জঞ্জির’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান তাঁরা। তারপরেই তাঁদের বন্ধুত্ব প্রেমে পরিণত হয়।
সম্প্রতি জয়া বচ্চন তাঁর নাতনি নভ্যার একটি পডকাস্ট শো-তে তাঁদের বিয়ের গল্প বর্ণনা করেছিলেন। সেখানেই তিনি জানান, অমিতাভ তাঁর সামনে একটি বড় শর্ত দিয়েছিলেন, বিয়ের পরে সিনেমায় কাজ করা নিয়ে। অভিনেত্রী আরও জানান, 'আমরা প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যে অক্টোবরে বিয়ে করব। কারণ আমি যে শ্যুটিংটি করছিলাম, তা অক্টোবরে শেষ হয়ে যেত। কিন্তু অমিতজি আমাকে বলেছিলেন, তিনি চান না তাঁর স্ত্রী এত কাজ করুন। শেষমেশ ১৯৭৩ সালের ৩ জুন আমরা বিয়ে করেছিলাম।'
তবে এর আরও একটা কারণ ছিল। সে সময়ে জঞ্জির ছবির কাজ শেষ করে অমিতাভ ও জয়া একসঙ্গে ছুটি কাটাতে যাবেন ভেবেছিলেন। তবে অমিতাভের বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন বিয়ের আগে তাঁদের একসঙ্গে ছুটি কাটানোর অনুমতি দেননি। তাই বিয়েটা জুন মাসে করে তবেই তাঁরা বেরোতে পেরেছিলেন। সেটাই ছিল তাঁদের হানিমুন। সেখান থেকে ফিরেই শ্যুট করেছিলেন 'অভিমান' ছবির।
অমিতাভ ও জয়ার বিয়েতে কেবল তাঁদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা আমন্ত্রিত ছিলেন। মুম্বইয়ে জয়ার বাড়িতে সাদামাঠাভাবে আয়োজিত হয়েছিল এই অনুষ্ঠান। বিয়ের পরে অমিতাভ বচ্চন পুরোদমে অভিনয় চালিয়ে যান এবং হিন্দি সিনেমার অন্যতম বড় সুপারস্টারও হয়ে ওঠেন, যা সকলেই জানেন। তবে জয়া তাঁর পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাচ্ছিলেন। তিনি দুই ছেলেমেয়ে, অভিষেক এবং শ্বেতা বচ্চনের দেখভালের সম্পূর্ণ দায়িত্বও নেন।
View this post on Instagram
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৪ সালে অমিতাভ বচ্চনও এই বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'জয়ার একটি গুণ আমি খুব প্রশংসনীয় বলে মনে করি, ও ওর কেরিয়ারকে নয়, বরং পরিবারকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। আমার তরফ থেকে কখনও কোনও বাধা ছিল না, এটা জয়ারই সিদ্ধান্ত ছিল। বিয়ের পরে সমস্ত সিদ্ধান্ত তো স্ত্রীরাই নেন!'
তবে দশ বছর পরে জয়া যখন নাতনির সঙ্গে আলাপচারিতায় এই নিয়ে মুখ খুললেন, তখন সেই সুর কিন্তু একই রইল না। বরং তাঁর কথায় এটাই ফুটে উঠল, যে তাঁর কাজ করা নিয়ে বিয়ের আগে থেকেই সংরক্ষণশীল ছিলেন বিগ বি।