শেষ আপডেট: 9th December 2024 16:20
টলিউড ইন্ডাস্ট্রি এবং ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (30 KIFF, Film Industry )মধ্যে একটি ফাঁটল যে রয়েছে, তা গত পাঁচ দিনে স্পষ্ট হয়েছে। মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩ তারিখ কলকাতা প্রেস ক্লাবে জড়ো হন ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। ফেডারেশনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলে ডিরেক্টর্স গিল্ড। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায়, ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরি, সুব্রত সেন, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছিল পরিচালকদের সংগঠনের তরফে। এও শোনা গিয়েছিল, বহু পরিচালকের কাছে KIFF-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণের চিঠি পর্যন্ত পৌঁছয়নি। ৪ তারিখ ধনধান্য স্টেডিয়ামে ছিল অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন না ‘বিক্ষুব্ধ’ পরিচালকদের অনেকেই। অন্যদিকে অনুষ্ঠানে প্রযোজকদের একাংশকেও দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর পাশে, একই টেবিলে। ফেস্টিভ্যালের প্রথম দিনগুলোয় ‘বিক্ষুব্ধ’ পরিচালকদের দেখা যায়নি ঠিকই। কিন্তু দিন যত এগিয়েছে, সুদেষ্ণা রায় থেকে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যায় নন্দনে। দু’জনের দু’টি ছবি প্রদর্শিত হয় রবীন্দ্র সদনে। সেই ছবির উপস্থাপনার দায়িত্ব নেনও তাঁরা।
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে রোববার সন্ধেতে পেদ্রো আলমোডাভার পরিচালিত ‘দ্য রুম নেক্সট ডোর’ ছবিটি দেখতে আসেন ঋদ্ধি সেন (Riddhi sen)। ঋদ্ধি সেনও ‘বিক্ষুব্ধ’, এর আগেও ‘স্বজন পোষন’ নিয়ে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি। ‘দ্য ওয়াল’-এর তরফে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইর্স্টার্ন ইন্ডিয়া এবং ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার এই দ্বন্দের সুরাহা কীভাবে হবে?
‘সুরাহা আসবে সমষ্টিগতভাবে, কারওর একজনের দ্বারা তা হবে না। আর একটি কথা, ফিল্ম ফেস্টিভাল হয় এক সপ্তাহর জন্য, কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি বছর-বছর ধরে কাজ করে চলেছে।’
ঋদ্ধি বলে চললেন, ‘২০১১ সাল থেকে সমস্যাগুলো চলছে, আমি নিজে দু’টো ছবির অংশ ছিলাম। ‘চিল্ডেন অফ ওয়ার’ এবং ‘চৌরঙ্গ’। ২০১৩ সাল এবং ২০১৪ সাল এই সমস্যাগুলোর কারণে ছবিগুলো গুটিয়ে অন্যত্র নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছে। সিনেমকর্মীদের কথা বলি, তাঁদের পিঠ ঠেকে গিয়েছে। প্রযোজক-পরিচালকদের কী সমস্যার সম্মুখীন হয়, নিজে কাজ করে বুঝেছি। নিজে ছবি পরিচালনা করতে গিয়ে দেখেছি, বেশি টেকনিশিয়ানস প্রয়োজন না থাকা সত্বেও, কী হয়েছিল!’
ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের জন্য পরিচালকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ঋদ্ধি বলেন, ‘আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না, আমি প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। এমন এক সমস্যা যে সবাইকে বোঝাতে গেলে, তা বুঝবেও না, আর এই যে অনেকে জড়িয়ে পড়ছেন, তার প্রয়োজনও নেই। একটা কথা মনে রাখতে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি, মুম্বইয়ের মতো এত বড় নয়। এখনই ইন্ডাস্ট্রি ছোট হয়ে এসেছে, একটা কোথাও মনে হয় বদল প্রয়োজন। সাংবিধানিকভাবেই প্রয়োজন।
ঠিক কী আইনি পথ বেছে নিলেন ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন?
ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (FCTWEI) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইর্স্টার্ন ইন্ডিয়া (DAEI)। মামলাটি দায়ের করা হয়েছে সিসিআই-এ (Competition Commission of India)।
সিসিআই (Competition Commission of India)
১৪ অক্টোবর ২০০৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, এই কমিশন। কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক নিযুক্ত সদস্যে গঠিত কমিশন। একজন চেয়ারপার্সন এবং ২-৬ সদস্য রয়েছেন। সিসিআই প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশকে উত্সাহিত করে এবং বজায় রাখে। ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষা এবং ভারতীয় বাজারের মধ্যে বাণিজ্যের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে, সঙ্গে সমস্ত কিছু নির্মূল করার জন্য দায়ী যা সুস্থ প্রতিযোগিতাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। অতিরিক্তভাবে, আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যে কোনও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের অনুরোধের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা-সম্পর্কিত বিষয়ে মতামত, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের দায়িত্ব নিতে পারে সিসিআই (Competition Commission of India)।