দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড অডিও ভিজ্যুয়াল অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট সামিট (WAVES) ২০২৫-এ হাজির হন বলিউডের পারফেকশনিস্ট আমির খান। জানালেন কেন হিন্দি সিনেমাগুলো এখন আর বক্স অফিসে ভালো ফল করছে না! শুধু তাই নয়, আমির অভিনীত শেষ ছবি ‘লাল সিং চাড্ডা’-ও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।

আমির খান আবারও তাঁর সোজাসাপ্টা কথায় চমকে দিলেন সকলকে। ওয়ার্ল্ড অডিও ভিজ্যুয়াল অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট সামিট (WAVES) ২০২৫-এ আমির বললেন, হিন্দি সিনেমা ফ্লপ হওয়ার আসল কারণ কেবল কনটেন্ট নয়, তার চেয়েও বড় সমস্যা কম সংখ্যক থিয়েটার আর ওটিটি-র ভাঙা বিজনেস মডেল। আমির স্পষ্ট বলেন, ‘ভারতে মোটামুটি ১০ হাজার স্ক্রিন আছে। অথচ আমেরিকায়, যাদের জনসংখ্যা আমাদের ১/৩ বা ১/৪ অংশ, তারা চালায় ৪০ হাজার স্ক্রিন। আর চিনে আছে ৯০ হাজার! ওদের জনসংখ্যা আমাদের থেকে কম, তাও ওরা বহুদূর এগিয়ে।’

তিনি আরও জানান, ‘এই ১০ হাজার স্ক্রিনের মধ্যে অর্ধেকই দক্ষিণ ভারতে। বাকি দেশজুড়ে বাকি অর্ধেক। ফলে হিন্দি সিনেমার ভাগে পড়ে সর্বোচ্চ ৫ হাজার স্ক্রিন। আর এত বড় দেশে আমাদের সবচেয়ে বড় হিট সিনেমাগুলোর থিয়েটারে দর্শক হয় মাত্র ৩ থেকে ৩.৫ কোটি! ভাবুন, দেশে যেখানে এত সিনেমাপ্রেমী মানুষ, সেখানে মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখে!’

এই পরিস্থিতিকে তিনি বললেন ‘একেবারে অন্যায়’ তাঁর দাবি, ‘ভারতে আরও অনেক থিয়েটার তৈরি হওয়া দরকার।” এখানেই থামেননি তিনি। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘মুক্তির মাত্র ৮ সপ্তাহ বা তার কম সময়ের মধ্যেই সিনেমা চলে আসে ওটিটিতে। তাহলে আমরা দর্শকদের কী বলছি? তুমি হলে এসো না, সাবস্ক্রিপশন থাকলে ঘরে বসেই দেখে নাও। এই মডেলটা খুব ‘হাস্যকর’, মানে একেবারে উল্টো পথে চলছি আমরা।’

আমির এও বলেন, ‘আমরা নিজেরাই বলছি দর্শককে হলে না যেতে, আর তারপর প্রশ্ন করছি—ছবি চলছে না কেন? দোষ তো নিজেদেরই।’

পরিচালক-প্রযোজকরা যখন বসে আলোচনা করেন—ছবিগুলো কেন চলছে না, তখন আমির স্পষ্ট মত দেন—এটা ওটিটির কারণে। তিনি বলেন,‘“সবাই ভাবে ছবি ভালো হচ্ছে না, তাই চলছে না। আমি বলি, সেটা আলাদা বিষয়। ছবি ভালো হোক বা খারাপ, এই বিজনেস মডেলটাই ভুল। আমি যদি দারুণ একটা ছবিও বানাই, তাও এই মডেল চলবে না। তাই গুণগত মানের বিষয়টা আলাদা করে দেখতে হবে।’ বলিউডের এই স্ট্রেট টক এখন সিনেমা জগতে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আপনার কি মনে হয়, আমিরের এই বক্তব্য বদলে দিতে পারে ভারতীয় সিনেমার ভবিষ্যৎ? উত্তর দেবে সময়।