সোশ্যাল মিডিয়ার খেলায় এতটা জড়িয়ে পড়া এতটাও উচিৎ নয়, যে বাস্তবতা থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কেউ, কারণ সেটি শেষমেশ বিপজ্জনক হতে পারে।
বং গাই
শেষ আপডেট: 17 May 2025 07:37
কিছুদিন আগে এক ওয়েব ছবিতে দেখা গেল ইরফানপুত্র বাবুলকে। ‘লগ আউট’। সোশ্যাল মিজিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রতি ভক্তদের ‘অন্ধ’ ভালবাসা ঠিক কী বিপর্যয় আনতে পারে, তার এক ‘স্যাম্পেল পেপার’ বলা যেতে পারে সেই ছবিকে। সোশ্যাল মিডিয়ার খেলায় এতটা জড়িয়ে পড়া এতটাও উচিৎ নয়, যে বাস্তবতা থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কেউ, কারণ সেটি শেষমেশ বিপজ্জনক হতে পারে।
‘দ্য ওয়াল’ স্টুডিয়োতে বসে যখন মুখোমুখি ‘বং গাই’ কিরণ দত্ত, তখন তাঁকে প্রশ্ন করা হল এমন কোনও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন কখনও? ফ্যানদের অন্ধ ভালবাসার ‘চাপ’ অসহনীয় হয়ে উঠেছে কখনও? খানিক হেসে কিরণ বলতে শুরু করলেন, ‘আগে একটা সময়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে প্রচুর লোক আসত বাড়িতে। বাবা-মাও বুঝতে পারত না! যখন বুঝতে পারলেন, তখন বললেন, ‘ওদের জন্য তোমার এত পরিচিতি, তাই যখনই কেউ আসবে বাড়ি, দেখা করতে হবে।’ এমনও হয়েছে, ঘুমোচ্ছি, বাব ডেকে দিয়েছেন। কিন্তু একটা দিনের পর লোকজন বাড়িতে আসা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর বাবা-মা ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল।’
স্বভাবতই প্রশ্ন কী হয়েছিল? কিছুক্ষণ থেমে কিরণ বললেন, ‘আমি জায়গাটাকে এই কথা বলে, ছোট করতে চাইছি না। বোলপুর থেকে কিছু লোকজন আমার বাড়িতে আসে। মোট পাঁচজন হবে। হাতে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে আসে আমার বাড়ি। আমাদের বসার ঘরে কথাবার্তা শুরু হয়। কিছুক্ষণ যেতেই তাদের কথাবার্তা অদ্ভুত ঠেকতে শুরু করল...বলল, তোমার ভিডিয়ো আমাদের ভাললাগে! তোমাকে বোলপুর নিয়ে যেতে চাই। ওখানেই তুমি থাকবে। একজন বলল, আমার একটা ফ্ল্যাট আছে, তোমায় দিয়ে দেব। বলল, আমাদের বোলপুরের সংস্কৃতি তুলে ধরবে। আরও অনেকে আছে তাঁদের সঙ্গে ভিডিও বানাবে!’
প্রথম প্রথম এসব কথা শুনে কিরণ এবং তাঁর বাবা গোটা বিষয়টিকে মজার ছলেই নেন। কিন্তু পরে বিষয়টি মজাতেই থাকেনি। কিরণ বললেন, ‘বাবা-আমি দু’জনেই হাসিছিলাম। আমার নিজের বাড়ি আছে। রাজারহাটে একটা ফ্ল্যাট আছে। কেন আমি বোলপুরে থাকব?’ এটা বলার পর একজন বলল, ‘তোমায় থাকতেই হবে, নাহলে আমাদের অনেক সোশ্যাল পেজে আছে, সেই সব পেজ থেকে তোমার নামে কুৎসা রটাব!’ আমি তখন ভাবছি, এ আবার কী কথা?
তখনও সেই ব্যক্তির বক্তব্যকে ‘বং গাই’ সিরিয়াসলি নেননি। ‘আমি তখনও ভাবছি, ইয়ার্কি বা খানিক সমস্য রয়েছে (মাথায়) কিন্তু না, তারপর আমায় ফেসবুক খুলে দেখাল, দু’দিন আগে আমার নামে নোংরা ভিডিয়ো বানিয়েছে। কোনও একটা ঘটনা নিয়ে আমি সে সময়ে বক্তব্য রাখিনি, তাই এই ব্যাপারে বং গাই কিছু বলেননি, এমন গোছের।’
এখানেই শেষ নয়। রীতিমতো ‘থ্রেট’ দিতে থাকে সেই ব্যক্তি। বলে, ‘তুমি যদি বোলপুর না আসো, তাহলে এটা বাড়তে থাকবে! আমার সামনে বসে, আমারই বাড়িতে এই কথাগুলো হচ্ছে!’ তারপর প্রায় আধ ঘন্টা ধরে সে সব রকম ‘থ্রেট’ কিরণ শোনেন, এবং তারপর কাজের অজুহাত দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। কিরণের জীবনে খ্যাতি যে কী বিপদ আনতে পারেন, তার উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরলেন জীবনের প্রথম দিকের ঘটনাকে।