শেষ আপডেট: 16th August 2024 19:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ওড়িশার ভুবনেশ্বরে কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কেআইআইটি) এবং কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস (কেআইসিসি), জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে সামাজিক প্রভাব সৃষ্টির জন্য খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে কেআইআইটি সম্প্রতি এমন সম্মান অর্জন করেছে যা ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে প্রথম।
রাষ্ট্রসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজিকে চলতি বছর 'বিশেষ পরামর্শমূলক' মর্যাদা প্রদান করেছে৷ 'কিট' দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় যা এই সম্মান পেয়েছে। পাশাপাশি রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যা ছাত্রদের বিভিন্ন উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেবে। ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করে পড়ুয়ারা যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবে তা বলাই বাহুল্য। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম কোনও বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নজির গড়ে ফেলেছে 'কিট'।
নজির গড়া এখানেই শেষ নয়। গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে আবার নাম জুড়ে গেছে 'কিস'-এর। তিনবারের গ্র্যামি পুরস্কার প্রাপ্ত রিকি কেজ কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ অচ্যুত সামন্তের সহায়তায় গিনিস বুকে রেকর্ড বানিয়ে ফেলেছেন। ২০২৩ সালে লন্ডনের অ্যাবে রোড স্টুডিওতে ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য সবচেয়ে বড় সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা (১০০-পিস রয়্যাল ফিলহারমনিক অর্কেস্ট্রা, ইউকে) পরিচালনা করার পরে, ভারতীয় সঙ্গীত সুরকার এবং তিনবারের গ্র্যামি বিজয়ী রিকি কেজ ভারতীয় কিংবদন্তিদের নিয়ে একটি অসাধারণ কাজ করেছেন। কেজ ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের একটি স্মারক সংস্করণ তৈরি করেছেন যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড সেট করেছে৷
রিকি কেজ ডঃ অচ্যুত সামন্তের সহযোগিতায় ওড়িশার ১৪ হাজার জনজাতি শিশুদের নিয়ে এই গান রেকর্ড করেছেন, যা ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সে পরিবেশিত হয়েছে। ডঃ অচ্যুত সামন্ত হলেন কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা। এর আগে ৬ হাজার ৬৫১ জনকে নিয়ে সুইট অ্যাডলাইনস ইন্টারন্যাশনাল, ন্যাশভিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয়েছিল "সবচেয়ে বড় গানের অনুষ্ঠান"। সেটিকে ছাপিয়ে গেছে এটি।
আমেরিকান কাউন্সিল অফ ইয়াং পলিটিক্যাল লিডারস-এর সঙ্গে ঐতিহাসিক গাঁটছড়াও বেঁধেছে 'কিট' এবং 'কিস'। ২০২৫ সালে ১১ দিনের জন্য সাতজনের একটি প্রতিনিধি দল ভারতে পাঠাবে আমেরিকান কাউন্সিল অফ ইয়াং পলিটিক্যাল লিডারস। এদিকে, 'কিস' ২০২৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাবে কয়েকজন ভারতীয় পড়ুয়াকে। এর মূল লক্ষ্য, ভারতের সঙ্গে দৃঢ় কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি করা।
অলিম্পিক্সে ঐতিহাসিক অংশগ্রহণও রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। 'কিট' থেকেই অন্তত ২৪ জন প্রাক্তন ছাত্র এর আগে অলিম্পিক্সে গেছে। চলতি বচর প্যারিস অলিম্পিক্সে তাঁদের মধ্যে ১৫ জন অংশগ্রহণ করছে। ভারতের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দু'জন প্যারালিম্পিয়ান দিয়ে আরও একটি রেকর্ড করেছে 'কিট'। এই ক্রীড়াবিদদেরা আর্থিক এবং শিক্ষাগতভাবে সমর্থনও করেছে তারা। খেলাধুলা এবং শিক্ষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য ব্যাপক সহায়তাও করা হচ্ছে তাঁদের।
'কিট' ২০২৩ সালে ভারত সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের দ্বারা জাতীয় প্রাতিষ্ঠানিক র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (NIRF)-এ ১৬ স্থানে ছিল। টাইমস হায়ার এডুকেশন ইয়ং ইউনিভার্সিটি (২০২৪) র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বে ১৬৮ এবং ভারতে ১০ স্থানে রয়েছে।
ইন্ডিয়া রেটিং অ্যান্ড রিসার্চ প্রাইভেট লিমিটেড 'কিট'-এর বাহ্যিক ক্রেডিট রেটিং দিয়েছে এএ+ (ডাবল পজিটিভ), যা ভারতের যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ ক্রেডিট রেটিং। 'কিট' এবং 'কিস' অ্যাকাডেমিক, গবেষণা, সামগ্রিক বিকাশ, মানসিক বুদ্ধিমত্তা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো একাধিক বিষয়ে ফোকাস করে এবং পড়ুয়াদের জন্য নতুন পথ খুলে দেয়। একই ব্যক্তি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একই জায়গার দুটি প্রতিষ্ঠানের এই অভূতপূর্ব স্বীকৃতি একটি অনন্য উদাহরণ।