আর কারও না হোক, ইশান্ত শর্মার (Ishant Sharma) তো বটেই। সারা দুনিয়া যাকে বিরাট কোহলি (Virat Kohli) নামে চেনে, জানে পরাক্রমী, কখনও উদ্ধত, কখনও বিনয়ী ক্রিকেটার হিসেবে, খাস দিল্লিতে বড় হয়ে ওঠা, ছেলেবেলার সতীর্থকে ইশান্ত ডাকেন এবং বোঝেন স্রেফ ‘চিকু’ নামে!
ইশান্ত ও বিরাট
শেষ আপডেট: 18 May 2025 12:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নামে আসে যায়।
আর কারও না হোক, ইশান্ত শর্মার (Ishant Sharma) তো বটেই। সারা দুনিয়া যাকে বিরাট কোহলি (Virat Kohli) নামে চেনে, জানে পরাক্রমী, কখনও উদ্ধত, কখনও বিনয়ী ক্রিকেটার হিসেবে, খাস দিল্লিতে বড় হয়ে ওঠা, ছেলেবেলার সতীর্থকে ইশান্ত ডাকেন এবং বোঝেন স্রেফ ‘চিকু’ নামে!
কয়েক দশক পেরিয়ে কেরিয়ারের প্রান্তলগ্নে পৌঁছেও সেই পরিচিতির রং এতটুকু তেলচিটে হয়নি। জমেনি সময়ের ধুলো, পড়েনি ঈর্ষার থাবা। র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরের আসন দখল, দুনিয়ার সেরা দলের অধিনায়কত্ব অর্জন থেকে শুরু করে বিশ্বজয়—সফল কেরিয়ারের যাবতীয় মাইলস্টোন পেরিয়ে টেস্ট দুনিয়াকে সম্প্রতি আলবিদা জানিয়েছেন বিরাট কোহলি।
ইশান্ত শর্মাও এখন কেরিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে। জাতীয় দলের হয়ে না খেললেও আইপিএলে (IPL) নামছেন। সম্প্রতি গুজরাত টাইটানস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচের (GT vs DC) আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিরাটের সঙ্গে চিরসবুজের বন্ধুত্বের খতিয়ান তুলে ধরলেন তিনি। যার শুরুয়াত সেই অনূর্ধ সতেরোর জমানা থেকে!
দুনিয়ার চোখে যিনি বিতর্কিত ক্রিকেটার, ভালবাসা ও সমালোচনাকে একই সঙ্গে গ্রহণ করেছেন, ইশান্তের মতে, মানুষ বিরাটের সঙ্গে সেই ইমেজের কোনও মিল নেই। তাঁর কথায়, ‘তারকা কোহলি বাইরের লোকেদের জন্য। আমি ওকে সেভাবে চাইলেও দেখতে পারি না। কারণ আমরা একসঙ্গে অনূর্ধ-১৭ টিমে খেলেছি। ও আমার ছেলেবেলার বন্ধু!’
কেমন ছিল সেই বন্ধুত্ব? দুজনে হাতে হাত মিলয়ে কীভাবে কেরিয়ারের একের পর একে সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে এসেছেন? খোলসা করতে গিয়ে ইশান্ত বলেন, ‘যখন আমরা অনূর্ধ-উনিশে খেলতাম, সেই সময় শুধুই টাকার হিসেব কষে চলতাম। খেতাম একসঙ্গে। ট্রাভেল অ্যালাওয়েন্স জমাতাম। বাড়ি নিয়ে ফিরতাম। বিরাট সবার কাছে আলাদা মানুষ। আমার কাছে তো বটেই।‘
চোখধাঁধানো সাফল্য আর উত্তুঙ্গ জনপ্রিয়তা। সবই কালে-কালান্তরে ‘ব্র্যান্ড বিরাটে’র জন্ম দিয়েছে। কিন্তু ইশান্তের কাছে দিল্লির বিরাট এখনও আদরের ভাই, কাছের বন্ধু। যাকে কোনও রাখঢাক ছাড়াই ‘চিকু’ বলে সম্বোধন করা যায়। ইশান্তের কথায়, ‘একবার ভাবুন, আপনার ভাই, প্রচুর সম্মান অর্জন করল, অন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেল। কিন্তু দিনের শেষে তোমার কাছে ও একজন মানুষ-ই। যার সঙ্গে তুমি অনেক সময় কাটিয়েছ। ওর চরিত্রের ভেতর-বাহির সবটুকু চেনা। তুমি জানো, ও কোথা থেকে উঠে এসেছে, ও ঠিক কোনটা, কোনটা নয়!’
আর এই কারণেই ম্যাচের বাইরে মোলাকাত শুরু হয় না মাঠের লড়াই দিয়ে। কথা চলে ফেলে আসা সময় নিয়ে। খুনসুটিতে মেতে ওঠেন দুই বন্ধু। কতটা মজাদার বিরাট? ইশান্ত বলেছেন, ‘যখন আমরা দেখা করি, কখনও বলি না কতগুলো ম্যাচ খেলে ফেলেছি। সারাক্ষণ মজায় মেতে থাকি। এটা দেখ, সেটা দেখ, এটা শোন, সেটা শোন—এসবই চলতে থাকে। ও যে বিরাট কোহলি—সেটাই মাথায় থাকে না। আমাদের কাছে ও এখনও চিকু-ই! আমরা একসঙ্গে ঘুমিয়েছি, রুম শেয়ার করেছি।‘
প্রসঙ্গত, দুই বন্ধু প্রায় একই সঙ্গে ঘরোয়া ক্রিকেটের উঠোন ছেড়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ময়দানে উঠে আসেন। ইশান্ত একটু আগে, বিরাট কিছুটা পরে। সেই দিনের কথা ফিরে দেখতে বসে স্মৃতিকাতর ইশান্ত। বলেছেন, ‘যখন আমার অভিষেকের খবর এল, বিরাট আমায় ধাক্কা মেরে জানিয়েছিল। অবাক হওয়ার সুরে বলেছিল, তুমি সত্যি দেশের হয়ে খেলবে? আমি কথার জবাবে শুধু বলেছিলাম, ওসব ছাড়ো তো! আমায় ঘুমোতে দাও।‘