আজ, দিনের শুরুতেই বল হাতে তুলে নেবেন যিনি, তিনি মিচেল স্টার্ক কিংবা প্যাট কামিন্স নন। তাঁর নাম লুঙ্গি এনগিডি। গতকাল লম্বা লম্বা স্পেল করেছেন। আজকেও কি একই ভূমিকায় দেখা যাবে?
মিচেল স্টার্ক
শেষ আপডেট: 13 June 2025 05:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কে বলে টেস্ট ক্রিকেট (Test Cricket) ঘুমপাড়ানি? কে বলে বিরাট কোহলির অবসরের (Virat Kohli Retirement) পর কেউ লাল বলের দ্বৈরথ দেখবে না?
লর্ডসের (Lords’) ময়দানে গত দু’দিন ধরে যে মারকাটারি লড়াই পেশ করলেন প্যাট কামিন্স (Pat Cummins), তেম্বা বাভুমারা (Temba Bavuma), তাতে বোঝাই যাচ্ছে কেন টেস্ট ক্রিকেটকেই বিশেষজ্ঞেরা অগ্নিপরীক্ষা বলে থাকেন। উইকেট পড়ল ২৮ খানা। অস্ট্রেলিয়া (Australia) ২১২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর যখন মনে হচ্ছিল অ্যাডভান্টেজ দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa), ঠিক তখনই কামব্যাক করেন মিচেল স্টার্করা। প্রোটিয়ারা গুটিয়ে যায় ১৩৮ রানে। দুর্ধর্ষ পেস, দুর্দান্ত সুইংয়ের মোকাবিলা করার কোনও উত্তর কারও কাছে ছিল না।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। গতকাল সেকেন্ড ইনিংসে ব্যাট করতে নামা অজিরা ২৫০-৩০০ রান হেসেখেলে তুলবে বলে মনে করছিলেন অনেকেই। কিন্তু ফের একবার প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী থাকে লর্ডস।
কাগিসো রাবাডা অপ্রতিরোধ্য ছিলেন প্রথম ইনিংসে। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি খানিক নিস্তেজ দেখালেও জেগে ওঠেন লুঙ্গি এনগিডি। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট (স্টিভ স্মিথ, ওয়েবস্টার এবং প্যাট কামিন্স) তুলে ক্যাঙারুদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন।
এক সময় মনে হচ্ছিল একশোর গণ্ডীও পেরোতে পারবে না অজিরা। তখন শেষ বেলায় হাল ধরেন অ্যালেক্স ক্যারি (৫০ বলে ৪৩) এবং মিচেল স্টার্ক (৪৭ বলে ১৬)। ক্যারি ফিরে গেলেও স্টার্ক এখনও ক্রিজে। আম্পায়াররা বেল খুলে নেওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে উঠেছে ১৪৪ রান। সবমিলিয়ে ২১৮ রানের লিড।
এই পরিস্থিতিতে আজ ম্যাচের তৃতীয় দিন। সম্ভবত আজই বোঝা যাবে জয়ের অভিমুখ কোন দিকে ঘুরছে। কিন্তু তার আগে হাল ছাড়তে নারাজ দুই পক্ষ। একদিকে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক কামিন্স সাফ জানিয়েছেন, লড়াই এখনও পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। অন্যদিকে অজিদের দুঃস্বপ্ন হয়ে ওঠা এনগিডির দাবি, স্রেফ দুটো ভাল বলের অপেক্ষা। তাতেই সাবার হবে অজিদের ইনিংস!
কামিন্স বলেন, ‘দ্বৈরথ খুব ভাল জায়গায় দাঁড়িয়ে। ড্রেসিংরুমের মুডও বেশ ইতিবাচক। সুন্দর পার্টনারশিপ দিয়ে আমরা দিনের শেষ টেনেছি।‘ পাশাপাশি টেস্ট ম্যাচ হিসেবেও এই লড়াই উত্তেজক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, মেনে নিয়েছেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। তাঁর দাবি, ‘দুদিন বাদে ম্যাচ আপাতত পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। বেশ কিছু ক্রিকেটারকে বেশ স্বচ্ছন্দ দেখিয়েছে। বাকিদের ততটাও নয়। দু’দলের বোলাররাই খুব ভাল, নিয়ম মেনে বল করেছে। খুব একটা হাফ-ভলি সেভাবে দেখা যায়নি।‘
এর পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরকেও প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি ছুড়ে দিয়েছেন কামিন্স। বলেছেন, ‘খেলার প্রবণতা দেখে মনে হচ্ছে রান সেভাবে আসবে না। এই পিচে ব্যাট করা বেশ কঠিন হয়ে উঠছে। তবে আমাদের আগামিকাল (শুক্রবার) ভাল বল করতে হবে।‘
যদিও আজ, দিনের শুরুতেই বল হাতে তুলে নেবেন যিনি, তিনি মিচেল স্টার্ক কিংবা প্যাট কামিন্স নন। তাঁর নাম লুঙ্গি এনগিডি। গতকাল লম্বা লম্বা স্পেল করেছেন। আজকেও কি একই ভূমিকায় দেখা যাবে? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও লড়াইয়ে রয়েছি। ওরা বেশ ভাল বোলিং করেছে। কিন্তু দিনের শেষে আমাদের নিজেদের কাজ করে যেতে হবে। প্রথম ইনিংসে যা কঠিন হয়ে উঠেছিল। কোনও ছন্দ ছিল না। মনে হচ্ছিল, আমরা অহেতুক খেটে মরছি। চায়ের বিরতির পর অধিনায়ক (বাভুমা) আমায় বেশ কিছু দায়িত্ব বেঁধে দেয়। আমি নিজের স্পেল চেয়েছিলাম। তারপর সবকিছু যখন ক্লিক করতে শুরু করল, ছন্দ ফিরে পেলাম।‘
কামিন্সের মতে, লড়াই যে কেউ জিততে পারে। যদিও সেকেন্ড ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ৮ উইকেট তুলে নেওয়ার পর প্রোটিয়াদের মনোবল এখন তুঙ্গে। যা ঝরে পড়ল এনগিডির কথায়। জানিয়ে দিলেন, এগিয়ে তাঁরাই। দরকার স্রেফ দুটো বল। তাতেই কামিন্স বাহিনীকে সাবার করে ফেলা সম্ভব। ২৩০-এর কম টার্গেট চেজ করতে হলে, খুব সহজ না হলেও, তাড়া করে ম্যাচ জেতা অসম্ভব নয়। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন এনগিডি।