মুহূর্তে জ্বলে পরক্ষণে নিভে যেতে আসেননি সমস্তিপুরের (Samastipur) কিশোর। তাই খ্যাতির বিড়ম্বনার পাতা ফাঁদে পড়তে নারাজ বৈভব।
বৈভব সূর্যবংশী
শেষ আপডেট: 21 May 2025 13:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পরীক্ষার আগে সবাই ফোন বন্ধ রাখে। কিন্তু ডিস্টিংশন সমেত পরীক্ষা পাসের পর চারপাশে যখন হইহই কাণ্ড রইরই ব্যাপার, তখন মোবাইল বন্ধ রাখাটা ঠিক দস্তুর নয়!
অবশ্য ছাত্রের নাম যখন বৈভব সূর্যবংশী (Vaibhav Suryavanshi), তখন গড্ডলিকাপ্রবাহের বাইরে বেরিয়ে তিনি যে ‘হটকে’ কাজ করবেন, সেটাই স্বাভাবিক! গুজরাত টাইটানসের (GT) বিরুদ্ধে বিধ্বংসী শতরানের সুবাদে গোটা দেশের নজরে তিনি। তামাম দুনিয়ার ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ তুলনা খুঁজে বেড়াচ্ছে। উড়ে বেড়াচ্ছে কিংবদন্তিদের নাম। কখনও শচিন, কখনও বিরাট, কখনও লারা। দেখার কোণ অনেক, লক্ষ্য একটাই—একজন সম্ভাবনাময় কিশোরকে হঠাৎ করে নায়কের আসনে বসিয়ে দেওয়া!
রাজস্থান রয়্যালস (RR) এ বছর আইপিএলে জঘন্য পারফর্ম করেছে। দশ টিমের টুর্নামেন্টে নবম স্থানে রেস শেষ করেছেন রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) ছেলেরা। কিন্তু অন্ধকার টানেলের শেষে ক্ষীণ আলোর মতো দেখা দিয়েছেন বৈভব। টুর্নামেন্ট থেকে রাজস্থান শিবিরের প্রাপ্তি বলতেই এটুকুই।
কিন্তু মুহূর্তে জ্বলে পরক্ষণে নিভে যেতে আসেননি সমস্তিপুরের (Samastipur) কিশোর। তাই খ্যাতির বিড়ম্বনার পাতা ফাঁদে পড়তে নারাজ বৈভব। রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে সম্প্রতি একটি আলাপচারিতায় অংশ নেন। সেখানে কোচ তাঁকে প্রশ্ন করেন—কেমন ছিল সেই সময়, যখন তিনি গুজরাতের বিরুদ্ধে শতরান করে সারা দেশের চর্চার টপিক হয়ে উঠলেন? কীভাবে সবার নজরে আসার চাপ সামলে টুর্নামেন্ট খেলে গেলেন?
জবাবে প্রত্যাশিতভাবেই ছকভাঙা উত্তর দিলেন বৈভব। বললেন, ‘আমার কাছে পাঁচশোর উপর কল এসেছিল। কিন্তু আমি ফোন বন্ধ রাখি। অনেকেই সেঞ্চুরির পর নানান প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসেন। যদিও সেসব আমার পছন্দ হয়নি। আমি দুই থেকে চার দিন মোবাইল খুলিনি। চারপাশে এত লোকের ভিড় ভাল লাগে না। পরিবার আর হাতেগোনা কাছের বন্ধুদের নিয়েই আমি স্বচ্ছন্দ।‘
অনূর্ধ-উনিশের শিবির ছেড়ে আইপিএলে নামার পর বছর চোদ্দোর বৈভবের উদ্দেশে রাহুলের গুরুমন্ত্র ছিল—মাথা ঠান্ডা রাখবে। সমস্ত বোলার তোমায় টার্গেট করতে চলেছে। রাহুলের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছেন বৈভব। ৭ ম্যাচে ২৫২ রান, দুশোর উপর স্ট্রাইক রেট। বিধ্বংসী শতরানের পাশাপাশি ধৈর্য ধরে সাজানো ইনিংস—ব্যাটসম্যান হিসেবে সংহারক ও স্থিতধী দুটি মূর্তিতেই নিজের জাত চিনিয়েছেন বৈভব। ক্রিকেট অনুরাগীদের আশা, আগামী মরশুমে এর ব্যাপ্তি আরও অনেক প্রসারিত হতে চলেছে।