৮ মে ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতির জেরে যখন ভেস্তে গেল দিল্লি বনাম পাঞ্জাব ম্যাচ (DC vs PBKS), দিল্লি টিমের লজিস্টিকস অ্যান্ড ট্রাভেল অপারেশনসের প্রধান অরবিন্দ সিং নেগির কপালে হাত পড়তে কয়েক সেকেন্ড লেগেছিল।
আইপিএল ২০২৫
শেষ আপডেট: 16 May 2025 17:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১০টি টিম। খেলছে ১৭টি ভেন্যুতে। হাতেগোনা কয়েক দিন বাদ দিলে লাগাতার ম্যাচ—কখনও কখনও দিনে দুটো করে।
টানটান লড়াই। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা। দর্শকদের কেউ উপভোগ করছেন মাঠে বসে, কেউ টিভির সামনে, কেউ মোবাইল হাতে। আইপিএল (IPL) তো নিছক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নয়—মনোরঞ্জনের সমস্ত উপকরণ সমেত বিনোদনের রঙ্গমঞ্চ হয়ে উঠেছে।
কিন্তু কেমন জীবন তাঁদের, যারা এই মঞ্চসজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন? ম্যাচ আয়োজনের কর্তব্য সেরে যেতে হয় ফি-দিন? খেলোয়াড়দের লাগেজ এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া, হোটেলের বন্দোবস্ত—সবকিছু সময়ে সময়ে করে যেতে হয় যাঁদের, তাঁদের জগৎ এই ক’দিনে কীভাবে বদলে যায়?
৮ মে ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতির জেরে যখন ভেস্তে গেল দিল্লি বনাম পাঞ্জাব ম্যাচ (DC vs PBKS), দিল্লি টিমের লজিস্টিকস অ্যান্ড ট্রাভেল অপারেশনসের প্রধান অরবিন্দ সিং নেগির কপালে হাত পড়তে কয়েক সেকেন্ড লেগেছিল। ফ্লাডলাইট বন্ধ হল আর মনের অতলে ভেসে উঠল পুরনো একটি ঘটনার স্মৃতি। ২০২০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়, শুরুর আগে। তখন কোভিড চলছে। বিসিসিআই জানিয়ে দেয়, সিরিজ বাতিল। দেশে ফিরে যাবেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা। সকলকে সেলফ-আইসোলেট অবস্থায় ধর্মশালা থেকে কলকাতা স্পেশ্যাল চ্যাটার্ড ফ্লাইটে আনা হয়। সেখান থেকে নিজেদের দেশে ফিরে যান কুইন্টন ডি-ককরা।
৮ মে এই ধর্মশালাতেই (Dharmashala) ফের একবার ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছে। কিন্তু মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে যখন গুলির লড়াই চলছে, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর আক্রমণ চালাচ্ছে পাক সেনা, প্রত্যাঘাত হানছে ভারতীয় জওয়ানরা, তখন আকাশপথে বিমানযাত্রা সম্ভব ছিল না। তাই ভারতীয় রেলের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে দুই দলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। তার আগে রিসর্টের ব্যবস্থা, জলন্ধর পর্যন্ত সড়কপথে দুই টিমকে নিয়ে যাওয়া—সবকিছু সারতে হয়েছিল যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে।
এতকিছুর ‘মক ড্রিল’ অবশ্য আগেই হয়ে যায় তাঁদের, যারা ম্যাচ আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। অরবিন্দ নেগির কথায়, ‘আইপিএলে আমাদের প্ল্যান এ, বি এবং সি—তিনটেই মাথায় রাখতে হয়। তাই খেলোয়াড়দের মাঠ-ছাড়া করাটা আমাদের পক্ষে খুব কঠিন ছিল না।‘
ক্রিকেটারদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি কঠিন না হলেও ধর্মশালা ভেন্যু হিসেবে সমস্যাসংকুল। নেগি বলেন, ‘মাঠ হিসেবে দর্শকদের কাছে সুন্দর। ধৌলধরের ব্যাকড্রপে ম্যাচ উপভোগ করা অন্য অভিজ্ঞতা। কিন্তু যারা আমাদের কাছে এটা ছুটি উপভোগের জায়গা নয়। কোনও বড়সড় বিমান নামতে পারে না। খুব অল্পসংখ্যক মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। তাই যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টি সবার আগে মাথায় রাখি। ৮ মে যেমন ১০০ জনকে সরাতে হত। কিন্তু ৫০-৫৫ জনকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাই। ফলে প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বিচার করে যাত্রী বাছাই করি।‘
ক্রিকেটারদের লাগেজ কীভাবে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যায়? নেগি জানান, সাধারণত ম্যাচের একদিন আগে মালপত্র নির্ধারিত ভেন্যুতে নিয়ে যাওয়া হয়। খেলোয়াড়দের কিট এয়ারপোর্ট থেকে স্টেডিয়ামে সরাসরি পৌঁছয়। হোটেলে আসামাত্র হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ‘ব্যাগস আউট’ মেসেজ চলে আসে। প্রায় সমস্ত দল কমার্শিয়াল ফ্লাইট পছন্দ করলেও গুজরাতের পছন্দ চার্টার্ড বিমান। জানিয়েছেন নেগি।