তবে হেলেনার জীবনে প্রথম পুরুষ মিঠুন ছিলেন না। কানাঘুষো শোনা যেত, বলি অভিনেতা জাভেদ খানের সঙ্গে কলেজজীবন থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল হেলেনার।
গ্রাফিক্স - দিব্যেন্দু দাস
শেষ আপডেট: 16 June 2025 15:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মিঠুন চক্রবর্তীর প্রথম স্ত্রী আড়ালেই রয়ে গেলেন চিরকাল। উত্তাল প্রেম নিভেছিল চার মাসের বিয়েতে। মিঠুন চক্রবর্তীর প্রথম স্ত্রীর নাম হেলেনা লিউক। তিনি গত বছর প্রয়াত হলেন একদম আড়ালে।
মিঠুন তখন স্ট্রাগলের একদম শুরুতে। সেইসময় হেলেনার সঙ্গে বিয়ে হয় মিঠুনের। হেলেনাও ফিল্ম লাইনে যুক্ত ছিলেন। আটের দশকে হিন্দি ফিল্মজগতের একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন হেলেনা। তবে পেশাগত জীবন তেমন সফল ছিল না এই অনামী অভিনেত্রীর।
হেলেনার বাবা ছিলেন তুরস্কের বাসিন্দা। তাঁর মা ছিলেন অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান খ্রিস্টান। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল হেলেনার। বড় পর্দায় অভিনয়ের আগে টানা ন’বছর গুজরাতি নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সত্তরের দশকের শেষ দিকে বলিউডে নিজের জায়গা করে নিতে চেয়েছিলেন মডেল-অভিনেত্রী হেলেনা। ১৯৮০ সালে ‘জুদাই’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। জিতেন্দ্র এবং রেখা অভিনীত এই হিট ছবিতে হেলেনার উপস্থিতি তেমন নজর কাড়তে পারেনি। অথচ তাঁর ফিল্মে নাম হল না। মিঠুনের সঙ্গে ভুল বিয়েই কী কাল হল তাঁর?
তবে হেলেনার জীবনে প্রথম পুরুষ মিঠুন ছিলেন না। কানাঘুষো শোনা যেত, বলি অভিনেতা জাভেদ খানের সঙ্গে কলেজজীবন থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল হেলেনার। চার বছর প্রেমপর্ব চলার পরে হঠাৎই বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। এই বিচ্ছেদের পরমুহূর্তেই নাকি হেলেনার সঙ্গে মিঠুনের আলাপ হয়।
এদিকে মিঠুনের জীবনে কলকাতা, পুণে, বম্বে মিলিয়ে ছিল একাধিক নারীসঙ্গ। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, হেলেনার সঙ্গে পরিচয়ের আগে মিঠুনের সম্পর্ক ছিল অভিনেত্রী সারিকার সঙ্গে। কিন্তু সেই প্রেমে ধাক্কা খেয়ে নাকি একাকিত্ববোধে ভুগতে শুরু করেছিলেন মিঠুন। তখনই হেলেনার সঙ্গে অভিনেতার পরিচয়, প্রেম এবং পরিণয়। এই সারিকা সে সময় কমল হাসানকে বিয়ে করে নেন।
১৯৭৯ সালে মিঠুন বিয়ে করেছিলেন হেলেনাকে। মাত্র চার মাস সংসারের পর সেই সম্পর্কে ইতি টানেন দু’জনেই। একই বছর অভিনেত্রী যোগিতা বালীকে বিয়ে করেছিলেন মিঠুন।
হেলেনাকে ১৯৮৮ সালের ‘এক নয়া রিস্তা’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। সেই ছবিতেও হেলেনা নজর কাড়তে পারেননি। পরে অভিনয় ছেড়ে নিউ ইয়র্কে চলে গিয়েছিলেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে মিঠুনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে হেলেনা বলেছিলেন, ‘‘মিঠুনকে বিয়ে করেছিলাম বলে আমি আফসোস করি। ও অভিনেতা হিসাবে যতই সফল হোক না কেন, আমি আর কোনও দিন ওর সঙ্গে থাকতে চাইব না। একাধিক নারীসঙ্গ ছিল ওর। ওই চার মাস আমার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। ওই সময়টুকু আমার জীবন থেকে মুছে গেলেই ভাল হত। মিঠুন আমায় বুঝিয়েছিল যে, আমরা একে অপরের জন্যই তৈরি। আমিও সেই ফাঁদে পা ফেলেছিলাম। চার মাসের যন্ত্রণার পাহাড় চার দশকেও ভুলতে পারিনি।’
হেলেনার মৃত্যুতে চোখের জল হয়তো ফেলেছিলেন মিঠুন। তবে হেলেনার কবরে ফুল রাখতে আর যাননি মিঠুন।