দ্য ওয়াল ব্যুরো : কিছুদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করছিলেন, দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে নোটিস ধরাচ্ছে আয়কর দফতর। তিনি দাবি করেছিলেন করমুক্ত পুজো। এই করকে তিনি নাম দিয়েছিলেন ‘পুজো জিজিয়া কর’। মঙ্গলবারই প্রত্যক্ষ কর দফতরের তরফে সুরভি আলুওয়ালিয়া বিবৃতি দিয়ে বলেন, পুজো কমিটিগুলিকে এবছর নোটিস ধরানো হয়নি। এদিনই তার পালটা বিবৃতি দিলেন মমতাও। তাঁর বক্তব্য, প্রেস রিলিজে প্রত্যক্ষ কর দফতর এমন কিছু কথা বলেছে, যা থেকে প্রমাণ হয়, তারা মিথ্যা বলছে।
সুরভি আলুওয়ালিয়া বলেছিলেন, কোনও দুর্গাপুজো কমিটিকে বিপদে ফেলা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। ঠিকাদার ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলি যে কর ফাঁকি দিচ্ছে, তা আটকানোই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল।
মমতা ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, আয়কর দফতর গত বছর পুজো কমিটিগুলিকে নোটিস দিয়ে বলেছিল, ঢাকি, পুরোহিত, গ্রামের যে ছোট কারিগররা প্যান্ডেল তৈরি করেন, তাঁদের থেকে টিডিএসের মাধ্যমে কর নিতে হবে। টিডিএস-কে মমতা বলেছেন, ‘টেরিবল ডিজাস্টার স্কিম’। তিনি বলেন, এতে তাঁদের ওপরে বিরাট বোঝা চাপবে।
প্রত্যক্ষ কর দফতর বলেছে, এবছর কোনও পুজো কমিটিকে নোটিস পাঠানো হয়নি। সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতা বলেছেন, একথার কোনও মানে হয় না। এবছর যে পুজো হবে, তার জন্য পরের বছর নোটিস পাঠানো হবে। প্রত্যক্ষ কর দফতরের নোটিসেই প্রমাণ হয়, কর বসানো হয়েছে। তাহলে আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে কেন? পরে মমতা আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, প্রত্যক্ষ কর দফতরের প্রেস বিবৃতিতে তথ্যের বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। স্থানীয় মানুষ ও পুজো কমিটির মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই তার উদ্দেশ্য।
মমতা পুজো কমিটির ওপরে কর বসানোর তীব্র সমালোচনা করে লিখেছেন, আমাদের সংস্কৃতি এবং আমাদের দুর্গাপুজোর ওপরে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। জেনে বা না জেনে যে কাজ করা হচ্ছে, তাতে কুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়। বিশেষত সব ধর্মের লোকই আমাদের দুর্গাপুজোয় অংশ নেন। তা একরকম জাতীয় উৎসবের মতো। এই ধরনের কর অবিলম্বে তুলে নেওয়া উচিত।
দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে কোনও নোটিস ধরানো হয়নি, মিথ্যা রটানো হচ্ছে: আয়কর দফতর
শেষে মুখ্যমন্ত্রী ফের জিজিয়া কর কথাটি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, আমি বিনীতভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই, কোনও পুজো কমিটি অথবা উৎসবের ওপরেই যেন ‘জিজিয়া’ কর না বসানো হয়।