প্রতীকী ছবি
শেষ আপডেট: 9th February 2025 18:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ডের তরফে (SEBI) শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ পরামর্শ দেওয়ার নাম করে, বিনা-অনুমোদনে কাজ করার অভিযোগে অস্মিতা প্যাটেল-সহ ৬ প্রতিষ্ঠানকে বাজার থেকে নিষিদ্ধ করল খোদ সেবি।
জানা গেছে, নির্দেশে বলা হয়েছে, অস্মিতা প্যাটেল গ্লোবাল স্কুল অফ ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড (APGSOT) ও তার সঙ্গে জড়িত একাধিক প্রতিষ্ঠান, যেমন জিতেশ জেঠালাল প্যাটেল, কিং ট্রেডার্স, জেমিনি এন্টারপ্রাইজ ও ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ— এগুলি থেকে মোট ৫৩ কোটি টাকা বিনিয়োগকারীদের ফিরিয়ে দিতে হবে। এই অর্থ তাঁদের বিভিন্ন ট্রেডিং কোর্সের ফি হিসেবে নেওয়া হয়েছিল।
সেবি তাদের ১২৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ৪২ জন বিনিয়োগকারী অভিযোগ জানিয়েছিলেন এই অনুমোদনহীন বিনিয়োগ পরামর্শ পরিষেবার বিষয়ে। অভিযোগকারীরা আরও দাবি করেন, অস্মিতা প্যাটেল তাঁর নিজস্ব ট্রেডিং পদ্ধতির মাধ্যমে ১৪০ কোটি টাকা লাভও করেছেন।
কিন্তু সেবির দাবি, বেসরকারি ভাবে শেয়ার বাজার সংক্রান্ত বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়ে যে টাকা অস্মিতা আয় করেছেন, তা অবৈধ। সেই কারণেই নেমে এসেছে শাস্তির কোপ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে এই অস্মিতা প্যাটেল? অস্মিতা প্যাটেল গ্লোবাল স্কুল অফ ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক এই মহিলার প্রধান কার্যালয় নবি মুম্বাই। তাঁর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, তিনি গুজরাতের এক ঐতিহ্যবাহী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ট্রেডিং জগতে ১৭ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। শেয়ার কেনাবেচা শুরু করেন অল্প বয়স থেকেই। যদিও সেই নিয়ে কোনও প্রথাগত পড়াশোনা তাঁর ছিল না। তবে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি ফিনান্সিয়াল এডুকেশনে কাজ করছেন এবং একাধিক পুরস্কারও জিতেছেন।
এই সমস্ত বিষয় প্রোফাইলে যোগ করে নিজেকে তিনি শেয়ার বাজারের 'শি-উলফ' অর্থাৎ নেকড়ে বাঘ বলে পরিচিত করে তুলেছেন। তাঁকে অনেকে 'অপশন কুইন'ও বলে, কারণ কোন অপশনে বিনিয়োগ করলে কতটা লাভ, তার শেষ কথা নাকি তিনিই। এমনটা তিনি নিজেই বলে থাকেন। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, তাঁর অধীনে বিশ্বজুড়ে এক লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী ট্রেডিং শিখেছে।
শুধু নিজের ওয়েবসাইটে এসব কথা নয়, অস্মিতা প্যাটেল সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপক জনপ্রিয়। তাঁর ইউটিউবে ৫.২৬ লাখ সাবস্ক্রাইবার রয়েছেন, ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার ২.৯।
কেবল অস্মিতা নয়, সেবি জানিয়েছে, অস্মিতার স্বামী জিতেশ প্যাটেলও তাঁর সংস্থার পরিচালক। অভিযোগ অনুযায়ী, কোর্সে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের তিনটি পৃথক কোম্পানির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফি জমা দিতে বলা হয়েছিল। এই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো কিং ট্রেডার্স, জেমিনি এন্টারপ্রাইজ এবং ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ।
সেগুলিও ব্যান করেছে সেবি। সব মিলিয়ে শেয়ার বাজারের 'নেকড়ে' অস্মিতা প্যাটেল এখন কোণঠাসা। তাঁর কোম্পানির ভাবমূর্তিও বেশ আহত। এখন বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ কতটা প্রমাণিত হবে, তা তদন্তেই স্পষ্ট হবে।