শেষ আপডেট: 7th January 2025 10:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রোজগারের অর্থ কি শুধুই খাওয়া-পরা? বোধহয় নয়, রোজগার যেমন বর্তমানে ভাল থাকার জন্য, তেমনই ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত রাখার জন্যও আমরা রোজগার করি। যাতে আমাদের সন্তান সুখে-সমৃদ্ধিতে থাকে। তাই প্রতিটি মানুষই তার এক-একটি কষ্টার্জিত অর্থ সঞ্চয় করে তার সন্তানের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করে তুলতে। তবে সেই সঞ্চয়ের পথটি বেছে নেওয়া চাই অত্যন্ত সুচিন্তিত উপায়ে। আপনার পোঁতা প্রতিটি টাকা যেমন একদিন বিশাল ঝাঁকড়া গাছ হয়ে উঠতে পারে। তেমনই সঠিক পদক্ষেপের অভাবে বিগড়ে যেতে পারে আপনার সমস্ত পুঁজি।
এর জন্য সহজতম রাস্তাটি হচ্ছে সিসটেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান অথবা সিপ (SIP)। প্রতিমাসে সামান্য কিছু অর্থ সিপে বিনিয়োগ করলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে তার সুফল এখন অনেকেরই কমবেশি জানা। খুব সহজ উপায়ে সিপ ফর্মুলায় আপনার সন্তান বড় হয়ে কোটিপতি হয়ে উঠতে পারে। এই সিপের সবথেকে সহজ পথ হল ৫x১২x৪০। অর্থাৎ ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ অঙ্কের পুঁজি গঠনের ফর্মুলা। প্রতিমাসে ৫০০০ টাকা করে আপনার সন্তানের নামে জমান। তারপর দেখুন কীভাবে তা টাকার গাছ হয়ে ছায়া দেবে আপনার সন্তানকে।
শেয়ার বাজার বা মিউচুয়াল ফান্ড বাজারের ঝুঁকিসাপেক্ষ বলে অনেকেই তাঁর ঘাম ঝরানো টাকা বিনিয়োগে ভয় পান। কিন্তু সিপ হল অত্যন্ত সহজ এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ সঞ্চয়ের উপায়। বছরের প্রতি মাসে, প্রতি তিন মাস অন্তর বা বছরে একবার এতে বিনিয়োগ করা যায়। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা করে যেতে হয়। ফলে, খুব সামান্য পুঁজিও সময়ের হাত ধরে বৃহৎ পুঁজিতে পরিণত হয়।
সিপের সুবিধা হল এটা বিনিয়োগের বা সঞ্চয়ের একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ উপায়। আপনারা যেরকম আয়, সেভাবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমা হতে থাকে প্রতি বছর। ক্ষুদ্র বিনিয়োগে বৃহৎ সঞ্চয় গড়ে ওঠে এই পদ্ধতিতে। যেমন ন্যূনতম ৫০০ টাকা থেকেও সঞ্চয় করা যায় সিপে। তবে এক্ষেত্রে সামান্যতম হলেও বাজারের ঝুঁকি থাকে, কারণ টাকার মূল্যায়নের ওঠাপড়ার সঙ্গে এটা নিয়ন্ত্রিত হয়। সিপে সবরকম সুবিধা আছে। যেমন আপনি পুঁজির পরিমাণ বাড়াতে, কমাতে কিংবা বন্ধও করতে পারেন।
কীভাবে কাজ করে SIP? আপনাকে প্রথমে একটি মিউচুয়াল ফান্ড বাছাই করতে হবে। খুব সতর্কভাবে বাজারের অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের পরামর্শ নিতে পারেন। কিংবা নিজে গভীরভাবে পড়াশোনা ও খোঁজখবর নিয়ে এই নির্বাচন করতে হবে। এরপর সেই স্কিমে আপনি কত পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারবেন তা আপনার সাংসারিক খরচের উপর নির্ভর করে স্থির করবেন। প্রতিমাসের নির্দিষ্ট তারিখে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা কেটে মিউচুয়াল ফান্ডে চলে যাবে।
ওই টাকা দিয়ে সেই দিনের নেট অ্যাসেট ভ্যালু (NAV) অনুযায়ী ইউনিট খরিদ করা হয়। যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ফেরতের পরিমাণ নির্ধারিত হয় সেই ফান্ডের বাজারদর অনুযায়ী। এখানেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে ৫x১২x৪০ ফর্মুলা আসলে কী? এর মানে হল, আপনার সন্তানের বয়স যখন ৫ বছর। তখন আপনি যদি প্রতিমাসে ৫০০০ টাকা করে তার নামে জমাতে শুরু করেন, তাহলে ৪০ বছর পর এই বিনিয়োগ ১২ শতাংশ হারে প্রতিবছর আপনাকে ফেরতলাভ দেবে। এবং আপনার ছেলে বা মেয়ে মেয়াদ শেষে ৬ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে।