শেষ আপডেট: 11th March 2025 10:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিন-মার্কিন শুল্কনীতির ঝগড়ায় আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারে পাহাড় প্রমাণ ধস নেমেছে। যার জেরে বিশ্ব জুড়ে ফের নতুন করে আর্থিক মন্দার অশনি সঙ্কেত দেখা দিয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের ঘোষণা সেদেশের শেয়ার বাজার থেকে প্রায় ৪ লক্ষ কোটি ডলার উধাও হয়ে গিয়েছে। এমনকী ট্রাম্পের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু টেসলা মালিক ইলন মাস্কের পকেট থেকেও বিশাল পরিমাণের ডলার খসে গিয়েছে। চার বছরের মধ্যে সবথেকে খারাপ বাজার শুরু হয়েছে সোমবার। আনুমানিক ১৫ শতাংশ মন্দায় চলছে তাঁর শেয়ার।
ওয়াল স্ট্রিটের সার্বিক পতনের ফলাফলেই টেসলার শেয়ারে পতন নেমেছে। যদিও টেসলা মালিক মাস্ক এখনও অটুট রয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের তিনি আশ্বস্ত করে বলেছেন, কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন এখনও মজবুত রয়েছে। তিনি বলেন, অপেক্ষা করুন, সবুরে মেওয়া ফলবেই। আর্থিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ট্রাম্পের ঘোষিত কিছু নীতির ফলেই বাজারে এক বিশাল অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে অনেক বিনিয়োগকারীই ফের বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দার উৎকণ্ঠায় ভুগছেন।
এই আবহে পড়ছে শেয়ার বাজার। এর জেরে বিগত কয়েকদিনে মার্কিন শেয়ার বাজার থেকে হাওয়া হয়েছে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। পার্শ্বফল হিসেবে ভারতীয় শেয়ার বাজারেও প্রভাব পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার এমনিতেই রেড লাইনে শেষ হয়েছিল সেনসেক্সের যাত্রা। আর মঙ্গলবার সকালে সেনসেক্স প্রায় ২০০ পয়েন্ট পড়েছে। একটা সময় যেখানে সেনসেক্স ৮৬ হাজার পয়েন্ট ছুঁই ছুঁই ছিল, সেই সূচক আজ ৭৩ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। মূলত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এদিন সকালে সেনসেক্সের সূচক ২০০ পয়েন্ট কমে যায়। অন্যদিকে, নিফটি ২২,৪০০-র নীচে চলে গিয়েছিল। ইন্দানইন্ড ব্যাঙ্কের রক্তক্ষরণ সবথেকে বেশি হয়েছে। তাদের শেয়ার দর প্রায় ২০ শতাংশ পড়ে গিয়েছে ও ইনফোসিসের ৪ শতাংশ দর পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কায় আমেরিকা থেকে জাপান পর্যন্ত শেয়ারবাজারে কোটি কোটি ডলার উধাও হয়ে গিয়েছে। আমেরিকার ওয়াল স্ট্রিটের প্রভাব ভারতের দালাল স্ট্রিটেও দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে সোমবার ওয়াল স্ট্রিটের সূচকে বড় ধরনের পতন দেখা যায়। এর জেরে জাপান, হংকংয়ের মতো এশিয়ান শেয়ার বাজারেও পতন দেখা যায়। জাপানের নিক্কেই ২২৫ পয়েন্ট বা ২.৭ শতাংশ কমেছে এবং টপিক্স সূচক কমেছে ২.৮ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি ২.১৯ শতাংশ এবং কোডেক ২.২২ শতাংশ কমেছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং ইনডেক্স ফিউচারস দুর্বল সূচনার ইঙ্গিত দেয়।
এদিকে আমেরিকায় ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ৮৯০.০১ পয়েন্ট বা ২.০৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪১,৯১১.৭১ পয়েন্টে, অন্যদিকে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ পড়েছে ১৫৫.৬৪ পয়েন্ট বা ২.৭০ শতাংশ। এই আবহে এসঅ্যান্ডপি দাঁড়িয়ে আছে ৫৬১৪.৫৬ পয়েন্টে। নাসডাক কম্পোজিট ৭২৭.৯০ পয়েন্ট বা ৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭,৪৬৮.৩২ পয়েন্টে। টেসলার শেয়ারের দাম কমেছে ১৫.৪ শতাংশ, এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম কমেছে ৫.০৭ শতাংশ, মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম কমেছে ৩.৩৪ শতাংশ। ডেল্টা এয়ার লাইনের স্টকের দাম ৫.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে নাসডাকের সবচেয়ে খারাপ দিন ছিল সপ্তাহের শুরুতেই।