সব ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক।
শেষ আপডেট: 6th December 2024 07:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলা হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে সরব হয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত-সহ সারা বিশ্ব। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় সব ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, ঘরে বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই এই বৈঠক। আসলে বৈঠকের নামে বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিদের হাজির করিয়ে বাংলাদেশে ঐক্যের ছবি তুলে ধরার মরিয়া চেষ্টাও করা হল।
সূত্রের খবর, এদিনৈর বৈঠকে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ-সহ বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ইউনুস বলেন, "বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে। ভিন্ন মতামত থাকলেও মনে রাখতে হবে আমরা কেউ কারও শত্রু নই। তাই সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে থাকলে তা এখনই বন্ধ করতে হবে।" বৈঠকে তিনি এও বলেন, "কোথাও কোনও ঘটনা ঘটে গেলে আগে সে সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য পেতে হবে। সেই অনুযায়ী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ করতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, ছাত্রদের কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও শান্তি ফেরেনি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
সংখ্যালঘুদের অধিকারের দাবিতে কথা বলতেন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। সম্প্রতি একাধিক মঞ্চ থেকে ইউনুস সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চারও হয়েছিলেন তিনি। এরপরই গত ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ। তারপর থেকেই হিন্দু নির্যাতনের সংখ্যাও বেড়েছে বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে ইউনুসকে বৃহস্পতিবারই চিঠি দিয়েছেন ভারতের বিশিষ্ট মুসলিমরা। সেই তালিকায় রয়েছেন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি, দিল্লির সাবেক উপরাজ্যপাল নাজিব জং, প্রাক্তন সাংসদ ও নইদুনিয়া কাজের সম্পাদক শাহিদ সিদ্দিকি, দেশের অবসরপ্রাপ্ত উপ সেনাপ্রধান লেফট্যান্যান্ট জেনারেল জামির উদ্দিন শাহ এবং শিল্পপতি শাহিদ মুস্তাফা শেরওয়ানি।
বৃহস্পতিবার ইউনুসকে লেখা চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নিপীড়ন, নির্যাতনের ঘটনায় মুসলিম হিসাবে আমরা লজ্জিত ও ব্রিবত বোধ করছি। ইসলাম কখনও এই ধরনের হিংসা অনুমোদন করে না। ইসলাম বরং সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথাই শেখায়।
তারপরই সামনে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বদল বৈঠকের ছবিটা। তবে তাতে শান্তি ফিরবে কিনা, তার জবাব মিলবে সময়েই।