শেষ আপডেট: 13th August 2024 19:18
মুজিব হত্যা দিবসে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে
কি বাংলাদেশ? আপত্তি তুলেছে ৩৪ ছাত্র সংগঠন
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগামী বৃহস্পতিবার শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯ তম মৃত্যু বার্ষিকী। বাংলাদেশ এতদিন দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসাবে পালন করত। গোটা অগাস্টকেই শোকের মাস ঘোষণা করেছিল শেখ হাসিনার সরকার। তাঁর সরকারের পতনের পর থেকে মুখে মুখে প্রশ্ন ঘুরছে, এবার ১৫ অগাস্ট রাষ্ট্রীয় শোক দিবস হিসাবে পালন করা হবে?
সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি-সহ একাধিক দল পরামর্শ দেয় দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসাবে পালনের প্রয়োজন নেই। ওই দিনের সরকারি ছুটিও বাতিল করা হোক।
যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই মনে করছেন, মুজিবের মৃত্যুদিনটি এবার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে পালনের সম্ভাবনা কম। ইউনুসের শপথ অনুষ্ঠানে জাতির পিতা মুজিবুরের নাম উচ্চারিত হয়নি। রাষ্ট্রপতি ভবনের শপথ অনুষ্ঠান কক্ষে ছিল না মুজিবের প্রতিকৃতিও।
ঢাকায় ৩৪টি ছাত্র সংগঠন এক বৈঠকে দিনটি পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সভায় অংশ নেন। ছাত্রলীগ ও ছাত্রসমাজের কোনো প্রতিনিধি সভায় ছিলেন না। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নও ওই সভায় অংশ নেয়নি বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন না করার সিদ্ধান্তে তাদের সায় নেই।
এদিকে, ১৫ অগাস্ট বরাবরের মতো দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লিগ। হাসিনা-সহ প্রথমসারির বহু নেতা দেশের বাইরে থাকায় দলটির ছন্নছাড়া অবস্থা। তারমধ্যেই ঢাকায় দলের সদর কার্যালয় থেকে জেলাগুলিতে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, ১৫ অগাস্ট দলীয় দফতরে জাতির পিতা তথা দলের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবের ৪৯তম মৃত্যুদিনটি মর্যাদার সঙ্গে পালন করতে।
ঢাকায় ওই দিন ৩২ নম্বর ধানমণ্ডির বাড়িতে শ্রদ্ধা জানাতে কয়েক হাজার লোকের জমায়েতের পরিকল্পনাও করা হয়েছে। হাসিনা দেশ ছাড়ার পর উন্মত্ত জনতা বাড়িটিতে আগুন দিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ ওই বাড়িতেই মুজিব স্মরণের আয়োজন করতে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়েছে আওয়ামী লিগ। সরকার এখনও এই ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি।
১৯৭৫-এর ১৫ অগাস্ট ধানমণ্ডির ওই বাড়িতেই বিক্ষুব্ধ সেনাদের হাতে সপরিবারে নিহত হন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান। বিদেশে থাকায় বেঁচে যান দুই মেয়ে হাসিনা ও রেহানা। হাসিনা সরকার গঠন করার পর বাড়িটি সরকারের হাতে তুলে দিয়ে সেটি মুজিব সংগ্রহালয় ঘোষণা করেন। ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন এবং সরকারি ছুটিও ঘোষণা করে তাঁর সরকার।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি-সহ একাধিক দল আওয়ামী লিগকে অনুমতি না দিতে অনুরোধ করে। তাদের বক্তব্য, আওয়ালী লিগ লোক জড়ো করে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। আসলে মুজিব হত্যার দিনটিকে সামনে রেখে আওয়ামী লিগ ঘুরে দাড়াক বাকিরা চাইছে না।