শেষ আপডেট: 24th May 2024 12:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার খুনে রহস্যে ঘেরা এক নারী শিলাস্তি রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। তদন্তকারীরা বলছেন, শিলাস্তিকে হানিট্র্যাপ হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। খুনের পর মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহর সঙ্গে তিনি গত ১৫ মে দেশে ফেরেন। ওই তরুণীকে এরই মধ্যে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
কে এই শিলাস্তি রহমান? ঢাকার সংবাদমাধ্যমগুলির সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলাস্তি রহমান চেয়েছিলেন মডেল হতে। কিন্তু পুরনো ঢাকার এই তরুণী বিত্তশালী আক্তারুজ্জামান শাহিনের খপ্পরে চলে যান অন্ধকার জগতে। মার্কিন পাসপোর্টধারী শাহিন দেশে এলেই ঘুরে বেড়াতেন তাঁর সঙ্গে। বিভিন্ন পার্টিতে অংশ নিতেন শাহিনের ফ্ল্যাটে।
কলকাতায় এমপি আনার খুন হওয়ার পর মাস্টারমাইন্ড শাহিনের বান্ধবী হিসেবে নাম আসে এই শিলাস্তি রহমানের, যার আরেক নাম সেলে নিস্কি। তিনি এখন রয়েছেন গোয়েন্দা জালে। ডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, শিলাস্তি রহমান এমপি আনার খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিনের বান্ধবী। গত ১৩ মে তিনি আমানুল্লাহ ও এমপি আনারের সঙ্গে ফ্ল্যাটে ঢোকেন। শাহিন এমপি আনারকে কলকাতায় আনতে এই নারীকেই ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। কারণ, সব পরিকল্পনা করে শাহিন ১০ মে দেশে ফিরে এলেও শিলাস্তি থেকে যান কলকাতায়। তিনি ১৫ মে বিমানে দেশে ফেরেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় শিলাস্তি তিনতলা ফ্ল্যাটের একটি তলায় অবস্থান করছিলেন। তবে সামনে ছিলেন না। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর তিনি নীচে নেমে আসেন। এরপর মরদেহ লোপাট করার কাজে সহায়তা করেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ১৩ মে কলকাতায় এমপি আনারকে খুন করার পর ১৫ মে ঢাকায় চলে আসেন মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহ ওরফে শিমূল ভুঁইয়া। তার সঙ্গে একই বিমানে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফেরেন শিলাস্তি। বিমানবন্দর থেকে চলে যান বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় শাহিনের অভিজাত ফ্ল্যাটে। এমপিকে খুন করে সফল হওয়ায় ওই রাতেই শাহিন সেখানে ফূর্তি পার্টির আয়োজন করে। সেখানে মনোরঞ্জন করেন এই শিলাস্তি ওরফে সেলে নিস্কি। এর আগে ৩০ এপ্রিল শাহিনের সঙ্গে গিয়েছিলেন কলকাতায়। ১০ মে শাহিন দেশে ফিরলেও শিলাস্তিকে রাখা হয় কলকাতাতেই।
সূত্র জানায়, খুনের পর ওই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে শিলাস্তি কলকাতার বিমানবন্দরের কাছে একটি হোটেলে অবস্থান করেন। একদিন সেখানে অবস্থান করে ১৫ মে বিমানে আমানুল্লাহ ওরফে শিমূলের সঙ্গে ঢাকায় ফেরেন। ঢাকায় আসার পর শাহিনের ফ্ল্যাটে অবস্থান করেন। ১৬ মে তার সন্ধান পায় ঢাকার গোয়েন্দা বিভাগ।
ডিবি পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, শিলাস্তিকে হয়তো আজকালের মধ্যেই আদালতে হাজির করে হেফাজতে নেওয়া হতে পারে। কারণ, এদিনটা শুক্রবার, বাংলাদেশে ছুটির দিন। তাছাড়া তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে মামলার সাক্ষীও হতে পারেন।
আজিমকে খুনের প্রায় দু’মাস আগে অভিযুক্তেরা জিহাদকে মুম্বই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় আনওয়ারুলকে খুনের কথা স্বীকার করেছে জিহাদ। ধৃত বলেছে, আক্তারুজ্জামানের নির্দেশেই জিহাদ সব কাজ করেছিল। জিহাদ ছাড়াও আরও চার জন বাংলাদেশি নাগরিক এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছিল।