শেষ আপডেট: 17th September 2024 18:27
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে থাকার আইনি মেয়াদ আগামী শুক্রবার শেষ হয়ে যাবে। ওই দিন তাঁর ডিপ্লোমেটিক ভিসার মেয়াদ শেষ হবে। ওই ভিসায় ভারতে ৪৫ দিন থাকা যায়। হাসিনা ভারতে এসেছেন গত ৫ অগাস্ট।
কূটনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে, শুক্রবারের পর ভারতে হাসিনার আইনি স্টেটাস কী হবে। মনে করা হচ্ছে, দলাই লামার মতো বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকেও ভারত পাকাপাকিভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে চলছে। অর্থাৎ হাসিনা যতদিন চাইবেন, ভারতের অতিথি হয়ে থাকবেন।
এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন মঙ্গলবার ঢাকায় বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে কোন স্টেটাসে ভারত আশ্রয় দিয়েছে সে ব্যাপারে তাঁরা অবহিত নন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার এই ব্যাপারে ভারত সরকারের কাছে কিছু জানতেও চায়নি। চাইবে কিনা সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হাসিনার ডিপ্লোমেটিক ভিসার মেয়াদ শুক্রবার শেষ হয়ে যাবে। তারপর কীভাবে ভারতে থাকবেন হাসিনা? জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, সব কিছু আইন দিয়ে চলে না। ভারত সরকার মনে করলে যতদিন ইচ্ছা কাউকে আশ্রয় দিতে পারে।
কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক-প্রশাসনিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার হঠাৎ করেই হাসিনা সম্পর্কে নীরব থাকার কৌশল কেন নিয়েছে। গত সপ্তাহে হাসিনার একটি ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়ে। তাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, 'আমি এখনও বাংলাদেশের সংবিধান সম্মত প্রধানমন্ত্রী। আমি দেশ ছেড়েছি বিশেষ পরিস্থিতিতে। আমি পদত্যাগ করিনি।'
হাসিনাকে আরও বলতে শোনা যায়, 'আমি আমাদের দেশের কাছাকাছিই আছি। যাতে যে কোনও সময় দেশে ঢুকে পড়তে পারি।' হাসিনার ওই ফোনালাপ নিয়েও অন্তর্বর্তী সরকার টুঁ শব্দটি করেনি।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য, বিএনপি এবং বাংলাদেশের কতিপয় মৌলবাদী সংগঠন হাসিনাকে দেশে ফেরানো নিয়ে সরব হলেও সরকার নীরব থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার জানে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে একশো শতাংশ নিশ্চিয়তা না পেলে হাসিনাকে ফেরাবে না ভারত সরকার।
অন্যদিকে, হাসিনা দেশে ফেরার পর তাঁকে জেলে পাঠালেও আওয়ামী লিগের পুনরুজ্জীবন হবে। বিএনপি মুখে চিৎকার চেচামেচি করলেও তারাও চায় না জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হাসিনা দেশে ফিরুন। তারা দ্রুত নির্বাচন চাইছে দেশে। তারাও মানে হাসিনা দেশে ফিরলে তড়িঘড়ি তাঁর বিচার করে সাজা দেওয়ার সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি তা অনুমোদন করবে না। উল্টে আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে, ইউনুস আভাস দিয়েছেন তিনি পুরো সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে আগ্রহী। তিনিও চান না, সংস্কার শেষ না হওয়া পর্যন্ত হাসিনাকে দেশে ফেরাতে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার নীরবতার সেটাই অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ভারতীয় কূটনীতিকেরাও।