শেষ আপডেট: 18th January 2025 18:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগামী সোমবার দ্বিতীয়বারের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে তিন সিনিয়র কুটনীতিককে। তাঁদের মধ্যে আছেন বিদায়ী ডেমোক্র্যাট সরকারের অত্যন্ত পছন্দের কূটনীতিক মার্শা বার্নিকাট। বাকি দুই কূটনীতিক হলেন, ডেরেক হোগান ও আলেইনা তেপলিৎজ।
এঁদের মধ্যে মার্শা বার্নিকাটকে নিয়ে বাংলাদেশে আলোচনা শুরু হয়েছে। সে দেশে শেখ হাসিনা বিরোধী মার্কিন তৎপরতার পিছনে এই কূটনীতিকের বিশেষ ভূমিকা ছিল বলে কূটনৈতিক মহলের খবর। ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ছিলেন। সেই সময় মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের বিরোধের শুরু হয়। অনেকে মনে করেন, মার্শাকে দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইতেন হিলারি।
ঘটনাচক্রে সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও তাঁর স্ত্রী হিলারির সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। আওয়ামী লিগ তখন থেকেই অভিযোগ করে আসছিল ইউনুসের মদতে মার্কিন প্রশাসন বিশেষ করে হিলারি ক্লিনটন হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সংঘাতের রাস্তা নিয়েছে।
প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও মার্শাকে সরে যেতে বলার খবরে খুশি আওয়ামী লিগ। তারা বহু বছর ধরে বলে আসছে, গোটা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রক নয়, সেখানকার কতিপয় কূটনীতিক হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। তাঁদের পিছনে ছিলেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব হিলারি। বাইডেন প্রশাসনেও তিনি প্রভাব খাটিয়েছেন হাসিনার উপর ব্যক্তিগত রাগ থেকে। আওয়ামী লিগ নেত্রীর প্রতি রাগের কারণ, তাঁর বহু অনুরোধ হাসিনা খারিজ করে দিয়েছেন। তারমধ্যে অন্যতম হল, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামির নেতাদের ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ রদ না করা। আদালতের রায়ে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না বলে হিলারিকে বলেছিলেন হাসিনা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রকে দু ধরনের কূটনীতিক আছেন। একদল স্থায়ী সরকারি আমলা। আর একদল ক্ষমতাসীন সরকারের নিয়োগ পাওয়া। দ্বিতীয় পক্ষের কূটনীতিকেরা সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে সরে যান। মার্শা বার্নিকাট মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রকের নিয়োগ করা স্থায়ী কূটনীতির। তিনি বাংলাদেশ ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা পালন করে দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রকে কর্মরত আছেন। ২০১৭-তে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মার্শাকে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাঁকে ঢাকা থেকে বদলি করার পিছনে হাসিনা সরকারের অসন্তোষ অন্যতম কারণ ছিল বলে মনে করা হয়। জো বাইডেনের নেতৃত্বে ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় ফিরলে বাংলাদেশ নিয়ে ফের সক্রিয় হন মার্শা। হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের পিছনে এই কূটনীতিকের ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার তিনদিন আগে মার্শা সহ তিন কূটনীতিককে সরে যেতে বলেছেন তাঁর সহযোগিরা, জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এপি। তবে এই ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসন এবং মার্শা-সহ কূটনীতিকরা কোনও মন্তব্য করেননি।