ফাইল চিত্র
শেষ আপডেট: 6 February 2025 09:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বৃহস্পতিবার সকালেও ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র স্পষ্ট। শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবন ভাঙার কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ভবনের বিশাল অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বাড়ির সামনের তিনতলা পর্যন্ত বড় অংশ ভেঙে পড়েছে।
সকাল থেকেই সেখানে মানুষের জটলা। রাতভর যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অনেককে সকালেও সেখানে দেখা গেছে। ফজরের নামাজের পর থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ওই এলাকায় জড়ো হন। উপস্থিত জনতার অনেকেই বলেছেন, ‘স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন রাখা হবে না।’ বাড়ির বড় অংশ ধসে পড়তেই উল্লাসে ফেটে পড়েন তাঁরা।
সকাল সাড়ে ছ’টার সময়ে বাড়ির কিছু জায়গায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। দেওয়ালের বিভিন্ন অংশে লাল কালি দিয়ে লেখা ছিল—‘স্বৈরাচার সাবধান।’ ঘটনাস্থলে ক্রেন ও এক্সকাভেটরের তাণ্ডব চলেছে সকাল জুড়ে।
এর পেছনে রয়েছে গতরাতের উত্তাল বিক্ষোভ। শেখ হাসিনার বক্তৃতা ঘিরে ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বুধবার রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জড়ো হন। তার পর তাঁরা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালান এবং আগুন ধরিয়ে দেন।
শুধু ৩২ নম্বর নয়, ধানমন্ডির ৫ এ-তে শেখ হাসিনার আরেকটি বাড়ি ‘সুধা সদন’-এও আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এই ঘটনার ছয় মাস পূর্তির দিনেই ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ফেসবুক পেজ থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক মাধ্যমে দিনভর উত্তেজনা চলতে থাকে, যেখানে ‘বুলডোজার মিছিল’ ও ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’-এর ডাক দেওয়া হয়।
বুধবার রাত আটটার দিকে বিক্ষোভকারীরা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির গেট ভেঙে প্রবেশ করেন এবং ম্যুরালসহ বাড়ির বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করেন। এরপর থেকে বাড়িটির একাংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে ঘোষণা করেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমিমুক্ত হবে।’ অন্যদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি সামাজিক মাধ্যমে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
ইতিহাসের নির্মাণ শুরু হয়ে গেল।
— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (@antiquotadu) February 5, 2025
৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।
ধানমন্ডি ৩২ ভাঙা শুরু করেছে ছাত্র জনতা..#Bangladesh pic.twitter.com/nwLk22hftT
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল সাড়ে আটটার দিকেও ভাঙার কাজ চলছে। ভবনের অধিকাংশ অংশই ভেঙে ফেলা হয়েছে। ইতিহাসের এক অধ্যায় আজ ধুলোয় মিশে যাচ্ছে, আর তা দেখছে শত শত মানুষ—কেউ বিস্ময়ে, কেউবা উল্লাসে।