Date : 14th Jun, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
মেয়ের আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন অধরাই, বিমান দুর্ঘটনায় অথৈ জলে গুজরাতের শ্রমজীবী পরিবারবিবাহিত মানেই বঞ্চিত? রাজ্য সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট, কোন মামলাSeat 11A: দু’টি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা, দুই বেঁচে ফেরায় অদ্ভুত মিল! নেপথ্যে সেই ‘মিরাকল সিট’বাজারে গিয়ে আক্রান্ত মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির স্বামী, তুমুল উত্তেজনা খাতড়ায়সুশান্তের মৃত্যুতে এখনও অধরা কারণ! পাঁচ বছর পর আদালতে জমা হল রিপোর্ট, জানালেন বোন শ্বেতামহেশতলায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ও পরিবারগুলিকে সব ধরনের সাহায্যের নির্দেশ সাংসদ অভিষেকেরWTC ফাইনাল: ভারতের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজনের আশা কি ভেস্তে যাবে?নতুন রূপে পর্দায় আসছে 'শক্তিমান', তবে রণবীর নন, দেখা যাবে এই দক্ষিণী সুপারস্টারকে!বিমান দুর্ঘটনার কথা আগেই জানান জ্যোতিষী? টুইট ঘিরে শুরু বিতর্ক, 'মানবিক' হতে বলল নেটপাড়াAhmedabad Plane Crash: জীবনযুদ্ধের মাঝপথেই ছাড়তে হল ময়দান, অসমাপ্ত ক্রু সদস্যদের কাহিনিও
Sheikh Hasina Return 17 May

তুমি ফিরে ছিলে বলে...

১৯৮১ সালের ১৭ মে নির্বাসন শেষে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নবযাত্রার সূচনা করে। এই দিনটি জীবনের এক গৌরবময় অধ্যায়।

তুমি ফিরে ছিলে বলে...

শেখ হাসিনা

অন্বেষা বিশ্বাস।

শেষ আপডেট: 17 May 2025 22:05

শাখাওয়াত হোসেন

একটি জাতির ভাগ্য গঠনে সময় যেমন মুখ্য, তেমনি নেতৃত্বের ভূমিকাও অপরিহার্য। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন একটি দিন হল ১৭ মে ১৯৮১, যেদিন দীর্ঘ নির্বাসন শেষে শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে পা রাখেন। এই দিনটি শুধু একটি ব্যক্তির স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন নয়; এটি একটি বিপর্যস্ত জাতির নতুন করে বাঁচার আশায় বুক বাঁধার দিন। প্রেক্ষাপট: রক্তাক্ত আগস্ট ও রাজনৈতিক অস্থিরতা।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এটি ছিল জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত অধ্যায়। সে সময় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। পরবর্তী ছয় বছর তাঁরা ছিলেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে—প্রথমে জার্মানি, পরে ভারতে।

দেশে তখন সামরিক শাসন জারি, বাক-স্বাধীনতা স্তব্ধ, গণতন্ত্রকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বন্দুকের নলের সামনে। আওয়ামী লিগ নেতৃত্বশূন্য ও বিপর্যস্ত। ঠিক এই প্রেক্ষাপটে ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লিগের জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।প্রত্যাবর্তনের দিন: ১৭ মে ১৯৮১

দিল্লি থেকে বাংলাদেশে তাঁকে বহনকারী বিমান যখন ঢাকায় অবতরণ করে, তখন তীব্র ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও লাখো মানুষের ভিড় বরণ করতে হাজির হয় বিমানবন্দরে। চোখে জল, হাতে ফুল, কণ্ঠে স্লোগান—'হাসিনা ফিরে এসো, বাংলা তোমায় চায়।'

তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিল আবেগময়, আমি শেখ মুজিবের কন্যা হিসেবে নয়, আপনাদের কর্মী হিসেবে দেশে ফিরেছি।'

সেদিন তাঁর চোখে ছিল শোক, বুকে ছিল প্রতিজ্ঞা, এবং কণ্ঠে ছিল দৃঢ়তা। মানুষের ভালবাসা তাঁকে আশ্বস্ত করেছিল, তাঁর পথচলা সঠিক এবং জরুরি।

একটি সাক্ষাৎকারের আলোকে

১৯৮১ সালের ১৮ মে, বিবিসি ও এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেআমি গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য ফিরে এসেছি। আমি জানি সামনে অনেক বাধা, কিন্তু আমি ভয় পাই না।' এই সাহসী উচ্চারণই তাঁকে সময়ের সাহসী নেতায় রূপান্তর করে।

জনতার প্রতিক্রিয়া ও গণআন্দোলনের ভিত্তি

তাঁর প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রাণ ফিরে আসে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সাধারণ মানুষ দলে দলে এসে দেখা করে, মত দেয়, ও অনুপ্রাণিত হয়। একসময় দেশের বুকে বয়ে চলে গণতন্ত্রের হাওয়া। একদল তরুণ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়।পরবর্তী সংগ্রাম ও সাফল্যের ধারা
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সেই সরকারের সময় খাদ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলাদেশে এক নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটে।

২০০8 সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত, শেখ হাসিনা নেতৃত্বে দেশ পেয়েছে পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ, উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা, ও ডিজিটাল বাংলাদেশ।

বিশ্ব মঞ্চেও তিনি হয়ে উঠেছেন প্রশংসিত নেতা। জাতিসংঘ তাঁকে 'চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ', 'ডিজিটাল উইমেন লিডার', এবং 'টেকসই উন্নয়নের দূত' হিসেবে সম্মানিত করেছে।

আধুনিক বাংলাদেশ: স্বপ্ন থেকে বাস্তবায়ন

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানব উন্নয়ন সূচক, বৈদেশিক রিজার্ভ, নারী শিক্ষার হার, স্বাস্থ্যসেবার মান, কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জাতি আজ তার স্বপ্নের পথে—‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’-এর দিকে এগিয়ে চলেছে।

১৭ মে আজ কেবল একটি দিবস নয়; এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গৌরবময় অধ্যায়। শেখ হাসিনার সেই প্রত্যাবর্তন ছিল গণতন্ত্রের প্রতি আস্থার প্রকাশ, নেতৃত্বের প্রতি জনগণের বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ।আজকের দিনে আমরা স্মরণ করি একজন নেত্রীর সাহস, দৃঢ়তা এবং ত্যাগের ইতিহাস। সেই সঙ্গে আমরা প্রতিজ্ঞা করি—গণতন্ত্র, উন্নয়ন, শান্তি ও মানবিকতাকে লালন করে একটি উন্নত, আত্মনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলব, শেখ হাসিনার দেখানো পথ অনুসরণ করে।

লেখক আওয়ামী লিগের সদস্য। মতামত ব্যক্তিগত


ভিডিও স্টোরি