শেষ আপডেট: 13th September 2024 12:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের মাদারীপুরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ভিটা দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন সে দেশের লেখক-শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। এই সভা হবে ঢাকার ‘প্রতিবাদ-ময়দান’ শাহবাগে। বিকাল তিনটেয় সভা শুরু হবে। ‘আমার প্রিয় বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন এই সমাবেশের আয়োজন করছে।
৫ অগাস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার সফল অভ্যত্থানের পর রাজশাহী শহরে অবস্থিত প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের পাকা বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপর মাদারীপুরে কবি ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ভিটা বেদখলের চেষ্টা হয়। মাদারীপর জেলার ডাসা উপজেলায় কালকিনি গ্রামের মেইজপাড়ায় অবস্থিত সুনীলের ভিটা। স্থানীয় মানুষ প্রশাসনকে জানায়, এলাকার বিএনপি নেতা সোহেল হাওলাদার ভিটার দখল নিয়ে চালের গুদাম বানিয়েছেন। সেখানে একটি ঘরে ছিলেন সুনীলের নামে লাইব্রেরি ছিল। সেটি ভাঙচুর করে বইবত্র এবং অন্যান্য স্মারক সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তারা বাড়িটি দখলমুক্ত করেছে। ঢাকার প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজকদের একজন বলেন, আমরা চাইব, সরকার বাড়িটি অধিগ্রহণ করে সংস্কারের ব্যবস্থা করুক। তাঁর অভিযোগ, রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়েছে প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে।
তবে কলকাতায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায় 'দ্য ওয়াল'-কে জানিয়েছেন, ওই বাড়িকে আক্ষরিক অর্থে ভিটেবাড়ি বলা যায় না। ওই বাড়ি সুনীলদের পৈতৃক জমির অংশে বানিয়ে দিয়েছিলেন রজ্জাক হাওলাদার। তাঁকে সুনীলের 'গ্রাম-সহোদর' বলে উল্লেখ করে স্বাতী জানান, তিনি বাড়িটি 'দখল' হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে শুনেছেন। তবে সে বাড়ি নিয়ে সুনীলের বা তাঁর পরিবারের কোনও অধিকারবোধ ছিল না বলেই তিনি জানান।
কারণ রজ্জাক ভালবাসা ও শ্রদ্ধার জায়গা থেকে বাড়িটি করে দিলেও, সুনীল তখনই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই বাড়ি তিনি নেবেন না, তা যেন অন্য কোনও কাজে লাগানো হয়। সেই মতো বাড়িটিতে পরবর্তীকালে পাঠশালা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, লাইব্রেরি ইত্যাদি চলত বলে জানিয়েছেন স্বাতী। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে সুনীল সপরিবারে একবারই বেড়াতে গিয়েছিলেন।
স্বাতীর কথায়, 'ওটা আমাদের পৈতৃক বাড়ি বলা যায় না। ওটা সুনীলের গ্রামতুতো ভাইয়ের আবদার করে বানিয়ে দেওয়া বাড়ি। জায়গাটুকুই আমাদের। ওই বাড়ির প্রতি সুনীলের বা ওঁর ভাইবোনদের কখনওই কোনও অধিকারবোধ হয়নি। ওখানে ভাল কাজ হচ্ছিল, সেটাই আমাদের ভাল লেগেছিল। ওই বাড়ি যদি এখনও কারও কাজে লাগে, তা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই আমার।'