শেষ আপডেট: 26th July 2024 22:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাংলাদেশ। কার্ফু শিথিল হতে ঘরবন্দি মানুষ পথে বেরিয়েছেন। তবে এখনও হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা চলছে শত শত যন্ত্রণাকাতর মানুষের। কয়েকদিন আগের কোটা আন্দোলের দগদগে ক্ষত এখনও এখনও দৃশ্যমান ঢাকার মেট্রো রেলের স্টেশন, বি-টিভির সদর দফতর, দুর্যোগ প্রতিরোধ ভবন-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক অফিসগুলিতেও।
আহতদের অধিকাংশই ভর্তি রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার বিকেলে আহতদের দেখতে সেখানে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কথা বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে জখম হওয়া রোগী ও তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে। চিকিৎসার বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ খোঁজ খবর নেন। আহতরাও প্রধানমন্ত্রীকে হাতের নাগালে পেয়ে গত কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া হিংসার বীভৎসতার বর্ণনা দেন। যা শুনে কান্না চাপতে পারেননি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
আন্দোলনকারীদের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঢাকার একাধিক মেট্রো স্টেশন সহ বহু সরকারি অফিস, পুলিশ ব্যারাক ইত্যাদি। শুক্রবার বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন হাসিনা। মেট্রো স্টেশনের ক্ষত দেখে আবেগতাড়িত প্রধানমন্ত্রী ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন। পরে শাড়ির আঁচল মুখে চেপে কান্নারোধের চেষ্টা করতে দেখা যায় তাঁকে।
বাংলাদেশ প্রশাসনের বক্তব্য, পদ্মা সেতুর মতোই ঢাকার মেট্রো রেল হাসিনা সরকারের সাফল্যের আর একটি দৃষ্টান্ত। এজন্য বিপুল টাকা বিদেশ থেকে ধার করতে হয়েছে সরকারকে। মেট্রো রেলের ক্ষতির ধাক্কা গিয়ে পড়বে ঋণ পরিশোধের উপর।
বি-টিভি বা বাংলাদেশ টেলিভিশন হল ওই দেশে টেলিভিশন শিল্পের সূতিকাগার। বাংলাদেশে টেলিভিশন সাংবাদিক, অভিনেতাদের অনেকেরই হাতেখড়ি বি-টিভিতে। প্রায় দশ দিন হতে চলল, সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ।
পরে এ বিষয়ে ঢাকায় এক সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার তো শুরু থেকেই মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের পক্ষপাতি। ২০১৮ সালে আমাদের সরকারের সময়েই সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল হয়েছিল। অথচ আমার বক্তব্যকে বিকৃত করে দেশে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি করা হল।’
হাসিনা বলেন, প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক, তারপরে মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ করা হয়। সরকারি নিয়ম মেনে কিছু সংরক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সেদিন এই মেধার কথাই বলেছিলাম। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ছেলেমেয়েরাও তো মেধাবী। মেধার ভিত্তিতেই তো তাঁদের নিয়োগ করা হত। বিকেল ৪টেয় সাংবাদিক বৈঠক করলাম। তারপর রাত ১১টা থেকে স্লোগান উঠল, রাজাকার, রাজাকার! আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিয়ে নিজেদেরকে রাজাকার হিসেবে পরিচয় দিল। আমি তো তাদের রাজাকার বলিনি। তাসত্ত্বেও আমার বক্তব্যকে বিকৃত করা হল।’
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখতে তিনি বদ্ধ পরিকর। কোনও ধরনের প্ররোচনায় পা না দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।