শেষ আপডেট: 5th January 2025 22:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চান মহম্মদ ইউনুস। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক প্রয়োজন। এখন সম্পর্কে মেঘ জমে আছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় আমরা বলেছি, এই মেঘ দূর করা দরকার। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ভারতের দিক থেকে তিনি কোনও ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন না।
বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনুস ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন এবং তিনদিনের মাথায় ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় বসার পর থেকে একদিকে যেমন রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জেরবার হয়েছে বাংলাদেশ, অন্যদিকে, পাল্লা দিয়ে অবনতি হয়েছে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের। সরকারি স্তরে সম্পর্কের অবনতিতে দু’দেশের নাগরিকেরা জড়িয়ে যায় বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
সংঘাতের আবহ এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে দুই দেশেই জাতীয় পতাকা, জাতীয় প্রতীক অবমাননার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। উত্তাপ চড়ে কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশের যথাক্রমে উপ ও সহকারী দূতাবাস চত্ত্বরে অশান্তির ঘটনাকে কেন্দ্র করে। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনারের অফিসে হামলার ঘটনা এবং চট্টগ্রামে ধৃত হিন্দু সাধু চিন্ময়কৃষ্ণের অনুগামীদের হাতে তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের অভিযোগকে হাতিয়ার করে ইউনুস জাতীয় ঐক্য রক্ষার ডাক দিয়ে সব দলকে নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক করেন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গেও।
পাশাপাশি সীমান্তের দুই প্রান্ত থেকেই যুদ্ধের হুঙ্কার দেয় নাদরিকদের একাংশ। বাংলাদেশের কতিপয় অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্তা এবং রাজনৈতিক নেতা কলকাতা, অসম, ত্রিপুরা দখলের হুমকি দেন। পাল্টা এপার থেকেও বাংলাদেশকে গুড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতাদের একাংশ। তাতে জল ঢেলে রবিবার দেশের একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনুস বলেছেন তিনি ভারতের দিক থেকে কোনও ধরনের শক্রতা, বৈরিতার আশঙ্কা করছেন না।
অনেকেই মনে করছেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার দিন যত এগিয়ে আসছে ততই ভারত সম্পর্কে সুর নরম করছেন ইউনুস। তিনদিন আগে তাঁর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ঢাকায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। এমনকী শেখ হাসিনাকে ভারত না ফেরালেও তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় কোনও ছায়া ফেলবে না বলেও জানিয়ে দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তাঁর কথায়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বহু অমীমাংসিত ইস্যু আছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে প্রত্যাবর্তণ তারমধ্যে একটি। নতুন বছরে ভারত, চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করা অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার বলেও জানিয়েছেন ইউনুসের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ইউনুস বলেছেন সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার মিথ্যাচার অব্যাহত। তবে আগের তুলনায় তা কমেছে। সাক্ষাৎকারে ইউনুস দাবি করেছেন, গত মাসে ঢাকা সফরে যাওয়া ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্ত্রি তাঁকে বলেছেন, হিন্দুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া আর ভারত সরকারের বক্তব্য এক নয়।