শেষ আপডেট: 5th September 2024 10:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গণ অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ অগাস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিনই দেশের একটি জেল ভেঙে কয়েকশো দাগি আসামি পালিয়েছে। তারপর আরও দুটি জেল ভাঙার ঘটনা ঘটেছে। পলাতক আসামিদের অধিকাংশকেই এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।
এরই মধ্যে সে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃত্বের চিন্তা বাড়িয়েছে একের পর এক প্রথমসারির খুনি-সন্ত্রাসির জামিনে মুক্তি। যাদের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, টাকার বিনিময়ে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের খুনের অভিযোগ রয়েছে। কী করে নিম্ন আদালত এই জঘন্য অপরাধীদের জামিন দিচ্ছে তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশটিতে। বহু মানুষ আতঙ্কিত। তারা আশঙ্কা করছেন, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই কোনও ক্ষমতাবান মহলের নির্দেশে নিম্ন আদালকের বিচারকেরা খুনি-সন্ত্রাসীদের জামিন মঞ্জুর করছেন। চাপ দিয়ে জামিনের নির্দেশ জারি করানো হচ্ছে।
দু’দিন আগে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ঢাকার পূর্ব রাজা বাজার এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী শেখ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম। পুলিশের তাড়া খেয়ে বেশ কিছুদিন সুইডেনে ছিল সে। দেশে ফেরার পর সুইডেন আসলাম নামের লোকে জানে তাকে। খুন-রাহাজানির একাধিক মামলায় নাম রয়েছে এই আসামির।
ওই জেল থেকেই একদিন আগে জামিনে মুক্তি পায় লুৎফর রহমান। এই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধেও একাধিক খুন-রাহাজানির মামলা আছে। ভয়ঙ্কর আসামি এবং যে কোনও সময় জেল ভেঙে পালাতে পারে ধরে নিয়েই তাদের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি জেলে রাখা হয়েছিল। এটি তথ্য প্রযুক্তি চালিত একটি অত্যাধুনিক জেল। দেখা গিয়েছে, গত এক মাসে এই জেলে আটক পাঁচ কুখ্যাত দুষ্কৃতী জামিনে মুক্তি পেয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে, লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে শুধু খুনের মামলাই রয়েছে নয়টি। এর আগে এই জেল থেকেই জামিনে মুক্তি পায় ভারত বিরোধী একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা।
আবার উল্টো ঘটনাও ঘটেছে। বুধবার একদা যশোরের ত্রাস আনিসুর রহমান লিটন ওরফে ফিঙে লিটন গোপনে আদালতে আত্মসমর্পণ করে। বছর কুড়ি গা ঢাকা দিয়ে থাকা ফিঙে লিটনের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র পাচার, তোলাবাজির মোট কুড়িটি মামলা আছে। একটিতে তার দশ বছর জেল হয়। সে আত্মগোপন করে ছিল। হাসিনা সরকারের পতনের পর তার আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। আদালত তার জামিনের আবেদন খারিজ করে জেলে পাঠিয়েছে। তবে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, লিটনও কিছুদিন পর জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসবে। বিশেষ কোনও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই জঙ্গি, সন্ত্রাসীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। অনেকের আশঙ্কা, মুক্ত সন্ত্রাসীদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার কাজে ব্যবহার করা হতে পারে।
ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকেও মুক্তি পেয়েছে একাধির দুষ্কৃতী যাদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এই তালিকায় আছে সানজিদুল ইসলাম ইমন ওরফে কলাবাগান ইমন, আব্বাস, টিটন, পিচ্চি হেলাল, ফ্রিডম রাজু।
গত ১৪ আগস্ট আদালত ইমনকে মুক্তি দেয়। জামিন পায় তার প্রধান সহযোগীও। ১২ আগস্ট ছাড়া পায় ফ্রিডম রাজু ও পিচ্চি হেলাল। রাজুর বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তা হত্যাসহ ১৩টি মামলা আছে। পিচ্চি হেলালের বিরুদ্ধে হয়েছে চারটি হত্যা মামলা।