শেষ আপডেট: 2nd October 2024 21:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের দুর্গাপুজোয় এ বছর কুমারী পুজো হচ্ছে না। সে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে মিশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে ঢাকার বাইরে রামকষ্ণ মঠ ও মিশনের পুজোয় কুমারী পুজো হবে।
রাজধানী ঢাকায় ঢাকেশ্বরী মন্দির এবং রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের দুর্গাপুজোই সবচেয়ে জনপ্রিয়। দেশের নানা প্রান্ত থেকে হিন্দুরা এই দুটি পুজোয় সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ভিড় করেন। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের কুমারী পুজোয় ভিড় উপচে পড়ে। ভিন্ন ধর্মের মানুষও এই দুই পুজোয় হিন্দুদের সঙ্গে উৎসবের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান। আশা করা হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসও এই দুই পুজোয় যাবেন।
তবে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের পুজোয় কুমারী পুজো না হওয়ার সিদ্ধান্ত জানাজানি হতে অনেকেরই মন খারাপ। কুমারী পুজোর সঙ্গে স্বয়ং বিবেকানন্দের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। শাস্ত্রমতে কুমারী পূজার উদ্ভব হয় বানাসুর বধ করার মধ্য দিয়ে। বানাসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। দেবতাদের আবেদনে সাড়া দিযে় দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে বানাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। রামকৃষ্ণ মিশনে বিবেকানন্দ মা সারদার উপস্থিতিতে নয় বালিকাকে পুজো করেন। সেই থেকে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে দুর্গাপুজোর কুমারী পুজো হয়ে আসছে।
ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের স্বামী শান্তিকরানন্দ মহারাজ (কিশোর মহারাজ) ঢাকার সংবাদপত্র 'কালবেলা'-কে জানিয়েছেন, এর আগে করোনা মহামারির সময় সরকারের পরামর্শে মহাঅষ্টমীতে কুমারী পূজা বাদ দেওয়া হয়েছিল। কারণ, ওইদিন ভিড় বেশি হয়। সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি পরামর্শ মেনে কুমারী পুজো বাদ দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতি বছর কুমারী পুজো হয়েছে। এবার দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কুমারী পুজো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের ওয়েবসাইটে যে পুজো নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে কুমারী পুজোর উল্লেখ রয়েছে।
৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত বদলে গিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিত হয়নি এখনও। তার উপর পুজো নিয়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের লাগাতার হুমকি চলছে। হুমকির কারণে বহু পুজো এবার হচ্ছে না। বিগত কয়েক বছর ধরে পুজোর সংখ্যা বাড়ছিল বাংলাদেশে। এবারই উল্টো স্রোত। ঢাকায় উত্তরার মতো অভিজাত এলাকায় পর্যন্ত স্থানীয় মুসলিমদের চাপের মুখে পুজোর স্থান বদল করতে হয়েছে।